নির্বাসিত নক্ষত্র ( সপ্তম পর্ব )!!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ছবিটি Pixabay নিয়ে নেওয়া এবং Canva দিয়ে এডিট করা
আর কখনও যোগাযোগ করতে ইচ্ছা হয়নি অদিতির সাথে। প্রশ্ন করে তৃপা
আমাদের তো অনেক কিছুই ইচ্ছা করে কিন্তু সেগুলো সবসময় করা যায় আমরা করতে পারি। বড় হয়ে যাওয়ার এটাই একটা সমস্যা জানো তো। আমাদের অনেক কিছুই ইচ্ছা করবে কিন্তু আমরা করতে পারব না।
তোমার নতুন করে শুরু করার ইচ্ছা হয় না। বিয়ে কেন করছ না তুমি। ম্রিয়মানকে প্রশ্ন করে তৃপা।
আসলে আমিও ঠিক কাউকে আর বিশ্বাস করতে পারি না। মানুষের সৌন্দর্য আমাকে আকৃষ্ট করলেও আমার মন আমাকে পিছিয়ে নিয়ে যায়।
জানো ইনান আমাকে একসময় বলত পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে, মানুষের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে কিন্তু ও আমাকে ছেড়ে যাবে না। অথচ সবকিছুই আছে পৃথিবী আছে মানুষ আছে কিন্তু ইনান আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে।
তোমাদের ছাড়াছাড়ি হলো কীভাবে? জিজ্ঞেস করে ম্রিয়মান
বাবা মা মারা যাবার পরে আমি ইনানের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে যায়। কারণ তখন পৃথিবীতে আমার কেউ ছিল না ও ছাড়া। কিন্তু ক্রমাগত ইনানের গুরুত্ব কমতে থাকে আমার প্রতি। আমি মানিয়ে নেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু যখন দেখলাম আমি পুরোপুরি ভুল মানুষ কে বিশ্বাস করেছি তখন আমি আর মেনে নিতে পারিনি। তারপর যা হওয়ার তাই হলো
কী মেনে নিতে পারোনি?
বেশ কয়েক বছর ধরে ইনান নতুন একটা কানাডিয়ান মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায় মেয়েটা ওর অফিস কলিক। এবং আমি জানতে পারি ওরা নাকি কয়েক মাস আগে বিয়েও করেছে গোপনে। এরপর আমি একেবারে দিশেহারা হয়ে যায়। তারপর যেটা হওয়ার সেটাই হয়।
একটা ব্যাপার কী জানো আমরা সবসময় ভুল মানুষ কে ভালোবাসি। অথবা সঠিক মানুষ বলতে কিছু হয়ই না। সুযোগ পেলে হয়তো সবাই ঠকায়। আর যারা এই সুযোগ টা পাই না তারাই ঐ লয়্যালিটির কথা বলে।
তুমি সুযোগ পেলে অদিতি কে ছেড়ে দিতে অন্য কারো সাথে সম্পর্কে যেতে??
তৃপার এমন প্রশ্নে কথা বলে না ম্রিয়মান। চুপ করে থাকে।
তুমি যদি এমন ব্যক্তিত্বের হতে তাহলে এতদিনে অনেক আগেই পুরোপুরি ভুলে যেতে অদিতির কথা। এখনও নিজের প্রাক্তন প্রেমিকার কথা ভাবতে না। এখনও বিয়ে না করে থাকতে না।
একটা গভীর অন্ধকার নেমে আসে সমুদ্রের পাড়ে। আকাশে তীব্রভাবে জোৎস্নার আলো দিচ্ছে পূর্ণিমার চাঁদ। নক্ষত্র গুলো মিটমিট করে জ্বলে উঠছে। লক্ষ কোটি কিলোমিটার দূরের নক্ষত্রদের কে মনে হচ্ছে অনেক আপন। নক্ষত্র গুলো যেন একাকিত্বের সময় ওদের সঙ্গ দিচ্ছে। সমুদ্রের গর্জন ভেসে আসছে এখানে। চারিদিক টা একেবারে নিরব হয়ে রয়েছে।
একের পর এক সিগারেট শেষ করছে তৃপা। ততক্ষণে তৃপার সিগারেটের ধোয়া সয়ে গেছে ম্রিয়মানের। এখন আর অসুবিধা হচ্ছে না। পাশাপাশি বসে দুজন। হঠাৎ ম্রিয়মানের কাঁধে মাথা রাখে তৃপা। মাথা টা রেখে বলে
তোমার কাঁধে মাথা রাখলাম কোন অসুবিধা হবে। আমার একটু খারাপ লাগছে।
তোমার খারাপ লাগছে তাহলে চলো রিসোর্টে ফিরে যায়। বলে ম্রিয়মান।
না থাক এখানে ভালো লাগছে। অনেক সুন্দর এই মায়াবি রাতের দৃশ্য। আচ্ছা ম্রিয়মান আমাদের যদি অনেক আগে দেখা হতো। আমাদের জীবনে যদি দুইটা ভুল মানুষ না এসে আমরা একে অন্যের জীবনে আসতাম তাহলে ভালো হতো না।
ম্রিয়মান কোন কথা বলে না।
তোমাকে এখন আমার অনেক আপন মনে হচ্ছে। তোমার কাঁধে মাথা দিয়ে মনে হচ্ছে এই জায়গাটা আমার অনেক পরিচিত। শত বছরের সম্পর্ক এই জায়গাটার সাথে আমার। বলে তৃপা
ম্রিয়মান কিছু বলে না। ও চুপ করে থাকে
তুমি তো চুপ করে আছ তোমাকে একটা কথা বলব।এই কথাটা এখন একজনকে জানানো দরকার। আমার তো পৃথিবীতে আর কেউ নেই। তোমাকে বলতে ইচ্ছা করছে বলে তৃপা
হ্যা বলো সমস্যা নেই
আমার ক্যান্সার আছে। আমি লাস্ট স্টেজে আছি!!
চলবে.....
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
তৃণার কথা শুনে খারাপ লাগলো খুব।শেষ পরিনতি তো দেখছি ভীষণ কষ্টের।এজন্য ই হয়তো গল্পের নাম নির্বাসিত নক্ষত্র।সব শেষে কি যে হবে জানার অপেক্ষায় রইলাম।