মিজানুর রহমান আজহারী হুজুরের ওয়াজ শোনার অভিজ্ঞতা।
আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদেরকে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকের ব্লগ এ আমি আপনাদের সাথে মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবের ওয়াজ শুনতে গিয়ে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন তাহলে এবার শুরু করা যাক।
বর্তমানে আমাদের দেশে ইসলামিক স্কলার হিসেবে মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে উনার ওয়াজ মাহফিল গুলোতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হচ্ছে। ১৮ তারিখে উনার ওয়াজ মাহফিল লালমনিরহাটে হয়েছে। বর্তমানে আমি লালমনিরহাটে মেসে থাকায় উনার ওয়াজ শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল। তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। উনার একটি কথা সব থেকে বেশি ভালো লেগেছিল আমার, সেটি হচ্ছে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। আমরা যে ধর্মের লোক হই না কেন মানবিক দিক থেকে আমরা একে অপরের ভাই। মারামারি অথবা দাঙ্গা-হাঙ্গামা করা আমাদের কাম্য নয়। তিনি সকল ধর্মের মানুষদের মিলেমিশে বসবাস করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন যে , কোন বিধর্মের লোকদের দেব-দেবী কে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করা যাবে না। তিনি এও বলেন তোমরা যদি তাদের দেব দেবীকে গালিগালাজ কর তাহলে তারা আমাদের সৃষ্টিকর্তা কে নিয়ে গালিগালাজ করবে। আমাদের ধর্ম তা শিক্ষা দেয় না। তিনি মদিনার সনদ নিয়েও কিছু আলোচনা করেছিলেন যে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম মদিনায় অন্য ধর্মের ব্যক্তিদেরকে নিয়ে রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন এবং একটি সনদ স্বাক্ষরিত করেছিলেন। বহির শত্রু দ্বারা মদিনা আক্রমণ হলে সকল জাতি বর্ণের তা প্রতিহত করার অঙ্গীকার ছিল।
আমি ১৭ তারিখে আমার এক ছোট ভাইকে নিয়ে লালমনিরহাট সোহরাওয়ার্দী মাঠে মুল স্টেজটি দেখার জন্য ঘুরতে গিয়েছিলাম। এখানে গিয়ে আমি কয়েকটি ফটোগ্রাফি করেছিলাম। ১৭ তারিখ রাতে মূল মাঠের অর্ধেক পূরণ হয়ে গেছিলো গিয়েছিল লোকজন দিয়া। ১৮ তারিখে এত পরিমানে লোক হয়েছিল যে মূল মাঠে সবার জায়গা হয়নি। মূল মাঠ ছাড়াও আরো তিনটি মাঠ ছিল পুরুষদের জন্য এবং মহিলাদের জন্য স্টুডিয়াম মাঠ ছিল। ওয়াজ মাহফিলে প্রায় ১০০০ মাইক লাগানো হয়েছিল তবুও যেন কথা গুলো ভালোভাবে শোনা যাচ্ছিল না। আমার মতে আনুমানিক ৮ থেকে ১০ লাখ লোক হয়েছিল এই মাহফিলে।
আসলে ওয়াজ মাহফিলে বক্তারা ভালো কথাবার্তায় বলেন যাতে করে মানুষ ভালোভাবে চলাফেরা এবং তাদের আচার-আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। আসলে আমাদের হাজারো ওয়াজ শুনা হলে ও আমাদের মনুষত্ব ভালো হচ্ছে না। আমাদের সমাজের বেশিরভাগ লোকই মনুষ্যত্বহীন। ওয়াজ শোনার পর সবাই বলে আজকে থেকে ভালো হয়ে যাব কিন্তু কয়েকদিন পর দেখা যায় সেই আগের মত স্বভাব চলে এসেছে। বর্তমান সমাজের বেশিরভাগ লোকই অহংকারী অন্যের উন্নতি তাদের সহ্য হয় না। সব সময় অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টায় থাকেন। দিন দিন ভালো লোকের পরিমাণ কমে যাচ্ছে সমাজ থেকে।
কোন ধর্মই বলে না যে অন্য ধর্মের প্রতি অবিচার করো তোমরা। আমি যে মেসে থাকি সেই মেসে একজন হিন্দু বর্ডার থাকেন, উনাকে আমরা দাদা বলেই ডাকি। উনি এবং আমরা এমনভাবে মিশে গেছি উনাকে দেখলে মনেই হয় না যে উনি অন্য ধর্মের একজন। সবাই মিলে আমরা একসঙ্গে মুড়ি পার্টির আড্ডায় কতই না হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠি। আসলে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে গভীরভাবে। এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য কিছু কিছু রাজনৈতিক দল মাঝে মাঝে অনেক ষড়যন্ত্র করে থাকে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য। তারা চায় মুসলিম হিন্দু দাঙ্গা লাগিয়ে দিতে।
