আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-৬৪||রুই মাছের বিরিয়ানী।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
আজ হাজির হয়ে গেলাম ভোজন প্রিয় মানুষদের লোভ লাগাতে,হাহাহা।ছবি দেখে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন। দেখতে যেমন লোভনীয় ঠিক তেমনই খেতে মজার। এত্ত মজা হয়েছিল যে আমার হাজব্যন্ড বলল এতো কম করে তৈরি করলাম কেন। আরেকটু বেশি করে তৈরি করলে তো আরও খেতে পারতো।আসলে সেদিন হঠাৎ করেই এই রেসিপিটা তৈরি করেছিলাম। কারণ বাসায় সবকিছুই ছিল আর সন্ধ্যার পর মনে পড়লো এটা দিয়ে কিছু করে ফেলি।
আমরা কক্সবাজার আসার আগেই এটা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাসায়ই পৌঁছাতে পারিনি। তবে ভাবলাম এখন একটু সময় আছে হাতে তাই আজকেই পোস্টটা করে ফেলি। মূলত কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্যই এই রুই মাছের বিরিয়ানী রান্না করেছি। সচরাচর মাংস দিয়েই তো বিরিয়ানী রান্না করা হয়। কিন্তু এভাবে মাছের বিরিয়ানী কেউই রান্না করে না। আমি তো এটা প্রথমবার তৈরি করেছি।এটা খেতে এত মজার হয়েছে যেটা বললে হয়তো বুঝবেন না।একদম ঘরোয়া কিছু মসলায় এই বিরিয়ানী রান্না করেছি। এই মসলাগুলো দেয়ার কারণে এক্সট্রাভাবে বিরিয়ানীর কোনো মসলা ব্যবহার করতে হয় নি।এই মসলাগুলোতেই সেই বিরিয়ানীর ফ্লেভার চলে এসেছে।
মাছের বিভিন্নরকম রান্না আছে। কিন্তু আমি এটাকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।কারণ আমি রান্নাগুলো একটু ইউনিকভাবে করতে পছন্দ করি। রুই মাছটা বেশ বড় সাইজের ছিল, এজন্যই খেতে বেশি মজা লেগেছে। জয়িত্রী, কালো এলাচ এই দুটো উপাদানের সাথে বাকি গোটা মসলাগুলো একদম বিরিয়ানীর ফ্লেভার এনেছে। আমি তো এই মাছের বিরিয়ানীর ফ্যান হয়ে গেলাম। আপনারা যদি কেউ এভাবে ট্রাই করেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনারাও এই বিরিয়ানীর ভক্ত হয়ে যাবেন।বিরিয়ানী তো অনেক খেয়েছেন,এভাবে একবার মাছের বিরিয়ানী খেয়ে দেখুন কেমন লাগে। যাইহোক কথা আর না বাড়িয়ে শুরু করে দেই রন্ধনপ্রণালী।
আজকের রেসিপির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ |
---|
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
রুই মাছ | ৫পিস |
পোলাওয়ের চাল | দেড় কাপ |
আদাবাটা | ১চা চামচ |
রসুনবাটা | ২ চা চামচ |
পেঁয়াজকুচি | ১ কাপ |
কাঁচামরিচ | ১০টি এ |
আলুকিউব | ১টি |
গোটা গোলমরিচ | ১/২ চা চামচ |
লবঙ্গ | ৫/৬টি |
এলাচ | ৪/৫ টি |
কালো এলাচ | ১টি |
জয়িত্রী | ১ টুকরো |
দারচিনি | ছোট ২টুকরো |
লবণ | দেড় চা চামচ |
তরল দুধ | দেড় কাপ |
তেল | ১/৩ কাপ |
প্রথম ধাপ |
---|
প্রথমেই একটি কড়াইতে ১/৩ কাপ পরিমাণ তেল দিয়ে দিলাম।তারপর গোটা মসলাগুলো দিয়ে দিলাম। এগুলো হালকা করে ভেজে নিলাম লো ফ্লেমে।
দ্বিতীয় ধাপ |
---|
এখন দিয়ে দিলাম পেঁয়াজকুচি। কিছুক্ষণ ভেজে নিলাম। বেশ কিছুক্ষণ ভেজে হালকা ব্রাউন কালার করে নিলাম।
তৃতীয় ধাপ |
---|
এই ধাপে কয়েকটা কাঁচামরিচ ফালি করে কেটে দিয়ে দিলাম।আরও কিছুক্ষণ ধরে ভেজে নিলাম।
চতুর্থ ধাপ |
