শিক্ষাব‍্যবস্থা!!

in আমার বাংলা ব্লগ10 days ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শুক্রবার, ২৩ ই মে ,২০২৫।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000580154.png


আত্মহত্যা মহাপাপ। প্রত‍্যেকটা ধর্মেই আত্মহত্যা কে মহাপাপ বলা হয়েছে। কেউ যদি তার নিজ হাতে জীবনকাল সমাপ্ত করে এর চেয়ে বাজে কিছু আর হয় না। সৃষ্টিকর্তা এই অধিকার আমাদের দেয়নি যে ইচ্ছা হলো আর নিজেকে শেষ করে দিলাম। কথাগুলো বলার কারণ সাম্প্রতিক সময়ের একটা ঘটনা। একটা ঘটনা চিন্তা করুন তো। একটা ছেলে আত্মহত্যা করার আগে সুইসাইড নোটে লিখে রাখল আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। অর্থাৎ দেশের শিক্ষা ব‍্যবস্থায় কিছু তো একটা সমস্যা আছেই। এবং এই সমস্যা টা শুধু সাধারণ না বলতে হয় অনেক বড় আকারের। দিনে দিনে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এমন একটা পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেখানে শিক্ষার্থীরা মানসিক রুগীতে পরিণত হচ্ছে। শিক্ষা এখন আর মেরুদন্ড না শিক্ষা এখন মৃত্যুর কারণ।

চলুন আসল ঘটনা টা জানি। ধ্রুবজিৎ ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মেধাবী একজন ছাএ। হঠাৎ করে সে আত্মহত্যা করেছে। এবং মৃত্যুর আগে তার লেখা শেষ সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে " Sorry বাবা, মা! আমি ধ্রুবজিৎ সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী বাংলাদেশের শিক্ষা ব‍্যবস্থা। এতো চাপ কোনভাবেই আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব ছিল না"। একটা মানুষ কখনোই তার মৃত্যুর ঠিক আগের মূহূর্তে তার নিজের ডায়েরিতে মিথ্যা বানোয়াট কিছু লিখবে না। অর্থাৎ ধ্রুবজিৎ ছিল কঠিন মানসিক জটিলতায়। এই চাপ সে নিতে পারেনি। এইজন্যই হয়তো এই সহজ পথ নির্ধারণ করেছে। নিজের জীবনের মায়া করেনি। আত্মহত্যা করতে গেলে অনেক সাহসের প্রয়োজন হয়। অধিকাংশ মানুষের এই সাহস থাকে না।



বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা যে কী পরিমাণ বাজে সেটা মোটামুটি আমরা সবাই জানি। এখানে কেউ নতুন কিছুর কথা বলবে না। নতুন কিছু করতে চাইবে না। নিজের ক্রিয়েটিভিটি দেখানোর জায়গা নেই। আবার কেউ যদি নিজে থেকে কিছু করতেও যায় তখন তাকে শুনতে হয় অন‍্যরা যা করছে সেটাই করো। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থী প্রতি সেমিষ্টারে ফাইনাল, মিডটার্ম, ক্লাস টেস্ট,কুইজ টেস্ট, ল‍্যাব, অ‍্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন এগুলো নিয়েই পড়ে থাকে। সত্যি বলতে ঐ শিক্ষার্থী ঠিকমতো খাওয়ার সময় পায় না এমন অবস্থা। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এই চাপ সহ‍্য করে নেয়। এবং চেষ্টা করে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। মানিয় নিতে নিতে তারা একপ্রকার মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। আর যারা একেবারেই মানিয়ে নিতে পারে না। এই চাপ নিতে পারে না তাদের অধিকাংশ সুইসাইড করে।

এখন আপনি বলতে পারেন সুইসাইড করার কী দরকার। লেখাপড়া ছেড়ে দিলেই হয়। আপনার কী ধারণা ঐ শিক্ষার্থী ঐ চিন্তা টা করে না। অবশ্যই করে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেটা হয় একজন শিক্ষার্থী যখন তার পরিবারের কাছে জানাই সে এতো চাপ নিতে পারছে না। সে আর এটা কন্টিনিউ করতে পারবেনা তখন তার নিজের বাবা মা বলে অন‍্যরা যদি পারে তুই কেন পারবি না। ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দিলে মানুষ কী বলবে। আমরা অন‍্যদের সামনে মুখ দেখাব কী করে। অর্থাৎ পরিবারের মানুষ ঐ ছেলের সমস্যা টার কথা ভাবে না বিবেচনা করে না। তারা নিজেদের মানসম্মান নিয়ে ব‍্যস্ত যে মানুষ কী বলবে। সামনে যখন আর কোন পথ থাকে না। বাধ‍্য হয়ে ধ্রুবজিৎ রা আত্মহত্যা করে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ঠিক যতটা দায়ী শিক্ষাব্যবস্থা তার চেয়ে বেশি দায়ী এইরকম চিন্তা ভাবনার বাবা মা এবং পরিবারের সদস‍্য।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png


Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 days ago 

শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন, দক্ষতা বিকাশ এবং সুস্থ মানসিকতা গঠন হওয়া উচিত। কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থায় পরীক্ষানির্ভরতা, গতানুগতিক পদ্ধতি এবং অমানবিক চাপ শিক্ষার্থীদের স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের শিক্ষাকে 'জীবন-উপযোগী' করতে হবে, 'জীবননাশক' নয়।

 10 days ago 

শিক্ষা জীবনের চাপ এত বেশি হয়ে গেছে যে অনেক ছাত্র-ছাত্রী সেটা সহ্য করতে পারে না। পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, ল্যাব, প্রেজেন্টেশন—সবকিছু একসাথে সামলাতে গিয়ে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। কেউ কেউ মানিয়ে নিতে পারে, কেউ পারে না। যারা পারে না, তাদের কেউ কেউ জীবন শেষ করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়।