গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (পঞ্চম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast year
গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

প্রথম পর্বদ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
-

সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
শিবলিং শহর, সন্ধ্যা আসন্ন


হেথাংয়ের মন আজ ভীষণ খুশি। কারন তার কাছে প্রচুর স্বর্নমুদ্রা রয়েছে এবং ঝকঝকে সুন্দর জামা আজ তার গায়ে জড়ানো। চারিদিকে লোভনীয় খাবার আর সুন্দরী রমণীর বিচরণ, হেথাং নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করতে থাকে। হেথাং যে টেবিলে বসে সুস্বাদু সুসান নুডুলস আর খাসির মাংস খাচ্ছিল তার ঠিক সামনেই কার্লো এসে বসে পরলো।

হুট করে অপরিচিত একজন মানুষ সামনে বসাতে হেথাং ইতস্তত বোধ করতে লাগলো। কার্লো বললো হুজুর আপনি আমার সালাম গ্রহণ করুন, আপনি আমাকে চিনবেন না। তবে আপনাকে দেখে আমার ভীষণ পরিচিত মনে হচ্ছে, যদি আপনার পরিচয় দেন তাহলে উপকৃত হতাম। হেথাং সরাসরি বললো আমি একজন ব্যাবসায়ী, তবে শিবলিং শহরে আমি নতুন। আপনি আমাকে ভুল ভাবছেন, আমি আপনাকে চিনি না।

কার্লো বেশ চতুরতার সাথে জবাব দিলো আপনি আমার ভীষণ পরিচিত একজন মানুষের মতো দেখতে। আমি কি আপনার নাম জানতে পারি? হেথাং হেসে উত্তর দেয় আমার নাম হেথাং। কার্লোর মুখে দুষ্টু হাসি, হুজুর আপনার নাম যেমন সুন্দর তেমনি আপনি দেখতে সুন্দর। তা হুজুর এই পানশালায় কতদিন থাকবেন বলুন, আপনি চাইলে আপনার জন্য সুন্দর একটি প্রাসাদ যোগাড় করে দিতে পারি। হেথাং হেসে উত্তর দেয়, না আপাতত আমি এখানে ঠিক আছে। তবে অদূর ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজন হয় আপনাকে জানাবো।

কার্লো হেথাংকে খুব কাছ থেকে বোঝার চেষ্টা করছে, একজন সুন্দরি এসে হেথাংকে খাবার দিয়ে গেছে আবারো। কার্লো হেথাংয়ের দৃষ্টিতে কামুক কিছু দেখতে পেয়েছে। কার্লো চট করে বলে ওঠে হুজুর আজ রাতে আপনার সেবার জন্য একজন দাসী ব্যাবস্থা করেছি, যদি আপনি কবুল করেন। হেথাং এবার রাজি হয়ে যায় কার্লোর কথা এবং তাকে দুইশত স্বর্নমুদ্রা দিয়ে দেয়। কার্লো মনে মনে বেজায় খুশি কারন একশো স্বর্ণমুদ্রা দাসীকে দিয়ে খুশি করা যাবে আর একশো তার পকেটে ঢুকবে। আর হেথাংয়ের দুর্বলতা কার্লো বুঝতে পেরেছে।

কার্লো সময়মতো হেথাংয়ের ঘরে দাসী ঢুকিয়ে দিয়ে খুশি মনে চলে যায়। রাতে হেথাং প্রথম তার খারাপ বাসনা পূর্ন করলো। তবে সে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছে ধন সম্পদ হলে সে তার সব আকাঙ্ক্ষা মেটাতে পারবে। পরদিন সকালে কার্লো যথারিতী হাজির হেথাংয়ের সামনে। হেথাং খুশি মনে তাকে আবারো পঞ্চাশ স্বর্নমুদ্রা দিয়ে দিল। কার্লোর লোভী চোখ মুখ লকলক করছিল। কার্লো বললো হুজুর আপনি চাইলে প্রতিদিন আপনার সেবায় দাসী নিযুক্ত করতে পারি তবে আপনার একটা প্রাসাদ হলে সবথেকে ভালো হয়।
হেথাং একটু চিন্তা করে বললো হ্যা তুমি ঠিক বলেছো, তাহলে তুমি প্রাসাদ খোঁজা শুরু করে দাও। খুব শীঘ্রই আমরা প্রাসাদে উঠে যাবো। কার্লো মনে মনে চিন্তা করে নেয় সে অনেক বড় কিছু পেতে যাচ্ছে।

