শখের ছাদ বাগানের কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফি।
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
শখ হচ্ছে মানুষের মনের ইচ্ছা। যার মাধ্যমে মনকে আনন্দ দেওয়া সম্ভব। পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যার নিজস্ব কোনো শখ বা ইচ্ছা থাকে না। তবে ব্যক্তিভেদে সকলেরই ভিন্ন ভিন্ন শখ রয়েছে। কারোর বাগান করার শখ রয়েছে আবার কারোর ঘুরতে যাওয়ার শখ রয়েছে। অপরদিকে শৌখিনতা বলতে সাধারণত আধুনিকতা কে বোঝায়। প্রতিটি মানুষের জীবনেই শৌখিনতার প্রভাব রয়েছে।আমার দেখা একজন সৌখিন মানুষ হলো নাজমা আপা।ওনার পরিচিয় হলো আমি এর আগে যে বাসায় ভাড়া থাকতাম সেই বাড়ির মালিক বাবুল প্রধান ভাইয়ার স্ত্রীর নাম নাজমা।বাবুল ভাইয়া তিন বছর আগেই পৃথিবীর মায় ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন।তাই বাড়ির পুরো মালিকানা নাজমা আপার।ওনাদের অনেক গুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাড়ি রয়েছে।নামজা আপার বাবার বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ তাই তিনি সেখানে শহরে জায়গা কিনে মনের মতো করে বাড়ি তৈরি করেছেন এবং সেখানে তার শখের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন যা বাড়ির ভিতরে ঢুকলেই বোঝা যায়।নাজমা আপা ব্যবসার খাতিরে ঢাকায় বসবাস করেন মাঝেমধ্যে গোবিন্দগঞ্জে বেড়াতে আসেন।কিন্তু তারপরেও এখানে উনি সৌখিনতার বিষয়ে কোনো কার্পণ্য করেন না।
বাড়ির সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে ছাদে গাছ লাগানো বসার ব্যবস্থা বাচ্চাদের খেলাধুলায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য সবসময় পরিপাটি রাখা সবদিকে ওনার বিশেষ নজর থাকে।তার বাড়িটি সৌন্দর্য দিয়ে ভরপুর এবং প্রত্যেকটা ভাড়াটিয়া সেখানে নিজের মতো স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে কোনো কিছুতেই কোনো ধরা বাধা নিষেধ নেই।আর নাজমা আপা খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি সবাইকে খুব আপন মনে করে এবং সবার সাথে খুবই বন্ধুসুলভ আচরণ করে।আমরাও তাকে বাড়ীওয়ালী কম বান্ধবী বেশি মনে করতাম!সব সময় একসাথে বসে আড্ডা গল্প বিভিন্ন রকম খাওয়া দাওয়া অনেক মজা করা হতো সেই দিনগুলো খুব মিস করি।
নাজমা আপার বাসায় থাকা অবস্থায় ছাদে গিয়ে কিছু ছবি তুলেছিলাম আজ হঠাৎ করেই গ্যালারিতে সেই ছবিগুলো চোখে পড়লো তাই ভাবলাম এখানে শেয়ার করি এবং সারা জীবনের জন্য স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখি।যখন খুব মন খারাপ থাকে তখন মাঝে মাঝে ইস্টিমিটি আমার প্রোফাইলে ঢুকে নিজের পোস্টগুলো দেখি এবং পুরনো স্মৃতিগুলো মনে করার চেষ্টা করি তখন খুব ভালো লাগে সেই চিন্তা থেকেই ভাবলাম এই ছবিগুলোও স্মৃতির অ্যালবামে রেখে দেই।
ফটোগ্রাফি-১
লেবু গাছ তো প্রায় সব বাড়িতেই দেখা যায় লেবু যেমন উপকারী তেমনি নিত্য প্রয়োজনীয় একটি জিনিস।গরম ভাতের সাথে লেবু খেতে সবাই কমবেশি পছন্দ করে তাই লেবু গাছ থাকা প্রত্যেকের বাড়িতে জরুরী আমি মনে করি।নাজমা আপার ছাদে অনেকগুলো লেবু গাছ ছিলো সেদিন কাজগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠেছিলো দেখে মনে হচ্ছিলো লেবু ফুলের রাজ্যে চলে এসেছি।এটি দেখতে যেমন চমৎকার ঠিক ততোটাই মোহনীয়।
ফটোগ্রাফি-২
ছাদে অনেক প্রকারের মরিচ গাছ ছিলো প্রতিটি গাছে এতো পরিমান মরিচ ধরতো মনে হয় একদিন মরিচ তুললে কম করে হলেও ৫ কেজি হবে।আমার মনে হয় না নাজমা আপা কখনোই মরিচ খেতে পেরেছিলো!কিছু দুষ্ট ভাড়াটিয়া কখন তুলে খেতো আমরা কেউ টেরই পেতাম না।ছাদে গিয়ে শুধু দেখতাম আর মনে মনে ভাবতাম একদিন একটা মরিচ তুলে গরম ভাতের সাথে খেয়ে দেখবো গাছের টাটকা মরিচ খেতে কেমন লাগে! ওই ভাবনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলো কিন্তু কখনো একদিনও ছিঁড়ে খেতে পারিনি।
ফটোগ্রাফি-৩
সফেদা এটি খুবই পরিচিত একটি ফল আর এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জেনে থাকি।খেতেও খুবই চমৎকার আর যদি হয় নিজের গাছের তাহলে তো কোনো কথাই নেই।সফেদা খেতে আমি খুবই ভালোবাসি এর ঘ্রাণ টা আমাকে খুবই ভালো লাগে।যদিও কখনো গাছ থেকে ছিড়ে খাওয়ার মত সাহস ছিলো না তবে একদিন কেয়ারটেকার ভাইকে বলেছিলাম যে সফেদা খেতে আমি খুবই পছন্দ করি।এই কথা শুনে একদিন দেখি ভুট্টু ভাই ৫-৬ টা সফেদা নিয়ে এসে আমাকে দিচ্ছে বলে দিদি এগুলো আপনি ঘরে রেখে পাকলে খাবেন।আমি তো খুবই লজ্জা পাচ্ছিলাম বাড়িওয়ালীর গাছের ফল খেতে কেমন একটা লাগছিলো যে উনি খেতে পারেনা আমরা খাচ্ছি এটা কেমন দেখায়!তারপর পছন্দের ফল বলে কথা তাই আর লোভ সামলাতে পারলাম না নিয়েই নিলাম।
ফটোগ্রাফি-৪
ফাল্গুন চৈত্র মাসে চারোদিকে আমের মুকুলে গাছে ভরে ওঠে এর সুঘ্রান মন মাতিয়ে তোলে,এই দৃশ্য গুলো সকলেরই কম বেশি জানা।নাজমা আপার ছাদে অনেকগুলো আমগাছ ছিলো এবং সেগুলো খুবই সুস্বাদু।আমের সময় নাজমা আপা আসলে কাঁচা আম কেটে ছাদে বসে সবাই খাওয়া হতো এটা বেশ কয়েকবার খেয়েছি।প্রতিটি আম গাছের আম খুবই সুস্বাদু।
ফটোগ্রাফি-৫
ছাদে অনেকগুলো মালটা গাছ ছিলো,মালটা গুলো এতোটাই বড় ছিলো দেখে মনে হতো ঠিক জাম্বুরার মতো। খেতে কি রকম তা বলতে পারবো না কারণ কখনো খাওয়া হয়নি শুধুই দেখেই গেছি।😅
এই ছিলো আমার আজকের ফটোগ্রাফি পোস্ট।আশাকরি আমার আজকের পোস্ট টি আপনাদের ভালো লেগেছে!সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
0.00 SBD,
1.24 STEEM,
1.24 SP
