নির্বাসিত নক্ষত্র ( পঞ্চম পর্ব )!!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ছবিটি Pixabay নিয়ে নেওয়া এবং Canva দিয়ে এডিট করা
বিকেল চারটার দিকে সেন্ট মার্টিনে গিয়ে পৌছায় জাহাজ আটলান্টিক। কেবিনে গিয়ে ম্রিয়মান দেখে তৃপা তখনও ঘুমিয়ে। তৃপাকে বেশ কয়েকবার ডাক দেয় ম্রিয়মান
এই যে উঠে পড়ুন আমরা চলে এসেছি। উঠে পড়ুন। ম্রিয়মানের ডাক শুনে উঠে পড়ে তৃপা। তৃপা কে উদ্দেশ্য করে ম্রিয়মান বলে বাবা কী ঘুম আপনার। যাইহোক চলুন। না হলে এই শীপেই আবার ফিরে যেতে হবে। শীপ থেকে সেন্ট মার্টিন নেমে তৃপা এবং ম্রিয়মান চলে যায় রিসোর্ট এর সন্ধানে। শীতের বেলা খুবই ছোট। কিছুক্ষণ পরেই সন্ধ্যা নামবে। দ্রুত একটা রিসোর্ট এর ব্যবস্থা করতে হবে। বেশ কয়েকটা রিসোর্ট ঘুরে কোন লাভ হলো না কোথাও খালি রুম নেই। অবশেষে অনেক খোজাখুজির পর "দি আটলান্টিক রিসোর্টে " খালি রুম পেয়ে যায় ওরা। তবে ভাড়াটা বেশি পড়ে। প্রতিটা রুমের ভাড়া দিনপ্রতি প্রায় ৬,৫০০ টাকা। ম্রিয়মান বলে কিছু কমানোর জন্য। কিন্তু তৃপা বলে আরে সমস্যা নেই। টাকা কোন ব্যাপার না। রুম তো পাওয়া গিয়েছে এটাই অনেক। দুজন দুইটা সিঙ্গেল রুম নেয়। এরপর ম্রিয়মান এবং তৃপা তাদের রুমে চলে যায়।
আজ আর সময় নেয় সূর্য প্রায় ডুবে গিয়েছে। ঘোরাঘুরি যা করার কাল করতে হবে। সন্ধ্যাটা নিজের রুমে বসে থেকেই কেটেছে ম্রিয়মানের। আজ হঠাৎ ম্রিয়মান তার অতীতে ফিরে গিয়েছে। হঠাৎ ম্রিয়মানের মনে পড়ে গেল অদিতির কথা। জাহাজে আসার সময় তৃপার ঐ অসাধারণ সৌন্দর্য টা ওকে আকৃষ্ট করেছে। আর তারপর থেকেই অদিতির কথা ওর মনে পড়ছে বেশি।
অদিতির সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল পুরো চার বছর। কিন্তু এরপরও ও চিনতে পারেনি মেয়েটাকে। ও এখনও ভাবতে থাকে ঠিক কী কারণে অদিতি ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এখনও ম্রিয়মান এই প্রশ্নের উওর খুজে বেড়ায়। না আর কখনও ওদের যোগাযোগ হয়নি। আজ চার বছর ওদের কোন যোগাযোগ নেই। কিন্তু তারপর ম্রিয়মান অদিতির খোঁজ রেখেছে। নিয়মিত খোঁজ নেয় বন্ধুদের থেকে। বাইরে থেকে ও এক কঠোর নিষ্ঠুর মানুষ যার ভেতরে কোন অনূভুতি নেই ভালোবাসা নেই আবেগ নেই। কিন্তু ম্রিয়মান জানে ও এখনও হয়তো সেই মেয়েটাকে ভালোবাসে। যে ওকে ধোঁকা দিয়েছিল। নিজের রুমে বসে এগুলোই ভাবছিল ম্রিয়মান। আজ যেসব পর্যটক এসেছে তারা বাইরে বারবিকিউ পার্টি করছে বা কেউ কেউ বসিয়েছে গানের আসর। বাইরে একটা আলাদা উৎসবের আমেজ। কিন্তু ঐসবের প্রতি ওর কোন আকর্ষণ নেই।
