জীবন যুদ্ধ বয়স মানে না।|| The Struggle of life knows no age.
জীবন যুদ্ধ সত্যিই বয়স মানে না। এই ব্যাপারটা আরো একটি বার খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করলাম।
মাঝে মাঝে দেখবেন অনেক বয়স্ক এবং পঙ্গু ব্যাক্তি ভিক্ষা করছে, পথে ঘাঁটে। তারা ভিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে জীবন পরিচালনা করে থাকে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই দৃশ্যটা সচরাচর দেখা যায় এবং আমরা খুব স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপারটা গ্রহণ করি। তবে ব্যাপারটা তখনই খারাপ দিকে যায় যখন সুস্থ সবল একজন মানুষ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বসে যায় এবং খুব সহজেই উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে এটা বেছে নেয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কাউকে টাকা দেয়ার ক্ষেত্রে খুব দেখে শুনে টাকা দেয়ার চেষ্টা করি। তাছাড়াও আমি অধিকাংশ ক্ষেত্রে খাবার কিনে দেয়ার চেষ্টা করি, চোখের সামনে যখন একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ খাবারটা খায় তখন ব্যাপারটা আমি ভীষণ শান্তির সাথে উপভোগ করি। আবার মাঝে মাঝে কেউ যখন একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় পরম শান্তি অনুভূত হয়।
আবার মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে যখন দেখি মাঝ বয়সী একজন সুস্থ সবল মানুষ ভিক্ষার হাত বাড়ায়। এই দৃশ্য দেখে মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়। যাইহোক অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসমস্ত মানুষকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আর কিছু মানুষ তো শরীরের অঙ্গহানির অভিনয় করার মাধ্যমে যখন ভিক্ষা করে তখন সেটাকে মারাত্মক অপরাধ বললেও ভুল বলা হবে না।
যাইহোক কিছু মানুষ ব্যাতিক্রম রয়েছেন, যারা বয়সের ভারে নুয়ে না পরে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যান। যখন দেখি একজন মানুষ বার্ধক্যের ভারে নুয়ে পরেছেন কিন্তু তার জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন সাহসিকতার সাথে, তখন সত্যিই তাকে সম্মান জানাতে ইচ্ছে করে। এরা সত্যিকারের যোদ্ধা যারা কখনো হার মানে না। আজ দুপুরের দিকে পূবালী ব্যাংকের একটা কাজে যাচ্ছিলাম। গাড়িতে হঠাৎ একজন বয়স্ক মানুষকে দেখতে পেলাম, যার বয়স আনুমানিক ষাট থেকে সত্তুর বছর হবে এবং তার কোমর বয়সের ভারে নুয়ে পরেছে। অথচ হাতে তার ব্যাবসার সামগ্রী রয়েছে প্রচুর। তিনি বুট, বাদাম বিক্রি করেছিলেন।
আমি উনাকে কাছে ডাক দিলাম এবং প্রয়োজন নেই তবুও কিছু খাবার কিনলাম। একটু কথা বলার চেষ্টা করলাম বয়স্ক লোকটার সাথে। তার সাথে কথা বলে যা জানলাম তা শোনার জন্য সত্যিই প্রস্তুত ছিলাম না। তার ছেলে মেয়েরা তাকে দেখে না, তিনি নিজে একসময় ভালো উপার্জন করে সংসার চালাতেন কিন্তু এখন আর সেই কাজগুলো করতে পারেন না। তিনি এবং তার স্ত্রী দুজন এই ছোট্ট ব্যাবসা থেকে যা উপার্জন করেন তাই দিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে আছেন। উনার কথাগুলো শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেছিলাম বারবার। এরপর নিজেকে সামলিয়ে বললাম আপনি সত্যিকারের জীবন যোদ্ধা, এগিয়ে যান চাচা। আর সৃষ্টিকর্তা আপনাকে সুস্থ রাখুন, মুখের খাবার যেন কেড়ে না নেন। লোকটাকে টাকা দিলাম আর উনি মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে দ্রুত নেমে গেলেন বাস থেকে।
আপনারা এধরনের জীবন যোদ্ধা যদি দেখেন, দয়াকরে তাদের কাছ থেকে কিছু খাবার কেনার চেষ্টা করবেন। যদি প্রয়োজন নাও থাকে তবুও কিনবেন, নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা খুশি হবেন 🥺
বেঁচে থাকুক এমন জীবন যোদ্ধারা, যাদের কাছে বার্ধক্য হার মেনে যায়।
আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।
দারুন বিষয় নিয়ে কিন্তু আজ লিখলেন ভাই। আমার কাছে আজকের টপিকস্ বেশ দারুন লেগেছে। রাস্তায় যখন এমন বিষয় কোন ঘটনা দেখতে পাই তখন কিন্তু মনটাই খারাপ হয়ে যায়। আপনি বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে বিষয়টি আমারে মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
https://x.com/emranhasan1989/status/1878138432754717148?t=9RkBY5EkqlluygzIgn4b-A&s=19
জীবনটা আসলেই যোদ্ধ। যতক্ষণ পৃথিবীতে রয়েছি ততক্ষন আমাদের যুদ্ধ করতেই হবে। বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়েরা বাবা মায়ের খেয়াল রাখে না। বৃদ্ধা লোকটি এখন পরিশ্রম করছে দেখে ভালো লাগলো। দোয়া করি চাচা এবং চাচি ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ভালো থাকবেন।
দুমুঠো খেয়ে নিজেকে দুনিয়ার বুকে টিকিয়ে রাখার তাগিদ টা বেশ কঠিন। তাই জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষ সংগ্রাম করে চলে বেঁচে থাকার জন্য। আমি মনে করি এই সমস্ত মানুষের সহযোগিতা না করতে পারলেও তাদের বিক্রয় করা জিনিস কিনে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সুস্থ সবল মানুষগুলো ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। বিষয়টি নিতান্তই অসুস্থ মস্তিষ্কের কাজ। কিন্তু আপনার ছবিতে যে বয়স্ক চাচা জীবন যুদ্ধে লড়াই করে চলছে তার জন্য ভালোবাসা অবিরাম। ছেলে মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ার পর মা বাবাদের প্রতি অমানুসিক নির্যাতন করে। যাইহোক চাচা ও চাচির জন্য শুভকামনা রইল। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।