---|
পেঁয়াজ বেরেস্তা হওয়ার আগ মুহূর্তে দিয়ে দিলাম মাছের পিসগুলো।এক এক করে ৫পিস মাছ ফাঁকা করে দিয়ে দিলাম।
পঞ্চম ধাপ |
---|
এখন দিয়ে দিলাম আদা বাটা আর রসুনবাটা।এগুলো দেয়ার পর মাছের সাথে মিশিয়ে উলট পালট করে ভেজে নিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ |
---|
এই ধাপে কিউব করে রাখা আলু দিয়ে মাছের সাথে কষিয়ে নিলাম।৫মিনিট পর দিয়ে দিলাম আগে থেকে জ্বাল দেয়া তরল দুধ। ১ কাপ তরল দুধ দিয়েই রান্না করলাম।
সপ্তম ধাপ |
---|
এখন দিয়ে দিলাম ১/২ চা চামচ লবণ।তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রান্না করে নিলাম।
অষ্টম ধাপ |
---|
ঝোল শুকিয়ে এলে মাছের পিস গুলো আলতো করে তুলে নিলাম।
নবম ধাপ |
---|
এখন আলুসহ ঝোলের মধ্যে দিয়ে দিলাম ধুয়ে রাখা পোলাওয়ের চাল। তারপর ভালোভাবে ঝোলের সাথে মিশিয়ে ভেজে নিলাম ৩ মিনিটের মত।
দশম ধাপ |
---|
এই পর্যায়ে ২ কাপ গরম পানি আর ১ কাপ তরল দুধ দিয়ে দিলাম।ভালোভাবে মিশিয়ে ৪টা গোটা কাঁচামরিচ দিয়ে দিলাম।এভাবে পোলাও রান্না হওয়া পর্যন্ত রান্না করলাম।
একাদশ ধাপ |
---|
বেশ কিছুক্ষণ রান্না করার পর ঝোল শুকিয়ে এলো। এখন আমি রান্না করা মাছ দিয়ে দিলাম।
দ্বাদশ ধাপ |
---|
এখন দিয়ে দিলাম পেঁয়াজ বেরেস্তা। তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দমে দিলাম ১০মিনিট। এভাবে রান্না হয়ে গেল মজাদার রুই মাছের বিরিয়ানী।
পরিবেশন |
---|
আজকের রেসিপিটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।সবার মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
রুই মাছের বিরিয়ানী রেসিপি দারুন হয়েছে আপু। ইলিশ মাছের বিরিয়ানী খেয়েছি কিন্তু রুই মাছের বিরিয়ানী কখনো খাওয়া হয়নি। দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনার রেসিপি একদম ইউনিক লেগেছে আপু।
রুই মাছের বিরিয়ানিটা অনেক মজা হয়েছিল আপু। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে শুভকামনা জানাই। খুব সুন্দরভাবে বিরিয়ানি বানিয়েছেন রুই মাছ দিয়ে। বানানোর পদ্ধতি দেখে তো মনে হচ্ছে বেশ ভালই হয়েছিল খেতে। মাছের রেসিপি প্রতিযোগিতার ফলে অনেক ধরনের রান্না দেখতে পাওয়ার সুযোগ পেলাম।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। মাছের বিরিয়ানিটা আসলেই বেশ মজা হয়েছিল।
প্রথমে আপনাকে জানাই অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য। আজকে আপনি আমাদের মাঝে বেশ দারুন ভাবে রান্নার কার্যক্রম সম্পন্ন করে দেখিয়ে। আপনার এই মাছ রান্না দেখি আমি অনেক অনেক খুশি হয়ে। আশা করি অনেক অনেক সুস্বাদু হয়েছে।
জি ভাইয়া আসলেই সুস্বাদু হয়েছিল এই মাছের বিরিয়ানিটা, ধন্যবাদ। তবে আপনার কমেন্টটা একটু দেখবেন।