দেখতে দেখতে অনেক সময় চলে গিয়েছে। রাতের খাবারের সময় হয়ে গিয়েছে। ম্রিয়মানের পাশের রুমেই রয়েছে তৃপা। তৃপা কে ডাকতে গিয়ে ম্রিয়মান দেখে তৃপা ঘুমিয়ে রয়েছে। তৃপা কে ডেকে তুলে খেতে চলে যায় দুজন। এখানে রাতের খাবারের কোন ভ্যারাইটি নেই। রিসোর্ট থেকে কিছু সিলেক্ট করা মেন্যু রয়েছে ঐগুলোই। ।
দুজন রাতের খাবার খাচ্ছে সামনাসামনি বসে। ম্রিয়মান আজ রাতে কী করবা। ওহ সরি আপনাকে তুমি বলে ফেললাম। সমস্যা নেই বলতে পারেন বলে ম্রিয়মান।
বলতে পারি যদি আপনিও বলেন। আসলে আপনি আমার থেকে বয়সে বেশ কিছুটা বড়। এইজন্যই আমি একটু দ্বিধায় রয়েছি বলল ম্রিয়মান। সমস্যা নেই আমি বলছি তো বলতে পারেন। একসঙ্গে এতদূর এসেছি এতটা সময় কাটিয়েছি এখন তুমিতে আসা উচিত। দুজনেই সম্মতি জানালো।
ও যেটা বলছিলাম আজ রাতে কী করবা। কী আর করব আমি ঘুমাব বলল ম্রিয়মান। এই সেন্টমার্টিনে এসে ঘুমাবা তুমি তো আজব মানুষ। তো রাতে কী করতে বলছ তুমি।
চলো আজ রাতটাও দুজন সমুদ্রের পাড়ে বসে কাটাই। দেখ বাইরে কী সুন্দর জোৎস্না। কিছু বলে না ম্রিয়মান।
কী হলো কিছু বলো। না তোমার ঘুমাতেই হবে আজ রাতে,বলে তৃপা। না ঠিক সেটা না।
ঠিক আছে তাহলে আজকে রাত টাও আমরা সমুদ্রের পাড়ে চাঁদের জোৎস্নায় গল্প করে কাটাব। ম্রিয়মান বলে আচ্ছা ঠিক আছে। তৃপার সামনে একপ্রকার আত্মসমর্পণ করে ম্রিয়মান।
চলবে......
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সময়ের অভাবে আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি।তবে এটা বুঝলাম ভালোবাসায় ধোঁকা ঘটিত কোনো কাহিনী নিয়ে লেখা।আমার মনে হচ্ছে ম্রিয়মানটা আপনি নিজেই, আর তার সঙ্গে কিছু বাস্তব ঘটনা ও কিছু কাল্পনিক কাহিনী মিশ্রিত করে লিখেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধীরে ধীরে ম্রিয়মান মেয়েটার কাছে আত্মসমর্পণ করছে। তবে ম্রিয়মান নিজেও তার রুপের আগুনে কিছুটা হলেও পুড়ছে বোঝা যাচ্ছে। যাইহোক রাতটা হয়তো সমুদ্রের পাড়েই কাটবে।।।
অবশেষে গল্পটির আরেক পর্ব পড়লাম।গল্পটি আস্তে আস্তে খুব ভালো লাগছে।দুজন দুজনকে তুমি সম্বোধন ও করলো এখন অপেক্ষা সামনে কি হয়।অনেক ধন্যবাদ চমৎকার এই গল্পটা শেয়ার করার জন্য।