বন্ধুর দাদুভাইয়ের কুলখানী অনুষ্ঠানে। (১০% বেনিফিশিয়ারি @shy-fox এর জন্য)।
১৯ ফাল্গুন, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
৪ ই মার্চ ,২০২২সাল
কুলখানি (মজলিস) অনুষ্ঠানে
হ্যালো
![]() |
---|
আমাদের ধর্মে অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে একটা রীতির প্রচলন আছে যে কেউ যদি মারা যায়, তবে তার রুহের মাগফেরাতের জন্য বেশিরভাগ মুসলমানগন একটা মজলিসের আয়োজন করে। এবং এলাকাবাসী থেকে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয় সেই মজলিসে। এই রীতি অনুসারে আমার বন্ধুর দাদার মজলিসে ও আমরা উপস্থিত হয়েছিলাম। এবং শেষ রাত থেকে সেখানে কাজবাজ শুরু করার পরে প্রায় দুপুর দিকে রান্না-বান্না শেষ হয়ে যায়। একটা মজার ব্যাপার হলো এইসব কাজে গ্রামের সবাই মিলে অনেক হৈ-হুল্লোড় বা একত্র তার সাথে সব কাজ করে থাকে। এখানে ছোট-বড় সবাই মিলেমিশে অনেক সুন্দর ভাবে কাজ করে থাকে যা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।
![]() |
---|
এখানে রান্নার প্রক্রিয়া চলছে মজার ব্যাপার হলো রান্নার কাজে সবসময় বৃদ্ধ মানুষ গুলো জ্বালানির যে কাজগুলো পড়ানো হয় এই দায়িত্ব গুলো তাদের উপর বেশি থাকে। আর এখানে ব্যবহার করা হয় জ্বালানি টা যেন ভালভাবে জলে তার জন্য কাঠের গুড়া। সব থেকে মজার ব্যাপার যেটি হল গ্রামে আমাদের যারা সিনিয়র মানুষ অর্থাৎ দাদা বা নানা এমন ধরনের মানুষের সাথে মজা করে অনেক সময় কাঠের গুঁড়ো তাদের মাথায় মাখিয়ে দিয়ে আমরা দৌড়ানি দেই। এজন্য রান্নার সময় অনেক মজা হয় রান্নার যে কষ্ট এটা কখনোই আমাদের মনে হয় না। অর্থাৎ সমাজের মানুষ একত্রিত হয়ে বেশ আনন্দের সঙ্গেই এ কাজগুলো করা হয়ে থাকে।
![]() |
---|
এই জায়গা টিকে বলা হয় ভান্ডার খানা এখানে সবকিছু রান্না করে রাখা হয়। রান্না বান্না শেষ করে সকল ধরনের খাবার এখানে মজুদ করে রাখা হয় এবং রান্নার পূর্বের যে মশলাপাতি এবং রান্নার উপকরণ হলো সেখানে সেগুলো এখানে রাখা হয়। এবং রান্না করা হয় বড় বড় পাতিল যেগুলোকে আমাদের এলাকাতে সাসপেন বলা হয়। তরকারি রান্না শেষে সবগুলোর তরকারি সাসপেন্স এখানে জামায়াত করে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে দুইজন মিলে ধরে বাইরে নিয়ে গিয়েছিল এগুলো পরিবেশন করা হয় মানুষের মধ্যে। এই খাবারটি মানুষ খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করে থাকে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মজলিস বা কুলখানি অনুষ্ঠানের প্রচলনটা বেশি।
![]() |
---|
এখানে ভাত রান্না শেষে ভাতের যে মারটা থাকে এটাকে শুকিয়ে নেওয়ার জন্য নেটে সব গুলো বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। নেট টি এক জায়গায় বসিয়ে নিয়ে তার ওপরে সাসপেন এর ভাত ধেলে দেওয়া হয়। পুরো সাসপেন্স এর ভাত খেলে দেওয়ার পর সেখানে পানি দেয়া হয় যাতে পানির সঙ্গে ভাতের মাড় গুলো শুকিয়ে যায়। এবং এভাবে এবাদ গুলো কিছুক্ষণ সেখানে রেখে দেয়া হয় যাতে নেট এর উপরে রাখা ভাগ গুলো একেবারে শুকিয়ে যায়। এবং সেগুলো শুকিয়ে খাবার উপযোগী হলে এগুলো আবার ভান্ডার খানাতে রেখে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে ভাগ গুলোকে খাবার উপযোগী করে তোলা হয় এবং এখান থেকে পরিবেশন করা হয়।
![]() |
---|
সব ভাত এবং তরকারি প্রস্তুত করে এখানে রেখে দেওয়া হয়। আগেই বলেছিলাম এটা হচ্ছে ভান্ডারা খানা এবং এখানে সব রেখে দেয়া হয়। আমার এই ছবিটা আপনার দেখতে পারতেন কিছু ডিসে ভাত প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এবং এগুলো পরিবেশন করার উপযোগী করে তোলা হয়েছে এগুলো দিস দুইজন করে ধরে অন্যের মাঝে পরিবেশন করবে। এটি পরিবেশন করার আগে শেষ প্রস্তুতি সবকিছু প্রস্তুত করা হলে এখন শুধু বিতরনের অপেক্ষা।
![]() | ![]() |
---|