জাস্ট ওয়াও আপু আপনি সম্পূর্ণ্য নতুন আঙ্গিকে প্রতিযোগিতা-৬৪ রুই মাছের বিরিয়ানী নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। যা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আসলে আপনার প্রতিযোগিতা মানেই নতুন কিছু শেখার এবং দেখার। জীবনে অনেক ধরনের বিয়ানি খেয়েছি কিন্তুু রুই মাছ দিয়ে কখনো বিরানি খাইনি। আপনার এই রেসিপি দেখে শিখে নিলাম পরবর্তীতে তৈরি করে খাব ইনশাআল্লাহ। তাছাড়া আপনার রন্ধন প্রণালী এবং পরিবেশন দেখে মনে হচ্ছে রেসিপিটা খুবই সুস্বাদু হয়েছিল। এত সুন্দর একটি ইউনিক রেসিপি " রুই মাছের বিরিয়ানী " আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমি চেষ্টা করি ইউনিক ভাবে আপনাদের মাঝে কিছু উপস্থাপন করার জন্য।তবে আপনার সুন্দর সুন্দর মন্তব্য গুলো দেখলে মন ভরে যায়, ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনি প্রতিযোগিতার জন্য একদম ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। মাছ দিয়ে এভাবে বিরিয়ানি তৈরি করা যায় সত্যিই জানা ছিল না। আপনার এমন লোভনীয় রেসিপি দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার উপস্থাপনা দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হবে। রুই মাছ আমার খুব পছন্দের আর সেই মাছ দিয়ে যেহেতু রান্না করা হয়েছে তাহলে নিশ্চয়ই খেতে সুস্বাদু হবে। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ আপু মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
জি আপু আমিও সেদিন প্রথম তৈরি করেছিলাম। খেতে অনেক বেশি মজা হয়েছিল। একদিন ট্রাই করে দেখতে পারেন।
বেশ ইউনিক একটা রেসিপি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন আপু। একদম ভিন্ন ধরনের একটা রেসিপি শেয়ার করলেন। মাছ দিয়ে বিরিয়ানি তৈরি করার কথা কখনো চিন্তা করিনি। দেখে মনে হচ্ছে খেতে নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু হয়েছে। ভিন্ন ধরনের একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি মজার ছিল আপু। কখনো যদি সুযোগ পান তাহলে ট্রাই করে দেখবেন।
ঠিক বলেছেন মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করা হয় কিন্তুু মাছ দিয়ে বিরিয়ানি সত্যি ইউনিক রেসিপি।খেতে কেমন হয়েছে নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু হয়েছে খেতে।ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ও সুস্বাদু রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
অনেক সুস্বাদু হয়েছে আপু। কখনো এভাবে চেষ্টা করে দেখবেন ভালো লাগবে আশা করি।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। সুন্দরভাবে এই নতুন একটা রেসিপি তৈরি করেছেন। এভাবে দেখতে পেয়ে খেতে ইচ্ছা করলো। তাই ধাপগুলো দেখে ভালোভাবে শিখে নিলাম।
অবশ্যই ভাইয়া এটা একদম সহজেই কিন্তু তৈরি করা যায়। একদিন তৈরি করে দেখবেন।
আপনার অংশগ্রহণ টা দেখেই তো আমার অনেক ভালো লেগেছে। রুই মাছের বিরিয়ানি তৈরি করলেন দেখে খুব লোভ লেগে গেল এই দুপুরবেলায়। দারুন একটা রেসিপি তৈরি করে অংশগ্রহণ করলেন এই প্রতিযোগিতায়। দেখেই তো বুঝতে পারছি এই বিরিয়ানি টা দারুন মজা করে খেয়েছেন। আমার জন্য কিছু বিরিয়ানি পাঠিয়ে দিতেন। দেখেই তো খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। আজকে যেহেতু শিখে নিয়েছি একদিন অবশ্যই তৈরি করবো।
আরে আপু আমাদের জন্য তো কম হয়ে গিয়েছিল, কিভাবে পাঠাবো। আপনার ভাই অনেকটাই খেয়ে ফেলেছে হা হা।