আম গাছ থেকে পেড়ে বিভিন্ন জাতের পাকা মিষ্টি আম খাওয়ার অনুভূতি//পর্ব-০২।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শুক্রবার। ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20240530_184647_319.jpg



আম গাছ থেকে আপেল জাতের আম অনেকগুলোই পেড়েছিলাম। বিশেষ করে যে আমগুলো একেবারেই আপেলের মত রং ধারণ করেছে ঠিক সেই আমগুলোই গাছ থেকে পেড়েছিলাম। আর অল্প পাকা এবং সবুজ রঙের আমগুলো গাছেই রেখে দিয়েছিলাম, যাতে অন্য সময় গাছে উঠে পাড়া যায়। আপেল আম পেড়ে গাছ থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আমার কয়েকজন ভাবি এসেছিল গাছ পাকা আপেল আম খাওয়ার জন্য। আম গাছ থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আমার একজন ভাবি এসে আমার হাত থেকে আপেল আমের ব্যাগটি নিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি আপেল আমের ব্যাগটি দিয়েছিলাম না। বরং আমি নিজে হাতে তাদের খাওয়ার জন্য কয়েকটা গাছ পাকা আম দিয়েছিলাম। বুঝতেই পারছেন, ভাবীর হাতে যদি গাছ পাকা আপেল আমের ব্যাগ চলে যায়--- তাহলে কি অবস্থা হবে। যাহোক প্রথম দিন আম গাছ থেকে আপেল আম পাড়ার কয়েকদিন পরে মধু আম গাছে উঠেছিলাম গাছ পাকা মধু আম পাড়তে।

IMG_20240530_182713_984.jpg

IMG_20240530_184600_579.jpg

IMG_20240530_184726_013.jpg

IMG_20240530_184912_186.jpg



আমাদের মধু আম গাছটি হলো পুরো আঁটি আমের জাত। অর্থাৎ আমাদের মধু আম গাছটি কলম করা জাতের নয়। এক কথায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রজাতির আম। এই মধু আম গাছটি লাগিয়েছিল আমার আব্বা। আব্বার মুখ থেকে শুনেছি, আমার বয়স যখন ৬ বছর হয়েছিল ঠিক সেই সময় বর্ষার মৌসুমে আমার এক চাচার নার্সারি থেকে আব্বা এই গাছটি এনে আমাদের বাড়ির পাশে লাগিয়েছিল। যাহোক এই মধু আম গাছে প্রত্যেক বছরই মোটামুটি অনেক পরিমাণে আম ধরে। গতবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালেও প্রচুর পরিমাণে আম এসেছিল। ২০২৪ সালে মধু আম গাছে এতটাই আম এসেছিল যে, বিনা ঝড়-বাতাসে একটি আমের ডাল ভেঙে পড়ে গিয়েছিল শুধুমাত্র আমের ভারিতে।
যাহোক মধু আম গাছে উঠেছিলাম গাছ পাকা মধু আম পাড়তে। মধু আম গাছে উঠেছিলাম ঠিক দুপুর বেলায়। আর ওই সময় এমনিতেই প্রচণ্ড পরিমাণ গরম পড়তো পাশাপাশি তীব্র রোদ ও তাপদহ ছিল। কিন্তু গাছ পাকা মধু আম খাওয়ার নেশায় প্রচন্ড গরম আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে সরাসরি আম গাছে উঠে পড়েছিলাম গাছ পাকা আম পাড়তে। মধু আম গাছে উঠেই এক্কেবারে হাতের কাছে একটা পাকা দেখতে পেয়েছিলাম। তারপরে সেই পাকা আমটি বোটা থেকে ছুড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার মায়ের কথা মনে হয়েছিল। কারণ ওই সময় আমার মা এবং আমার ছোট ভাই সুমন ঢাকাতে অবস্থান করেছিল। আপনার হয়তো অনেকেই জানেন যে, ওই সময় আমার মায়ের পাকস্থলীর পলিপ অপারেশন করানোর জন্য প্রায় দেড় মাস আমার মা এবং আমার ছোট ভাই ঢাকাতে ছিল।