খাবার-দাবার পূর্বমুহূর্তে সবগুলো অতিথিদের একত্রিত হবে একসাথে বসতে দেয়া হয়। এবং তাদেরকে কেউ কেউ কলাপাতা আবার কেউ কেউ ওয়ান টাইম প্লেট এ খাবার বিতরণ করে থাকেন। এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে অনেক ছোট বাচ্চারা যারা ভাত অথবা তরকারি দিতে পারেনা তারা পানি নিয়ে বড় মানুষদের কে পানি খাওয়া। ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ইম্প্রেসিভ মনে হয়। কেননা মানুষকে পানি খাওয়ানো অনেক ভালো একটি কাজ বলে আমার কাছে মনে হয়।
বন্ধুরা আমরা মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করব। সব সময় অন্যের উপকারে আসার চেষ্টা করব। কেননা আমার কাছে মনে হয় এই জীবন আমাদের কিছুই নয়।
যেই জীবন আমাদের দম ফুড়ালেই নাই
আপনি যদি দুনিয়ার বুকে আমি দূরে থাকতে চান তাহলে একটি হলেও ভালো কাজ করে যান যার মাধ্যমে আপনি অন্যের মাঝে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন। সকলের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
Join the Discord Server for more Details
আমি @alomgirkabir জীবনের উদ্দেশ্যে হওয়া চাই অন্যের মাঝে বেচে থাকা এবং অন্যের মঙ্গল কামনা করা। তাহলেই মানব জীবন সফল। আমি মানবতার দেওয়াল ছুইতে পারিনি কিন্তু তার আদর্শ পড়েছি হৃদয় মাঝে লালন করতে। আমি জীবনের নিরাপত্তা খুজি না যদি তাই খুজতাম তাহলে মাতৃগর্ভেই থেকে যেতাম! তাই আমি মানবতা খুজি মানুষের মাঝে।
আসলে ভাই জীবনটা ক্ষণিকের আমরা জীবনে একটি আশা নিয়ে বেঁচে থাকি। সেই আশায় যেতে যেতে হঠাৎ একদিন জীবন শেষ হয়ে যাবে। যাইহোক পরিবেশন গুলি ভালো লাগলো। আপনারা সকলে মিলে একটি সুন্দর মুহূর্ত উদযাপন করেছেন এবং আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আমরাও দেখতে পেলাম। আপনার মাধ্যমে। বেশ ভালো লাগলো
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আমরাই দুই দিনের জীবনের মায়ায় কত কিনা করি। সবারই একদিন ওপারে যেতে হবে। হয়তো কারো আগে কারো পরে। আপনি খুব সুন্দর করে আপনার বন্ধুর দাদুর কুলখানিতে অংশগ্রহণ করেছেন। সুন্দর করে সবকিছু বর্ণনা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে আপনার পোস্টটি। শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
আপনার কাঙ্খিত মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
জীবনে সবাইকে একদিন মরতে হবে এবং কিছুদিনের জন্যই আমরা এই পৃথিবীতে রয়েছি। আমাদের সবার উচিত জীবনে এমন কোন কাজ করা যাতে আমরা মরে যাওয়ার পরেও সবাই মনে রাখে। যাইহোক ভাই আপনি বন্ধুর দাদুর কুলখানী অনুষ্ঠানে ছিলেন এবং অনেক কিছু ব্লক করতে পেরেছেন ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট করে আমাদের সবার মাঝে বিষয়টি শেয়ার করার জন্য।
আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইল।
এই অনুষ্ঠানগুলো শীতের দিনে হলে খেয়ে মজা পাওয়া যায়। আমি অনেক কুলখানির অনুষ্ঠানে গিয়েছি। একটা জিনিস অনেক লক্ষ্য করছি যে বাড়িতে কুলখানি হয় সেই ভাড়িতে বিয়ে বাড়ির মতো হাসাহাসি হয়। এটা খুবই দুঃখ জনক। আপনার পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো।
আসলেই এই ব্যাপার গুলো আমাদের একটু মেইনটেইন করে চলা উচিত। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমাদের সকলের একদিন চলে যেতে হবে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। কোন কিছুই সাথে নিয়ে যেতে পারবো না শুধু থাকবে আমাদের কর্ম। বহু লোকের সমাগম হয়েছে ছবিতে দেখলাম। মূহুর্ত গুলো নিরবতায় কেটেছে মনে হয়। ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকবেন।
এ ভাই এ জন্য আমাদের ভালো কাজ করতে হবে এবং অন্যকে ভাল কাজ করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
এই অনুষ্ঠানটি আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় মজলিস বলা হয়। মৃত্যু ব্যক্তির মারা যাওয়ার এক সপ্তাহের পর সাধারণত এই অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করা হয়। কুলখানি অনুষ্ঠানে গিয়ে আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার এই মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার আগামীর জন্য শুভকামনা রইল।