হেথাং নিজের ভেতর পরিকল্পনা সাজাতে থাকে কারন তাকে অনেক বড়লোক হতে হবে। কার্লো ঠিক বলেছে তার একটি প্রাসাদ খুব দরকার, না হলে লোকে তাকে দাম দেবে না। হেথাং বেশ কিছু পাথর সংগ্রহ করতে থাকে এরপর সেগুলো বড় বড় বেশ কিছু বাক্সে সংরক্ষণ করে। এরপর তার ঘরে গিয়ে ধীরে ধীরে সবগুলো পাথরকে নীলকন্ঠ রত্ন দিয়ে মূল্যবান পাথরে রুপ দেয়। এবার হেথাং চিন্তায় পরে যায় এগুলো সে কোথায় বিক্রি করবে কারন আগের দোকানদার পাঁচ হাজার স্বর্ণমুদ্রা দিতেই হিমসিম খেয়ে যাচ্ছিলো।

সে দ্রুত কার্লোকে খবর দেয়, তবে কার্লো এতো রত্ন পাথর দেখে অবাক হয়ে যায়। কার্লো অনেকটা চোখ বড় বড় করে রত্ন পাথরগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে। এরপর সে বলে এগুলো রাজা জিংহন ছাড়া আর কেউ কেনার ক্ষমতা নাই। হেথাং বলে ওঠে তাহলে আমাকে জিংহন এর সাথে দেখা করিয়ে দাও। আমি এগুলো এক লক্ষ স্বর্নমুদ্রা দিয়ে বিক্রি করতে চাই। কার্লোর মাথা ঘুরে যাবে এমন একটা অবস্থা হলো। যাইহোক দু'জনেই দুই বাক্স স্বর্নমুদ্রা নিয়ে চলে যায় জিংহনের রাজ দরবারে।

"চলবে"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশার দেখতে দেখতে পঞ্চম পর্ব চলে এসেছে। হেথাং এর জীবন সুখে কাটছে , সব আকাঙ্ক্ষা মেটাতে পারছে। কার্লো তাকে সব দিক দিয়ে সাপোর্ট করছে। কিন্তু কার্লোর মনে কি আছে তা ভালই বুঝতে পারছি। কার্লো এতো রত্ন পাথর দেখে অবাক হয়ে যায় এবং তার ভেতর লোভ জাগে। কার্লো একদিন সুযোগের সৎ ব্যবহার করবে তাই সে দুই বাক্স স্বর্নমুদ্রা নিয়ে চলে যায় জিংহনের রাজ দরবারে। পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 last year 

হ্যা কার্লো সুবিধার লোক নয়, আর হেথাং নিজেও ভালো না। সবমিলিয়ে ওর সাথে একটু মিলে গেছে। দেখা যাক সামনে কি হয়।

 last year 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা গল্পটি সম্পুর্ন ভিন্ন রকম একটি গল্প। হেথাংমনে হয় শেষ পর্যন্ত ঝামেলায় পরবে আমার কাছে মনে হয়। তবে দেখার বিষয় শেষে গিয়ে কি হয়। কার্লো লোকটি বেশ চালাক দেখছি হেথাং এর সাথে আঠার মতো লেগে আছে। জিংহনের রাজ দরবারে গিয়ে এক লক্ষ স্বর্নমুদ্রা বিক্রি করবে বাহ্ দারুন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

সামনের পর্বটি আরো দারুন হবে লিমন। কার্লো হেথাংকে সহযোগিতা করছে স্বার্থের জন্য। দেখা যাক কি হয়।