সময়ের তালবাহানা (time dilation) @gentleman74

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)


1905, সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে বসন্তের কোন এক সন্ধ্যায় এক প্যাটেন্ট ক্লার্ক তাড়াতাড়ি অফিসের কাজ শেষে ট্রামে চড়ে বাসায় ফিরছিলেন। বলে রাখা ভাল - এই প্যাটেন্ট ক্লার্কই আলবার্ট আইনস্টাইন।তিনি প্রতিদিনই চেষ্টা করতেন তাড়াতাড়ি অফিস শেষ করে, মহাজগতের রহস্য নিয়ে ভাবতে। ট্রামে বসে বসে জাইটগ্লগ ক্লক টাওয়ারে তাকিয়ে ভাবলেন যদি ট্রামটি আলোর বেগে চলত তবে তিনি ঘড়ির কাটাকে থেমে যেতে দেখতেন যখন প্রকৃতপক্ষে ঘড়ির কাটা ঘুরছে। তার জন্য সময় থেমে গেছে। এই চিন্তা তার মস্তিষ্কে বিস্ফোরণ ঘটাল। তিনি বললেন- " যত দ্রুত স্পেসে চলা হবে তত ধিরে চলবে সময়"।

আলোর কাছাকাছি বেগে আপনি ১বছর স্পেসে ঘুরে এসে দেখবেন পৃথিবীতে সময় কেটেছে একবছরের বেশি।

মেনে নিতে কষ্ট হবে হয়ত। আসুন তবে আমরা সহজভাবে একটু কঠিন পদার্থবিজ্ঞান দেখি।

স্যার আইজ্যাক নিউটনের মতে, সব গতিই আপেক্ষিক অর্থাৎ পর্যবেক্ষক নির্ভর। একটু বুঝিয়ে বলি।
একটি ট্রেন ১৫m/s বেগে ছুটছে যার মাঝে আপনি আর আপনার বন্ধু পাশাপাশি বসে আছেন- আপনার বন্ধুর বেগ আপনি কত মাপবেন? আপনি দেখতে পাচ্ছেন বন্ধু চুপচাপ বসে আছে,বেগ= ০ m/s। আবার রাস্তার পাশে একজন মানুষ কিন্তু এইটাই মাপবে ১৫ m/s। বিপরীত দিক থেকে একই বেগে আসা ট্রেনের একজন আবার মাপবে ৩০ m/s।এই আপেক্ষিকতা পৃথিবী,চাঁদ, সূর্যের জন্যও একই।
এটা মানতে বুঝতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সমস্যার শুরু ১৮৬০ সালে ম্যাক্সওয়েলের আলোর ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ব্যাখ্যার পরে। তিনি বলেন -আলোর বেগ সবসময়ই ২,৯৯,৭৯২,৪৫৮ m/s-সে যেই পর্যবেক্ষণ করুক না কেন।

যেহেতু নিউটন এবং ম্যাক্সওয়েল দুজনেই সত্য প্রমানিত সেহেতু আইনস্টাইন তার আদর্শ বিজ্ঞানি নিউটনের তত্ত্বে আলোর বেগকে ধ্রুবক ধরে নিয়ে আসেন তার যুগান্তকারী আপেক্ষিক তত্ত্ব। তার আপেক্ষিক তত্ত্বের ৩টি ফলাফলের একটি হল - কাল দীর্ঘায়ন। সময় ধ্রুবক নয়। আলোর বেগই ধ্রুবক। আপনি যদি আলোর কাছাকাছি বেগে 12 বছর ঘুরে আসেন হয়ত দেখবেন আপনি আপনার মেয়ের থেকে বয়সে ছোট।

ধরুন আপনি 12 বছর ০.৯x আলোর বেগে ঘুরে এসেছেন। যাত্রা শুরু সময় আপনার বয়স ৩৫।আপনার মেয়ের বয়স ১৫। তাহলে, যাত্রা শেষে বয়সটা কেমন হবে?

T=To/√(1-V2/C2)
C= আলোর বেগ, V=আপনার বেগ (০.৯C)।
To= আপনার মাপা সময় (১২ বছর)
T=পৃথিবীতে বা আপনার মেয়ের অতিবাহিত সময়

IMG_20210704_162534.jpg

( একটু ক্যালকুলেটর চাপুন)

যাত্রা শেষে আপনার বয়স (৩৫+১২)=৪৭ বছর। আর আপনার মেয়ের বয়স হবে =১৫+২৭.৫ = ৪২.৫ বছর।

ধন্যবাদ আপনাকে। কষ্ট করে পড়েছেন।
একজন চিন্তাশীল মস্তিষ্ক হয়ত reasonsl doubt এ ভুগবেন। কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

আধুনিক বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে যদি আপনার ভালো লাগে। follow করে পাশে থাকুন।

বিজ্ঞান বিষয়ক আমার আরেকটি উপস্থাপনা- কৃষ্ণগহ্বর কি কেন কিভাবে?

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iP4wQ4HgmbuDqS8hm8cCEhg8fj34rxK6vxJbUYhCyvFyjLZBnUwZMJQm8Q2TRHQbWto3ALHd5Ee.png

IMG_20210704_164333.jpg

চৌধুরী আরাফাত হোসেন

  • একজন ফুটবলার,মার্শাল আর্টিস্ট,লেখক এবং ইন্জিনিয়ার

IMG_20210705_105704.jpg

Facebook

Linkedin

scan to follow on instagram ➡

2d46Q264YMJpcjK9xgCvt6W2uZDFqjWTDsM1KBwKjTHcayiGjPrwADYcZ7SZA8hmKHN8QawvFHkXHyuSsQSHWUUrs8saDsAGM9dT63ru8CC9vN2NiZjLqFknKhG61k...EG1Mt4GyxbZA4BzdAdk2JKSoFsFhBb7n6szPGQBgpG1iXWE8SWHhqkQPvRvxX65pBNqt45UgF5ZKQzBBTKWsvEGT6b1xLQ6cDLLrd1iYr17HbSbipdPHkqX4G5.gif

C.C-
@amarbanglablog
@rme
@rex-sumon
@shuvo35
@royalmacro
@curators
@blacks
@booming02
@bidvote
@boomerang

Sort:  
 3 years ago (edited)

"আলোর কাছাকাছি বেগে আপনি ১বছর স্পেসে ঘুরে এসে দেখবেন পৃথিবীতে সময় কেটেছে একবছরের বেশি।"
এই লাইনটিতে হালকা একটু পরিবর্তন আনুন , কারণ আলোর গতির ৯৯% স্পীডে গতিশীল হলে স্পেসশিপের ১ সেকেন্ড = পৃথিবীর ১ সেকেন্ড X ৭.৫ বা ৭.৫ সেকেন্ড । তাহলে হবে ৭.৫ বছর ।

আলোর গতির ৯৯.৯৯৯৯৯৯% অর্জন করতে পারলে অবশ্য ডিফারেন্স তা অনেকটাই বেশি হবে ।তখন -

স্পেসশিপের ১ সেকেন্ড = পৃথিবীর ১ সেকেন্ড X ৭০৭১ বা ৭০৭১ সেকেন্ড অর্থাৎ ১.৯৬৪ ঘন্টা । তাহলে হবে ৭০৭১ বছর ।

আর কোনো বস্তু কখনই আলোর সমান বা তার চাইতে বেশি বেগ অর্জন করতে পারবে না, কারণ তাহলে সেটি আর বস্তু না হয়ে শক্তিতে পরিণত হবে । যদিও বিজ্ঞানীরা ট্যাকিওন নামে একটি কণা আবিষ্কার করেছিল যার গতিবেগ আলোর সমান ছিল, কিন্তু খুবই স্বল্পায়ু সেও কণা ।

ওহ! একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম । আপনাকে Verified member plus Level ০১ এ উন্নীত করা হলো ।

 3 years ago (edited)

