আম্মুকে ট্রেনে উঠায় দিয়ে আসার অনুভূতি ||
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালোই আছি। আমি আজকে আরো একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছেন যে আমরা ঢাকায় ফ্যামিলি বাসা নিয়েছি। আমিও আম্মু যেদিন ট্রেনে করে ঢাকায় এসেছি অর্থাৎ এই মাসের এক তারিখে, সেটি নিয়েও একটি পোস্ট করেছিলাম তাছাড়াও ঢাকায় এসে বাসা চেঞ্জ করার অভিজ্ঞতা ও আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। এই মাসের ১ তারিখ থেকে আজ অব্ধি আম্মু আমাদের সাথে ছিলো। আজকে আম্মুকে ট্রেনে উঠায় দিয়ে আসলাম।তাই মনটা অনেক খারাপ। আজকে আমি আমার মাকে ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যেয়ে ট্রেনে উঠায় দেয়ার অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। তোর চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।
প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি আম্মু আমাদের সাথে ছিল। এখানে থেকে বাসা গুছিয়ে দিয়েছে অনেক চমৎকার ভাবে। গত পরশুদিন আমি আম্মুকে ট্রেনের টিকিট কেটে দেই চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে। ১৭ তারিখ অর্থাৎ আজকে বিকেল ৫'২৮ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে এই ট্রেনটির সময়। আজকে সকালে আমার ভার্সিটিতে ক্লাস ছিল ১১ টায়। আমার আজকে ভার্সিটি যাওয়ার মন ছিল না। কিন্তু প্রথম দুটি ক্লাসে ক্লাস টেস্ট থাকায় ভার্সিটি যেতে হয়েছিল। আমার এই সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয় এই মাসের তিন তারিখ থেকে। প্রায় প্রতিটি ক্লাস এই তিনটি করে ক্লাসে গিয়েছিল জন্য প্রতিটি কোর্সেরই ক্লাস টেস্ট চলছে।
ভার্সিটিতে আমার প্রথম ক্লাসটি ছেলে ফিজিক্স। ফিজিক্স ক্লাসে ম্যাম আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক পড়ায় এবং আমি খুবই গুরুত্ব সহকারে ক্লাসটিতে মনোযোগ দেই। আমার প্রথম ক্লাসটি ছিল সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। মাঝখানে এক ঘন্টা ২০ মিনিটের একটি গ্যাপ ছিল অর্থাৎ আবার পরবর্তী ক্লাসটি হলো দুপুর ১ টা ৫০ মিনিট থেকে বিকেল তিনটে দশ পর্যন্ত এবং এই ক্লাসেই আমার ক্লাস টেস্ট ছিল। ব্রেকটাইমে আমি ও আমার বন্ধুরা ভার্সিটির ক্যান্টিনে গিয়ে চিকেন খিচুড়ি খাই। এরপর ক্লাস টাইমে ক্লাসে চলে যাই। এরপর ম্যাম আমাদের কোশ্চেন ও খাতা দেয় এবং সবাই ক্লাস টেস্ট দেয়। আমাদের ভেক্টর কোর্সের ক্লাস টেস্ট ছিল আজকে। ক্লাস টেস্ট দিয়ে আমি ম্যামকে বলে বাসার দিকে রওনা দেই কারণ বাসায় এসে আমার আম্মুসহ বিমানবন্দ রেলওয়ে স্টেশনে যেতে হবে।
ভার্সিটি থেকে একটি রিক্সা নিয়ে আমি বাসার দিকে রওনা দেই। বিকেল ৩'৩০ বাজার আগেই আমি বাসায় উপস্থিত ছিলাম। আম্মু ততক্ষণে রেডি হয়েছিল। আমি বাসায় এসে দেখি আম্মু এস্টিমেটে পোস্ট করছে বসে বসে কারণ ট্রেনে পোস্ট করতে পারবে কিনা তাই আগেই পোস্টটি করে রাখছে। আম্মুর পোস্ট করা শেষ হলে আমরা চারটা বাজে কিছুক্ষণ আগে বাসা থেকে বের হই। আমি আম্মু ও ভাইয়া মিলে একটি সিএনজি করে সায়েদনগর থেকে একটি সিএনজি করে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
নতুন বাজার থেকে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে রোড প্রচুর জ্যাম থাকায় আমরা বসুন্ধরা বিটুমিন দিয়ে ৩০০ ফিট হয়ে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের দিকে যেতে থাকি। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে রাস্তার কাজ হচ্ছে তাই এই রোডে সব সময় জ্যাম লেগেই থাকে। তাই আমরা বিকল্প পথ বসুন্ধরা বিটুমিন দিয়ে ৩০০ ফিট হয়ে বিমানবন্দ রেলওয়ে স্টেশন যাই। এই রোডে জ্যাম না থাকায় আমরা খুব তাড়াতাড়ি বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে যাই।আমরা যখন বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাই তখন বিকেল ৪:৩০ বাজছিল অর্থাৎ আমাদের ট্রেন আরো এক ঘন্টা পরে আসার কথা।
বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে মানুষের প্রচুর ভিড় ছিল। আমি ভাইয়া ও আম্মু স্টেশনের একদিকে বসি। আমাদের ট্রেনটি ছিল চিলাহাটি এক্সপ্রেস, এই ট্রেনটি আসার আগে আরও তিন চারটি ট্রেন ছিল তাদের মধ্যে সুবর্ণ এক্সপ্রেস যমুনা এক্সপ্রেস ও ছিলো। একে একে এই ট্রেনগুলো তাদের যথাসময়ে স্টেশনে আসছিল। আমরা প্লাটফর্মে বসে বসেই তিনজন মিলে মাখা নিয়ে খেতে থাকি। রেলওয়ে স্টেশনের চানাচুর পাখাগুলো বেশ মজাদার হয়ে থাকে।
বিকেল ৫'৩০ মিনিটের কিছুক্ষণ পরেই চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি এক নম্বর প্লাটফর্মে অবতরণ করে। এবং চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটির বগি সাজানো ছিল সামনের দিক থেকে ক খ গ ঘ করে। আম্মু বগি ছিল ৬ নাম্বার বগি আমরা ঝ নাম্বার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ট্রেনটি স্টেশনে আসলে আমি ও ভাইয়া মিলে আম্মুকে সিটে বসিয়ে দেই এবং বিদায় জানাই। আমার মন খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এই কয়েকদিন আমি আম্মু ও ভাইয়া একসাথে ছিলাম দিনগুলো অনেক ভালো কেটেছে। এখনই আম্মুকে অনেক বেশি মিস করছি। এরপর আসার সময় আরেকটি সিএনজি করে ভাইয়া ও আমি বাসায় ফিরে আসি। তবে আজ মনটা খুব খারাপ আম্মু চলে গেল তাই।
আজকের মতো এখানেই। এতোক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে অন্য একটি ব্লগে ততক্ষণে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি আল হিদায়াতুল শিপু। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর একজন ছাত্র । আমি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি। আমি মাঝে মাঝে কবিতা ও লিখি। আমার লেখা কবিতা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা পত্র পত্রিকা এবং মেগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যকলি বইতেও আমার লেখা কবিতা রয়েছে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হ্যাঁ রেলস্টেশনে অনেক জ্যাম থাকে আবার ঢাকা শহরে তো প্রতি খাটে সব জায়গায় মানুষের ভিড়ে ও জ্যাম। সবকিছুর মধ্য দিয়ে আপনি আপনার আম্মাকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়েছেন এবং সেই অনুভূতি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন দেখে অনেক কিছু জানলাম এবং ভালো লাগলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে ভাই প্রিয় মানুষকে যখন বিদায় দেওয়া হয় তখন খুব খারাপ লাগে। চারদিকে শুধু শূন্যতা মনে হয়। বাসায় যখন মা থাকে তখন আলাদা আনন্দ অনুভব হয় মনের মধ্যে। আজ আপনার আম্মা চলে গেছে মন খারাপ হবে এইটা স্বাভাবিক ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। আপনার আম্মুকে ট্রেনে উঠায় দিয়ে আসার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আম্মু আবার আসবে তোমাদের বাসায় , নইলে তোমরাও যাবে আম্মুর কাছে। গতকাল তোমার আম্মুর পোস্টটি দেখেছিলাম আম্মুরও কত মন খারাপ করছে। আজ তোমারও মন খারাপ হচ্ছে দেখছি। এত মন খারাপ করতে নেই পড়াশোনার জন্য কাজের জন্য অনেককেই বাড়ির বাইরে থাকতে হয়৷
হুম দোয়া রেখো আমাদের জন্য।
তোমাদের ছেড়ে আসতে আমারও ভীষণ কষ্ট হয়েছে বাবা। কিন্তু প্রতিটি বাস্তব পরিস্থিতি আমাদের মেনে চলতে হবে। আমি বিশ্বাস করি তোমরা একদিন অনেক বড় হবে। আর সেদিন আমি মা হিসেবে সার্থক হব। মনে রাখবা তোমাদের দু ভাইয়ের সফলতাই আমার সার্থকতা।
দোয়া রেখো সবসময় আম্মু।