ছোট্ট একটা অভাগা মেয়ের গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ11 hours ago

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। ছোট্ট একটা অভাগা মেয়ের গল্প আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

1000043100.jpg

আজকে আরো একটি নতুন গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। গল্প পড়তে এবং গল্প লিখতে দুটোই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে আপনাদের মাঝে গল্প শেয়ার করার চেষ্টা করি। ঠিক সেরকমই আজ তার একটি গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। আজকের গল্পটির নাম হচ্ছে একটা অভাগা মেয়ের গল্প। গল্পটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে সে জন্য ভাবলাম আপনাদের মাঝেও শেয়ার করি। তবে আমার কাছে এ ধরনের গল্প থেকে ভূতের গল্প গুলো পড়তে বেশ ভালো লাগে সেগুলো পড়ার মধ্যে অনেক কৌতূহল কাজ করে। তবে আজকের গল্পটি সেরকম কোনো গল্প নয়, আজকের গল্প একটা সাংসারিক গল্প। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ছোট্ট একটা পরিবার সেখানেই স্বামী-স্ত্রী এবং শাশুড়ি তিনজনের পরিবার। তারা খুবই গরীব পরিবার বললেই চলে। আপনার ছেলে কোন মতে এদিক সেদিক কাজ করে দিনে খাবারের যোগান দেয় আর এভাবে তাদের দিন কাটছে। বলতে গেলে কোন মত ভাবে পেটে ভাতে তারা চলছে। তিনি ছিলেন খুবই খচ খচে প্রকৃতির মানুষ। যে কোন জিনিস নিয়ে খুবই ঝামেলা করে থাকেন। তারপরও তিনি বয়সে বড় এবং সংসারের আসল খুটি সেজন্য ছেলে ছেলের বউ সবাই তাকে খুবই সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। তার ছেলে সকালবেলা বেরিয়ে যায় কাজে সারাদিনই সেখানে থাকে। এদিকে বউটার ও কোন বাচ্চা কাচ্চা নেই সে কারণে শাশুড়ি তো এরকম প্রকৃতি সেটা আপনাদেরকে বললাম সবসময় কথা শোনায়। বউটা অনেক ভালো চোখের কোনে দু ফোটা পানি নিয়ে সবকিছু আবার ভুলে যায়।

প্রতিদিনের মতো সকালবেলা তার ছেলে বেরিয়ে যায় কাজে। প্রতিদিন যা টুকটাক কাজ করলেও আজকে তার কোন রকম কোন কাজে জোটে নি। সেজন্য কাজের সন্ধানে সারাটা দিনই রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছে। আজকে কাজ করতে পারেনি সংসারের জিনিসপত্র টাকার অভাবে নিয়ে যেতে পারবে না সেই আফসোসের রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে চলেছে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও তার চোখ শুধু কাজ খুজছে। কাজ করে যদি কিছু টাকা পায় তাহলে বাড়িতে জিনিসপত্র নিয়ে যাবে সেই আশায়। রাস্তার ধারে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ দেখতে পায় রাস্তার পাশে একটি মেয়ে বসে কান্না করছে। সে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে যে রাতের বেলা সেই একা একা রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে কান্না করছে কেন। মেয়েটি ছোট ছিল কিছু বলতে পারছিল না। বুঝতে পারে যে মেয়েটি হারিয়ে গিয়েছে বা মেয়েটির কেউ নেই সেজন্য সে রাস্তায় পড়ে।