ধন্যবাদ দাদা। পড়েছেন, ভালো লেগেছে। পরিবর্তন চেয়েছেন। গঠনমূলক সমালোচনার অভাবের মধ্যে আপনার এই সাবলীল মতামত পেয়ে ভাল লাগল।

 3 years ago 

আমি ভাই কমার্সের ছাত্র হিসাব বিজ্ঞান বাদে বাকিসব একটু কম বুঝি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাকে ট্যাগ না দেয়ার জন্য, কারন এই বিষয়টি আমি একদম অপছন্দ করি।

 3 years ago (edited)

জ্বি ভাই। আপনি মিটিংয়ে বলেছিলেন।মনে রেখেছি। হিসাববিজ্ঞানের হলেও কি ভাই। চেষ্টা করেছি সবার বোঝার মত লিখতে। হয়েছে কি!

 3 years ago 

অনেক দারুণভাবে লিখেছেন

ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 3 years ago 

বেশ ভালো তথ্য দিয়েছেন ও লিখেছেন আইনস্টাইন সম্পর্কে ।যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপনাকে ভাই। ব্যাপারটা অনেক জটিল এবং নিউরনে অনুরনন করার মত। সহজ করে কিছু লেখার চেষ্টা করেছি। ভালো লেগেছে?

ভাল লাগলো। ছোট লেখায় সুন্দর বুঝিয়েছেন। দৈর্ঘ্য আর ভর সংকোচন নিয়েও এভাবে লিখবেন। ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই। আপেক্ষিকতা নিয়ে ভাল ধারনা রাখেন বোঝা যাচ্ছে। আপনার মত পাঠক পেয়ে ভাল লাগল। নিশ্চয়ই আপনার আগ্রহের পিপাসা মেটানোর চেষ্টা করব।

 3 years ago 

এখানে বোঝার আসলে অনেক কিছু রয়েছে। আরেকটু বিস্তারিত বর্ণনা হলে বেশি ভালো হতো। তারপরও ধন্যবাদ ভালো লেগেছে 💗
আর একটা বিষয় একেকটা পোস্ট একেক রকম করে সাজাবেন সুন্দর লাগবে

একদম সাধারনের কথা চিন্তা করে লিখেছি ভাই। আগ্রহ টুকু তৈরী করে দেওয়া পর্যন্ত আরকি। বিস্তারিত লিখলে সাধারনে আগ্রহ হারাত না! কি বলেন?

 3 years ago 

ঠিক আছে চালিয়ে যান 👍
Try different writing stayle ♨️
Good wishes for you 🥀

১.ভাই বাংলা লেখেন।
ওয়ার্নিং দিতে পারে। মডারেটর দেখলে।
২. লেখার ধরন ভালো লাগেনি! চেষ্টা করব পজিটিভ পরিবর্তন আনতে।

 3 years ago 

অসাধারণ ভাই। এরকম বিজ্ঞান বিষয়ক পোস্ট আরও করবেন।

ধন্যবাদ ভাইয়া। অবশ্যই করব। বিষয় অনুরোধ করতে পারো। টেসলা!

 3 years ago 

ও ঠিক আছে।

আপনার এই পোস্টে শিক্ষানীয় অনেকগুলো বিষয় রয়েছে. আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন কন্টাক্ট তৈরি করার জন্য.

ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনাদের উৎসাহই পোস্ট তৈরীর অনুপ্রেরণা দেয়।

 3 years ago (edited)

লেখাটি সুন্দর হয়েছে।সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় একটি জটিল তত্ত্ব কে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Screenshot_20210705-231135.jpg

ধন্যবাদ দাদা। যদি ভাল লেগে থাকে তবে আরেকটা পোস্ট দেখতে অনুরোধ করি

Time Dilation এর জটিল বিষয়টি সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিজ্ঞানের অন্যান্য জটিল বিষয়গুলো সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করে আরো লেখা আশা করছি।

আমি চেষ্টা করে যাব ভাই। সময়ের সঠিক মূল্যায়নই চালিকা শক্তি। একজন নিয়মিত পাঠক পেয়ে ধন্য। 💓