সংঘাত নয় সম্প্রীতিতেই আমরা বিশ্বাসী। যে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন আমাদের এই সম্প্রীতি কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা সবাই এদেশেই জন্মেছি তাই আমাদের সবার সমান অধিকার রয়েছে সবকিছুতেই। অন্যায় ভাবে কেউ কারো প্রতি জুলুম করলে সবারই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত, হোক সে হিন্দু হোক সে মুসলিম। এখানে মানুষকে মানুষ হিসেবেই বিবেচিত করতে হবে। তাহলেই আমাদের দেশ সামনে আরো এগিয়ে যাবে।
সর্বশেষ কিছু কথা বলতে চাই। বর্তমানে আপনারা যারা বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে যাচ্ছেন তারা সবাই একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন। কারণ ভালো লোকের পাশাপাশি সেখানে অনেক খারাপ লোকও যায় তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য যেমন তারা আপনার মূল্যবান ফোনটি এবং মানিব্যাগ এক নিমিষেই চুরি করে নিয়ে চলে যাবে। আপনি বুঝতেই পারবেন না কিভাবে কি হয়ে গেল। লালমনিরহাটের ওয়াজে অনেক ফোন এবং মহিলাদের অলংকার চুরি এবং হারিয়ে গিয়েছে। তাই সবার উচিত নিজের জিনিস ভালোভাবে রাখা। আর বিশেষ করে ট্রেন ভ্রমণের সময় ট্রেনের ছাদে উঠে ভ্রমণ না করা। সেই দিন ওয়াজ শেষে ট্রেনে করে বাসায় যাওয়ার পথে একটি কিশোর ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাই সবার উচিত এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার। সতর্কতার সহিত ভ্রমণ করা আমাদের সবার উচিত।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য। আমি যদি ভুল কিছু বলে থাকি তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভুলটি ধরিয়ে দিবেন। আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে অন্য এক ব্লগে। সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
Device | Tecno spark 20c |
---|---|
Camera | 50 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
ডেইলি টাক্স গুলো:
https://x.com/Golamrabba34801/status/1881317715488686171?t=7CDJgORwLJDPvMXWCMy1Gw&s=19
বর্তমান বাংলাদেশের ইসলামীক স্কলার হিসেবে শ্রেষ্ঠ বক্তা ডক্টর মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি বরাবরই মানুষকে সম্প্রীতির প্রতি আহ্বান করেন। আসলেই ওনার মাহফিল গুলোতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। আর এই লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে কিছু কুচক্রী মানুষ থাকে যারা স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে এই মাহফিলগুলোতে যায়। তাই আমাদের প্রত্যেকের সতর্ক থাকা উচিত। যাইহোক আজহারী হুজুরের মাহফিলে যাওয়ার সম্বন্ধে সুন্দর কিছু কথা লিখে শেয়ার করেছেন ,বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 😍💖
আমারও ইচ্ছে রয়েছে এই হুজুরের ওয়াজ মাহফিলে অংশগ্রহণ করার। কিন্তু এখনো সেই সৌভাগ্য হয়নি আমার। আপনি এই হুজুরের ওয়াজ মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ওয়াজ শুনেছেন জেনে খুশি হলাম।
আজহারী সাহেবের ওয়াজ গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আমি এর আগে ওনার ওয়াজগুলো সব শুনতাম। আমাদের এলাকায় ওনার আসার কথা রয়েছে শুনেছি। জানিনা উনি আসবেন কিনা। তবে আমার কথা হচ্ছে ভালো ভালো কথাগুলো শুনে ভালো কাজে অংশ নেওয়াটা মানুষত্বের পরিচয়।