এদিকে তাদেরও কোনো সন্তান নেই সেজন্য সে ভাবলো এই মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে গেলে হয়তো তার স্ত্রী অনেক বেশি খুশি হবে। কিন্তু মনে মনে আবার মায়ের কথাও ভাবছিল মা যে কত খচে প্রকৃতির মানুষ এই মেয়েটিকে দেখলে তো অনেক বেশি রাগ করবে।ঠিক সেটাই হলো বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তার মা অনেক বেশি রাগান্বিত হয় তার ওপর এবং বলে যেখানে পেয়েছে সেখানে রেখে আসতে। সংসারে এমনিতেই অবন্টন তার উপর আরেকজন মানুষ এনে জুটালে তার খাবারের ব্যবস্থা কে করবে। এখন তার ছেলে বলে যে আমি তার খাবারের ব্যবস্থা করব তাকে আমরা মেয়ের মত করে লালন পালন করব‌ আর তার বউ শুনেও খুবই খুশি হয়ে যায় যেহেতু তাদের সন্তান নেই একটা ছোট বাচ্চাকে তারা পেয়েছে নিজের সন্তান হিসেবে বুকে আগলে রাখবে।

মায়ের অমত থাকার পরও তারা বাচ্চাটিকে নিজের কাছে রেখে দেয় এবং নিজেদের সন্তানের মত লালন পালন করতে শুরু করে। কিন্তু এই মহিলাটি এই বাচ্চাটিকে একদমই দেখতে পারতো না সবসময় বাচ্চাটি সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। কিন্তু এই বাচ্চাটির মাধ্যমে যে তাদের ভাগ্য খুলে যাবে সেটা কখনোই তারা ভাবতে পারেনি। এ বাচ্চাটি আসার পর তাদের সাথে সবকিছু ভালো হতে থাকে এবং তারা খুবই সুন্দরভাবে দিন কাটাতে থাকে। এভাবে চলতে চলতে তারা একসময় দরিদ্র থেকে অনেক বেশি সচ্ছল পরিবারের পরিণত হয়। কিন্তু ওই মহিলাটি টাকা পয়সার মুখ দেখার পরেও তার সন্তুষ্ট ছিল না। তিনি তার ছেলেকে বলছিল যে আরও একটি বিয়ে করে নিতে তার বংশধরের প্রয়োজন তার বাচ্চাও তখন আরেকটি বিয়ে করলে হয়তো বাচ্চা হবে।

এটা শুনে ছেলেটা অনেক বেশি রাগ করে তার মায়ের উপর এবং বলে যে আমাদের তো বাচ্চা আছে তাহলে আমি কেন আরেকটি বিয়ে করতে যাব। তখন মহিলাটি বলে যে তোর নিজের সন্তান তো নয় আর আমার নিজের বংশধর লাগবে। এ নিয়ে তাদের ফ্যামিলিতে বেশ অনেকদিন ধরেই অশান্তি লেগে থাকে। এদিকে হঠাৎ করেই তার ছেলের বউ খুবই অসুস্থ। পরবর্তীতে তারা জানতে পারে যে তারা দুজন মা বাবা হতে চলেছে। আনন্দে খুবই খুশি হয়ে যায় কিন্তু আস্তে আস্তে এই বাচ্চা মেয়েটার আদর যত্ন কমে যায় আর তাছাড়া ওই মহিলাটি তো তাকে একদমই দেখতে পারে না।পরবর্তীতে অবহেলায় বড় হতে থাকে এই সংসারে এই ছোট বাচ্চাটা।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীগল্প
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনবাংলাদেশ


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

1000041574.jpg

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 hours ago 

আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু অভাগা মানুষের জীবনে আজীবন খারাপ হয়ে থাকে। মেয়েটির জীবনে তেমন ঘটেছে। আর সংসারে অন্য একজন আসলে একটু অসুবিধা হবে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।

 9 hours ago 

বর্তমানে মানুষ খুবই খারাপ,তারা কখনো এটা চিন্তা করে না যার জন্য আজ আমার সংসার আলোর দেখা পেয়েছে তাকে কিভাবে অবহেলা করি। ছোট্ট মেয়েটির জন্য খুব খারাপ লাগছে। তারজন্যই বলে আপন আর পরের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আজ আপন বাবা মা কিংবা দাদী হলে কখনো এমন করতে পারতো না। আপু আপনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো।