মুলা’র পাকোড়া
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজ নতুন একটি নতুন রেসিপি নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।আশা করি আমার আজকের রেসিপিটি আপনাদের ভালো লাগবে।
মুলা একটি শীতকালীন সবজি। পছন্দ এবং অপছন্দ দুই ধরনের তালিকাতেই মুলাকে দেখা যায়। অর্থাৎ অনেকে মুলা খেতে পছন্দ করেন, আবার অনেকেই এটি খেতে চান না। তবে মুলা একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি, যা সুস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।মুলা আমার খুবই পছন্দের একটি সবজি।আমার হাসবেন্ড ছোট মেয়ের মুল্ খুবই পছন্দ কিন্তু বড় মেয়ে এটা খেতে একদম পছন্দ করে না এমনকি সে মুলার গন্ধ পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না।আজ আমি মুলা’র পাকোড়া বানিয়ে ওর সামনে দিয়েছি খাওয়ার জন্য প্রথমে জিজ্ঞেস করলো কি এটা?তখন আমি শুধু বললাম কি সেটা জানার দরকার নেই তোমাকে খেতে দিয়েছি তুমি খেয়ে বলো কেমন হয়েছে?প্রথম একটা খেয়ে বলে এটা খুবই টেস্টি হয়েছে কিন্তু কি দিয়ে তৈরি সেটা বুঝতে পারছি না!তারপর এক এক করে বেশ কয়েকটা পাকোড়া খেয়ে নিল আর খুবই প্রশংসা করলো।তখন আমি হাসতে হাসতে বললাম এটা তোমার সবচেয়ে অপছন্দের মুলা'র পাকোড়া,মেয়ে শুনে তো একেবারে অবাক!বলে একটুও বুঝতে পারিনি এটা মুলা দিয়ে তৈরি করা পাকোড়া খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে আর একটুও মুলার গন্ধ পাচ্ছি না এটা কি করে সম্ভব!!পরে আমিও একটা খেয়ে দেখলাম সত্যিই কারো বোঝার সাধ্য নেই যে এটা মুলা দিয়ে তৈরি করা পাকোড়া অসম্ভব সুন্দর হয়েছে খেতে।তাই ভাবলাম এই সুস্বাদু মুলা'র পাকোড়া রেসিপিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
চলুন তাহলে মুলা'র পাকোড়া রেসিপি টি জেনে নেওয়া যাক
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
মুলা | ১টা |
পেঁয়াজ কুচি | ১ কাপ |
কাঁচামরিচ কুচি | ১ চা চামচ |
জিরাগুঁড়া | ১ চা চামচ |
মরিচের গুঁড়া | হাফ চা চামচ |
লবণ | স্বাদমতো |
হলুদগুঁড়া | পরিমাণমতো |
তেল | পরিমাণমতো |
ময়দা | ১ কাপ |
বেসন | ১ টেবিল চামচ |
প্রথমে মুলার খোসা ছাড়িয়ে নিয়েছি,তারপর কুচি কুচি করে কেটে নিয়েছি।
এবার কেটে রাখা মুলার মধ্যে সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে মেখে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিয়েছি।
মিনিট দশেক পর পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে হাত দিয়ে চিপে চিপে মূলা থেকে জল ঝরিয়ে নিয়েছি।এতে করে মুলার যে গন্ধ থাকে,সেই গন্ধটা অনেকটাই কমে যাবে।
এবার গুঁড়া মসলা কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে স্বাদমতো লবণ পরিমাণ মতো হলুদগুঁড়া দিয়ে মুলাগুলো খুব ভালোভাবে মেখে নিয়েছি।

এবার পরিমাণ মতো ময়দা ও বেসন দিয়ে খুব ভালোভাবে মুলা গুলো মেখে নিয়েছি।আমি এখানে চালের গুঁড়া ব্যবহার করিনি চালের গুঁড়া ব্যবহার করলে পাকড়াগুলো অনেক বেশি শক্ত হয়ে যায়।তাই আমি বেশিরভাগ সময় ময়দা দিয়েই করার চেষ্টা করি তাতে করে গরম গরম খেলে অনেক মুচমুচে হয়।তবে ঠান্ডা হলে একদম নরম হয়ে যায় তাই গরম গরম খেতে হয় তাতে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে।
এবার পেঁয়াজ কুচিগুলো দিয়ে খুব ভালোভাবে মেখে ছোট ছোট পাকোড়ার আকারে তৈরি করে নিয়েছি সবগুলো।
এবার কড়াইয়ে পরিমাণ মতো তেল দিয়েছি তেল হালকা গরম হয়ে আসলে তার মধ্যে একে একে পাকোড়া গুলো ছেড়ে দিয়েছি।
পাকোড়াগুলো তেলের মধ্যে দেওয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এক পাশে উল্টিয়ে দিয়েছি।তারপর কিছুক্ষণ ভেজে নিয়ে আবার অপরপাশে উল্টিয়ে দিয়েছি।এভাবে অল্প আঁচে বেশ কিছুক্ষণ ধরে পাকড়াগুলো ভেজে নিয়েছি।পাকোড়া গুলো যখন বাদামি কালার হয়ে আসছে তখন তেল ছেঁকে তুলে নিয়েছি।

"পরিবেশন"
আজ এ পর্যন্তই।আবার দেখা হবে পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো রেসিপি নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মুলা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে এভাবে পাকোড়া তৈরি করে কখনো খাওয়া হয়নি। ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। রেসিপিটি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। এভাবে একদিন ট্রাই করে দেখব। ধন্যবাদ আপনাকে মজাদার একটি রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।
সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপু মুলা আমার কাছে মাঝে মাঝে ভালো লাগে আবার মাঝে মাঝে ভালো লাগেনা। তবে এভাবে স্পেশাল মুলার পাকোড়া তৈরি করলে কিন্তু দারুন হয়। মুলা আপনার পরিবারে আপনার বড় মেয়ে বাদে সবাই পছন্দ করে জেনে ভালো লাগলো। খুবই সুন্দর একটি রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপু।
মাঝে মাঝে খাবারের ভিন্নতা আনলে তখন সবধরনের খাবারই ভালো লাগে।ধন্যবাদ।
মজার মজার পকোড়া কার না পছন্দের। আমি পকোড়া খেতে এত পছন্দ করি যে কি বলবো আর। দেখলেই ইচ্ছে করে সাথে সাথে খেয়ে ফেলি। মাঝেমধ্যে কিন্তু এই ধরনের খাবারগুলো খেতে একটু বেশি ভালো লাগে। মনে তো হচ্ছে, এই রেসিপিটা বেশ জমিয়ে খেয়েছিলেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত লোভনীয় একটা রেসিপি সুন্দর করে সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনি যে ভোজনরসিক মানুষ তা জানি।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
এইভাবে আলুর পকোড়া করে খেয়েছি কিন্তু মুলোর পকোড়া যে হয় তা আমার জানাই ছিল না। দেখি একবার বাড়িতে ট্রাই করে দেখব। এত লোভনীয় সব খাবারের রেসিপি দেখে আর সেগুলো রান্না করে করে খাই যার ফলে ওজন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে এরপর মনে হচ্ছে বাড়ির দরজা কাটতে হবে নইলে আর ঢুকতেই পারব না। তুমি তো খুব সুন্দর রান্না করো। তোমার মুখটাই তো একদম লক্ষ্মীর মত। স্নিগ্ধ।
খাবার খেতে পারলে খুবই ভালো মোটা না হয় একটু হলে তাতে কোনো সমস্যা নাই শুধুমাত্র দাদাবাবুর একটু খরচ বাড়বে দরজা কাটতে।😁তো প্রশংসা শুনে খুবই লজ্জা পেলুম🤭 অনেক অনেক ধন্যবাদ বন্ধু।
সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটা রেসিপি তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। এই জিনিস দিয়ে পাকোড়া এর আগে আমি কোনদিন কাউকে তৈরি করতে দেখিনি। একদিন খেয়ে দেখতে হবে কেমন সুস্বাদু হয়।
অবশ্যই ভাইয়া খেয়ে দেখতে পারেন,আশাকরি খেতে খুবই ভালো লাগবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
কত রকমের পাকোড়া খেয়েছি তবে কখনো মুলার পাকোড়া খাই নি। আপনার মুলা’র পাকোড়া তৈরি বেশ দুর্দান্ত হয়েছে আপু। দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে। আসলে গরম গরম পাকোড়া খেতে খুব ভালো লাগে। পাকোড়া তৈরি প্রক্রিয়া বেশ সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
জ্বি ভাইয়া খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
যাক অবশেষে মুলার পাকোড়া রেসিপি টাও দেখতে পেলাম। তবে খেতে খুবই ভালো লাগবে সেটা আমি দেখে বুঝতে পারছি। অনেক ইউনিক একটি রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করলেন ভালো লেগেছে দেখে। নিশ্চয়ই খেতে অনেক মুচমুচে হয়েছিল আপু তাই না।
হ্যাঁ আপু মুলার সবকিছুই দেখা হলো..😁সত্যিই খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিলো।ধন্যবাদ।
পাকোড়া খেতে আমার কাছে কিন্তু খুব ভালো লাগে। আজকে আপনি মুলার মজার পাকোড়া রেসিপি করেছেন। তবে অনেকে মুলা খেতে পছন্দ করে আবার অনেকে মুলা তো পছন্দ করে না। কারণ মুলা মধ্যে আলাদা একটা গন্ধ আছে এই কারণে। ধন্যবাদ আপনাকে মুলার পাকোড়া রেসিপি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।