আপনি দেখছি খুব চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। নাজমা আপুর বাসা থাকতে আপনি ফটোগ্রাফি গুলো করেছেন। আসলে বাসার ছাদের উপর যদি বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগানো হয় দেখতে বেশ ভালো লাগে। তবে আপনার সবগুলো ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর করে বর্ণনা দিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আন্টি আপনার নাজমা আপার ছাদ বাগান থেকে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি দারুণভাবে ক্যাপচার করেছেন। শখ আর ইচ্ছা গুলো আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আন্টি।
ছাদের মধ্যে এত সুন্দর গাছ। লেবু ও মরিচ ফুল গুলো ভীষন সুন্দর লাগছে। লেবু ফুল গুলো প্রথমে বেলি ফুল ভেবেছিলাম,হা হা হা। বেশি সুন্দর লাগছে। তাই ভুল করেছি। ধন্যবাদ।
লেবু ফুল আর মাল্টা ফুল কিন্তু অনেকটা একই রকম। লেবু ভাতের সাথে মেখে খেতে আসলেই ভালো লাগে। লেবু ফুলের ফটোগ্রাফি দেখে খুবই চমৎকার লাগলো। অনেক ফুল ফুটেছে দেখছি। মরিচের ফুল দেখে মনে হচ্ছে এই গাছে বেগুনি রংয়ের মরিচ হয়। এরকম একটা গাছ আমাদের ছাদেও ছিল। ছাদ বাগানের পাশাপাশি বাচ্চাদের খেলাধুলার জায়গাও রেখেছে। অনেকে ছাদ বাগান করলে খেলাধুলা এলাও করে না। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।
আসলে সৌখিন মানুষদের শখের কথা বলে লাভ নেই। কারণ তারা যদি সাধ্য থাকে তখন নিজের ইচ্ছে মত মনের মত সবকিছুই সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে পারে। তবে আপনার ভাস্যমতে নাজমা আপা কিন্তু বেশ ভালোই বন্ধুত্বসুলভ মানুষ বলেই মনে হচ্ছে। তার এই ছাদ বাগানে এত সুন্দর কিছু ফল ফুল রয়েছে যা দেখে ভালো লাগছে।
আসলে এখন পর্যন্ত কোন দিন সফেদা ফল খাওয়া হয়নি, আপনার শেয়ার করা সফেদা ফলের ফটোগ্রাফী টি অসাধারণ হয়েছে আপু। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে শখের ছাদ বাগানের কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। বিশেষ করে আপনার শেয়ার করা আমের মুকুলের ফটোগ্রাফী গুলো একটু বেশি ভালো লেগেছে।
মানুষ মাত্রই শখ থাকে এবং একেক জনার একেক রকমের সখ থাকে।আপনার আগের বাসার মালকিন সত্যি সৌখিন। খুবই সুন্দর সুন্দর গাছ লাগিয়েছেন ছাদে। গাঢ় গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক যত্নে বেড়ে তুলেছে ফলনও বেশ হয়েছে চোখে পড়ার মতো।ধন্যবাদ সুন্দর ফটোগ্রাফি পোস্ট টি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
এখন আমাদের এই সমস্ত শহরগুলোতে বেশি লক্ষ্য করা যায় ছাদে সুন্দর সুন্দর বাগান তৈরি করে থাকেন। যেখানে অনেক রকম ফলের গাছ ফুলের গাছ লক্ষ্য করলে দেখা যায়। এটা কিন্তু আমাদের সকলের জন্য ভালো একটা উদ্যোগ এবং ফল খাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করা। আপনি ফটোগ্রাফি গুলো সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন তাই আজকে দেখাতে পারলেন এটা কিন্তু আমাদের সবার জন্য একটা নতুন উদ্যোগ এবং ভালোলাগার পোস্ট। আমার শখ রয়েছে গাংনীর বাসাতে ছাদের উপর এমন অনেক গাছ তৈরি করা।