শৈশবের স্মৃতিতে:"সরিষা তেল"
নমস্কার
শৈশবের স্মৃতিতে:"সরিষা তেল"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।আবার কিছু মিষ্টি স্মৃতি ফিরে পেতে চাই বারেবারে।আবার কিছু স্মৃতি সাময়িক সময়ের জন্য আনন্দ দেয়,আবার কিছু স্মৃতি ভয়ভীতু করে তোলে।তেমনি একটি মিষ্টি শৈশবের স্মৃতি আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট্ট অনুভূতিখানি।তো চলুন শুরু করা যাক----
যখন আমি ছোট ছিলাম সেই সময় গ্রামের দিকে মানুষ দোকান থেকে অল্প অল্প তেল কিনে খেত।আর সেই সময় বাড়ি থেকে বোতল ও টাকা নিয়ে যেতে হতো।তখন দোকানদাররা ছোট-বড় বিভিন্ন টিনের মগ মেপে সরিষার তেল ঢেলে দিতেন আমাদের বোতলে।কতই না সুন্দর ছিল দিনগুলো---।আগে তেলগুলি জেরে থাকতো তারপর জেরের মুখ কেটে বের করে দোকানদাররা খোলা বিক্রি করতেন।কিন্তু এখন অধিকাংশ তেল প্যাকেট কিংবা বোতলজাত হয়ে বিক্রি হয়ে থাকে।জেরের নিয়ম যেন কিছুটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।যাইহোক ছোটবেলায় একটি ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল এই সরিষার তেলকে কেন্দ্র করে।
আমার মেজো জেঠিমার ভাইয়ের মেয়ে এক্সাম দেওয়ার জন্য এসেছিলো আমাদের বাড়ি।কারন তার এক্সাম সেন্টার পড়েছিলো আমাদের বাড়ির কাছেই।তাদের বাড়ি থেকে দূর হয়ে যাবে বলে সে কিছুদিন আমাদের বাড়ি থেকে এক্সাম দেবে।সম্পর্কে সে আমাদের মামার মেয়ে, নাম তার পম্পা।
তো মেজো জেঠিমা একবার পম্পা দিদিকে বললো---- যা তো সরিষার তেল নিয়ে আয় দোকান থেকে।তখন গ্রামের মানুষ 100 গ্রাম,,250 গ্রাম,,500 গ্রাম এমনভাবে বারেবারে তেল কিনে থাকে।সেইসময় আমাদের গ্রামে একটিই মাত্র মুদিদোকান ছিল মেইন রোডের উপরে।তো আমি কোনো একটা খাবার কেনার জন্য যখন দোকানে গেলাম।তখন পম্পা দিদি সরিষার তেল নিতে দোকানে যায়,দোকানদারের মেজো ছেলে তখন দোকানদারি করছিলো।সেই ছেলেটির সঙ্গে আবার পম্পা দিদির একটু ভাব জমেছিলো।তো পম্পা দিদি 100 টাকার নোট না 50 টাকার নোট যেন দিলো দোকানদারকে।সে মাপ মতো বোতলে সরিষার তেল দিলো,তবে যাই হোক না কেন দোকানদার তাকে 20 টাকা ফেরত দেবে।
তখন হলো আসল মজা,,দোকানদার ছেলেটি পম্পা দিদিকে বললো-----দেখবে আমি কাঁচা সরিষার তেল খেতে পারি।তখন পম্পা দিদি বললো----তুমি তাহলে কাঁচা সরিষার তেল খেয়ে দেখাতে পারলে আমি 20 টাকা দিয়ে দেব।তখন ঐ দোকানদার ছেলেটি তেলের বোতল থেকে তিন চার ঢোক তেল মুখের মধ্যে নিয়ে নেয়।তেলের বোতল বেশ খালি হয়ে যায়।কিন্তু একটুখানি রেখেই সে ফেলে দেয় মুখ থেকে মাটিতে সরিষার তেল।
আসলে তখনকার সরিষার তেলগুলো ছিল খাঁটি এবং এতটাই ঝাঁঝযুক্ত যে বেশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব নয়।তারপর ছেলেটি পম্পা দিদিকে বললো ----দাও আমি বোতলটি ভরে দিচ্ছি।তখন পম্পা দিদি দেওয়া লাগবে না বলে,,20 টাকা দিয়ে হাসতে হাসতে চলে যায়।সেই সময় যেহেতু আমি সেখানে উপস্থিত থেকে এই ঘটনা দেখছিলাম ।তখন পম্পা দিদি ও দোকানদার ছেলেটি আমাকে বললো---- যেন আমি তেলের এই ঘটনার কথা মেজো জেঠিমাকে বলে না দিই।দোকানদার ছেলেটির মুখের ভিতরের অবস্থা হয়তো সেসময় যাতা হয়েছিল।তবে সত্যি বলতে আমিও বেশ অবাক হয়েছিলাম হঠাৎ এমন তেল খাওয়ার ঘটনা দেখে।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
টাস্ক প্রুফ:
কমেন্টস লিংক--
https://x.com/green0156/status/1924020982030774373
https://x.com/green0156/status/1924109562379907166
https://x.com/green0156/status/1924110580740497488
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার লেখাটি পড়ে আমারও শৈশবের সরিষার তেলের দোকানের কথা মনে পড়ে গেল! তখনকার দিনে তেল জেরে রাখার যে প্রথা ছিল, সেটা আজকের প্রজন্মের কাছে সত্যিই অবাক করার মতো। আপনার স্মৃতিচারণার ভঙ্গি খুবই প্রাণবন্ত!
ঠিকই বলেছেন, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মতামতের জন্য।