অন্যরকম এক ব্যাখ্যা।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমি মোটামুটি ভালো আছি। আজ এক অন্যরকম একটা পোস্ট করব। সাধারণত এইরকম পোস্ট আমি খুব একটা করি না। তবে আজ করব। গান মোটামুটি আমরা সবাই শুনি। বয়সভেদে অবস্থান ভেদে রুচির ভেদে আমাদের পছন্দ আলাদা। তবে এক্ষেত্রে আমি একটু আলাদা। আধুনিক গানগুলো আমায় খুব একটা টানে না। আমার জেনারেশনের অন্যরা যখন ডিজে নিয়ে ব্যস্ত তখন আমি পড়ে আছি সওর দশকের সেই মহীনের ঘোড়াগুলি ব্রান্ড নিয়ে। মহীনের ঘোড়াগুলি আমার পছন্দের একটা মিউজিক ব্রান্ড। পাশাপাশি একটু পুরাতন দিনের গানগুলো আমার বেশি পছন্দের। আমি চেষ্টা করি একটা গান একটু মন দিয়ে শোনার। ঐটার অর্থ টা তাৎপর্য টা বোঝার। হুমায়ুন আহমেদ এর নাম আপনারা সবাই শুনেছেন। উনি শুধু সাহিত্যিক না।
পাশাপাশি উনি বেশ ভালো একজন পরিচালক যিনি অসংখ্য নাটক এবং বেশ কয়েক সিনেমা তৈরি করেছেন। এবং উনার রচিত কয়েকটা গানও রয়েছে। উনার তেমনই একটা গান হচ্ছে "চাঁদনি পসরে কে আমারে স্মরণ করে"। গানটা আমার বেশ পছন্দের। মাঝে মাঝে শোনা হয়। তবে আমি এতদিন ভাবতাম গানটা হয়তো নিজের প্রিয় মানুষের কথা ভেবে লেখা। কিন্তু গানের আসল অর্থটা একেবারে আলাদা। সেটা জানার পরে আমি বেশ অবাক হয়েছিল। গানের প্রতিটা লাইন দিয়ে আমি অর্থ টা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।
চাঁদনি পসরে কে আমারে স্মরণ করে?
কে আইসা দাঁড়াইসে গো আমার দুয়ারে?
চাঁদনি পসরে কে আমারে স্মরণ করে?
কে আইসা দাঁড়াইসে গো আমার দুয়ারে?
এই লিরিক্স টা শুনে আপনার মনে হবে হয়তো এটা প্রেমিক প্রেমিকা একে অপরকে উদ্দেশ্য করে বলেছে। কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ এখানে বলেছে মৃত্যু দূতের কথা। অর্থাৎ হুমায়ুন আহমেদ বলেছে চাঁদনি পসরে মৃত্যুদূত বা আজরাইল অথবা যম যেটাই বলি সেটা এসে আমার দুয়ারে দাঁড়িয়েছে। হুমায়ুন আহমেদ এখানে সেটাই বলেছে।
তাহারে চিনি না আমি, সে আমারে চেনে
চাঁদনি পসরে কে আমারে স্মরণ করে?
কে আইসা দাঁড়াইসে গো আমার দুয়ারে?
এই লিরিক্সে বলেছে তাহারে চিনি না আমি কিন্তু সে আমারে চেনে। আমরা কিন্তু কেউই মৃত্যুদূত কে চিনি না। কিন্তু আমাদের মৃত্যুদূত আমাদেরকে ঠিকই চেনে।
বাহিরে চান্দের আলো, ঘর অন্ধকার
খুলিয়া দিয়াছি ঘরের সকল দুয়ার
বাহিরে চান্দের আলো, ঘর অন্ধকার
খুলিয়া দিয়াছি ঘরের সকল দুয়ার
তবু কেন সে আমার ঘরে আসে না?
সে আমারে চিনে, কিন্তু আমি চিনি না
বাইরে চাঁদের আলো কিন্তু ঘরে অন্ধকার। অর্থাৎ ব্যক্তির মৃত্যুর ভয়ে পুরো ঘর অন্ধকারি নিমজ্জিত হয়েছে। ঘরের সকল দুয়ার খুলে দিয়েও সেই অন্ধকার দূর হচ্ছে না। তবু সেই মৃত্যুদূত ঘরে আসে না।
সে আমারে ঠারে ঠারে ইশারায় কয়
এই চান্দের রাইতে তোমার হইছে গো সময়
সে আমারে ঠারে ঠারে ইশারায় কয়
এই চান্দের রাইতে তোমার হইছে গো সময়
ঘর ছাড়িয়া বাহির হও, ধরো আমার হাত
তোমার জন্য আনছি গো আইজ চান্দের দাওয়াত
আবার এখানে বলেছে মৃত্যুদূত আমাদের বারে বারে বলে এই চাঁদের রাতে তোমার সময় হয়ে গিয়েছে। তোমাকে বিদায় নিতে হবে। ঘর ছেড়ে তাকে বের হয়ে আসতে বলেছে। এবং মৃত্যুদূত বলছে আমার হাত ধরো তোমার জন্য আজ আমি দাওয়াত নিয়ে এসেছি সৃষ্টিকর্তার নিকট যাওয়ার দাওয়াত।
এটাই ছিল মূলত গানটার একটা সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা। ব্যাখ্যা টা পুরোপুরি আমার নিজের ক্রিয়েটিভিটি থেক লেখা বলতে পারেন। হুমায়ুন আহমেদ এখানে মৃত্যুদূতকে নিয়ে এই গানটা লিখেছেন। কী অসাধারণ এর অর্থ। মৃত্যুদূত কে আমরা চিনি কিন্তু সে আমাদের ঠিকই চেনে। এ যেন অন্যরকম এক অর্থ প্রকাশ করেছে। হুমায়ুন আহমেদ তার রচিত আরেকটা গানের মধ্যে বলেছিলেন আমার মৃত্যু যেন হয় চাঁদনি পসর রাতে। আপনি যদি গানগুলো একটু খেয়াল করে দেখেন অন্যরকম একটা অর্থ খুজে পাবেন। আর সেই অর্থ যখন অনুধাবন করবেন আপনার অনূভুতি একেবারে পাল্টে যাবে। আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.