IMG_20240611_135119_894.jpg


গাছ পাকা আমটি হাতে করে যখন মায়ের কথা ভাবছিলাম ঠিক সেই সময় গাছের উপর আমাকে দেখে আব্বা বেশ রাগান্বিত হয়ে একটু বকাবকি শুরু করেছিল। কিন্তু আমি আমার আব্বার কথায় কর্ণপাত না করে আব্বাকে বলেছিলাম এই গাছ পাকা আমটি খেতে থাকেন। তারপর গাছ পাকা আমটি হাতে পেয়ে আব্বা বকাবকি বন্ধ করেছিল এবং আমটি খেতে শুরু করেছিল। মধু আম গাছের গাছ পাকা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার বাবার মনটাও মধুতে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল, আমটি খাওয়া শেষ করে আব্বা বলেছিল," আজকে আর একটি আমও খেতে পারবো, এই একটি আম খেয়েই আমার ২ পয়েন্ট ডায়াবেটিস মনে হয় বেড়ে গেল।"

IMG_20240611_135113_875.jpg

IMG_20240611_134626_346.jpg


আসলে মধু আম গাছের প্রতিটি পাকা আম মধুর মতোই মিষ্টি ছিল। প্রতিটি পাকা আম মধুর মতো মিষ্টি বলেই একে মধু আম গাছ নাম দেয়া হয়েছে। আর এই নামটি দিয়েছে আমার আব্বা নিজেই। তাই আশপাশের সকল মানুষের নিকট এবং আমাদের নিকটতম আত্মীয়দের নিকট এই আমের গাছটি মধু আমের গাছ নামেই পরিচিত। মধু আম গাছের প্রত্যেকটি আম তুলনামূলক মধ্যম সাইজের হয়ে থাকে। যখন মধু আম গাছের আমগুলো পরিপুষ্ট হয়ে আম গাছে পাকতে শুরু করে তখন প্রত্যেকটি আমের শরীর পুরো হলুদ বর্ণ ধারণ করতে থাকে। কিন্তু মধু আম গাছের সবুজ বর্ণের আম পেড়ে যদি পাকানো হয় তাহলে সেই আমের মুখের অংশ খেতে কিছুটা মিষ্টি লাগে এবং বাকি সমস্ত অংশ খেতে খুবই টক লাগে।

প্রথম পর্বটি পড়ার লিংক





আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।

Vs68WyhR4ueWguiqU5CbbyMd2eBafmyPRcYVv3LiYRs71UXq9fEqpbeAVPzHYduBype2HWE8Nhc1iC2fZdQmNHV5MZTGyeziTZ2mg568ZW...TRTB4jvHeRQc9AcbRtSb6rm2Xqo2rYeYVjEqeuuVpyH6LQKRAsoHRV9mDWTjypFu24ubjoTGKhcaV6dUT5n1EMEH1zuX4ai8pTKqaj72GU2WNBjYQqPAWdorH.webp

3CQ5eBKFPEFNa39hevVYBjMk22F7hc9Vsydt2d7L2Mik9X6X5XDn6V5u2tLTr2dsMToGQfqzwYnDY8ogMD1htpwkujtTUMvzXtseYduURP...a2yyG8GVQx6vvxVcY336ZYj3d1d5xFEqrZQfZEEkYhcRGM7bHvVEvLzrZBLspwHUL8v47KTKKCzFN7fdJzGJWiSWwSgEqSH8vmS1Tf4XCi1NMQAzp92NNYJUm.webp

3CQ5eBKFPEFNa39hevVYBjMk22F7hc9Vsydt2d7L2Mik9X6X5XDn6V5u2tLTr2dsMToGQfqzwYnDY8ogMD1htpwkujtTUMg9fm14EJD7JS...9kW1phpAKWFLkmE1VGrDefyUSZAwCuEv6icMCdKv9voU5sGwvV245HKg49QLeF3D3vEQP6JLpeY5oBtowhu45zXzzwEsLVqCLLfLAfLvs6zj5CzULF56tRLsf.webp



Sort:  
 2 months ago 
 2 months ago 

আজকের কাজ সম্পন্ন।

Screenshot_20250117-203306.jpg

Screenshot_20250117-203146.jpg

Screenshot_20250117-203345.jpg

 2 months ago 

বেশ অনেক অনেক ভালো লাগলো আম পাড়ার সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করতে দেখে। আসলে সেই পুরাতন দিনের কথাগুলো পুনরায় মনে করলে খুব ভালো লাগে। আর আমাদের গাছের আমগুলো বেশ দারুন সুস্বাদু। তাই গাছ থেকে আম পাড়ার আগ্রহটাও বেশ বেশি থাকে।