আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সকল প্রাণীদের মধ্যে আমরা সবার শ্রেষ্ঠ। এই শ্রেষ্ঠ জীব হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে। যে কারণেই মানুষ শ্রেষ্ঠ, মানুষের বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। মানুষের ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা রয়েছে। কোনটা ভালো কোনটা খারাপ এই বুদ্ধি শুধু মানুষেরই রয়েছে। মানুষের বুদ্ধি থাকার কারণেই যেন মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ কথা বলতে পারে, একে অপরের সাথে বুদ্ধি দিয়ে চলতে পারে। একে অপরকে সম্মান করতে পারে এবং আত্মসম্মানবোধ এবং সম্পর্কের বিবেক এর গভীরতা ও মানুষের জ্ঞান রয়েছে। যার কারণেই মানুষ সৃষ্টি সেরা। আর এই সৃষ্টির সেরা জীব হয়েও যখন মানুষ আত্মসম্মান এবং বুদ্ধিমত্তাহীনভাবে জীবন পরিচালনা করে, তখন যেন মানুষ আর মানুষ থাকে না। এই মানুষগুলোই তখন পশুর মতো হয়ে যায়।
মানুষের বিবেক এবং আত্মসম্মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যে মানুষের আত্মসম্মান এবং বিবেক থাকে না। যার মানুষত্ব বুদ্ধি নেই। সেই মানুষটা আর মানুষ থাকে না। আমাদের সমাজে এখন অনেক ধরনের খবর আমরা পাচ্ছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলেই দেখতে পাওয়া যায়, শুধু ধর্ষণ আর ধর্ষণ। আর এই ধর্ষণ গুলো এমন কিছু মানুষের সাথে হয়ে থাকে যেগুলো যেন কল্পনা করাই যায় না। মাত্র সাত বছর, পাঁচ বছর দুই বছর বাচ্চার সাথে অনেক বয়স্ক মানুষ যেন এই ধর্ষনের শিকার হচ্ছে। আসলে মানুষ সৃষ্টি সেরা জীব, তার বুদ্ধি রয়েছে এবং তার জ্ঞান রয়েছে। যদি মানুষের জ্ঞানী হয় তাহলে কিভাবে সাত বছর, পাঁচ বছর এবং দুই বছর বাচ্চাকে ধর্ষণ করার মন-মানসিকতা তার মাঝে তৈরি হয়। এটা কি মানুষ নাকি অন্য কিছু।
আমরা নিজের কাছেই আজ প্রশ্নবিদ্ধ আমি! আমরা কি আসলেই মানুষ? আমি কি সৃষ্টির সেরা জীব? যদি আমি সৃষ্টির সেরা জীব হয়, তাহলে আমার মধ্যে এরকম নোংরা চিন্তা ভাবনা এরকম পশুর মত আচরণ কিভাবে জন্ম নেয়। একটা দুই তিন বছরের বাচ্চাকে আমরা হত্যা করার মত পরিকল্পনা করি। আর এই হত্যাগুলো এতটাই নিকৃষ্টভাবে আমরা করি মানুষকে মানুষ মনে করি না। হত্যা করে বাথরুমে এবং কি ডাস্টবিনে আমরা ফেলে দেই। এটা কিভাবে সম্ভব, আমরা মানুষ আমাদের চিন্তার মধ্যে আসে কিভাবে। একজন মানুষকে আর একজন মানুষ হত্যা করে জঘন্যতম কাজ করে কিভাবে। আমাদের মাঝে এই চিন্তা গুলো আসে কেন,যদি আমরা সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে থাকি। তাহলে তো এই চিন্তা গুলো আমাদের মনের ভিতর কখনোই কল্পনাতেও আসার কথা নয়।
আজ প্রত্যেকটা দিন প্রত্যেকটা সময় যেন এই চিন্তাগুলো আমার মনের ভিতর তৈরি হচ্ছে। কিছুদিন আগে আমাদের সবার প্রিয় বোন আছিয়াকে নিয়ে অনেক নিউজ তো আমরা দেখলাম। এই নিউজটা সত্যিই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে, বলার ভাষা নেই। পুরো বাংলাদেশকে এই বিষয়টি কষ্ট দিয়েছে। আসলে মানুষের ভিতরে এই বিবেকটা কীভাবে জাগ্রত হয়, সেটা বলার ভাষায় পাচ্ছি না। এই আসিয়ার নিউজটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আমাদের সিরাজগঞ্জেই ঘটে গেল পাঁচ বছরের বাচ্চাকে ধর্ষণ। আসলে মানুষ কতটা নিকৃষ্ট হলে এই কাজগুলো করতে পারে। এই নিউজগুলো দেখলেই তো মনের ভিতর ধাক্কা দিয়ে ওঠে আমার।আর কিভাবে মানুষ হয়েও এই কাজগুলো করতে পারে, যে কাজগুলোর কথা কল্পনা করলেই তো মনের ভিতর মানুষত্ব বোধ জেগে ওঠার কথা।
আজ আমি প্রশ্নবিদ্ধ! আসলেই কি আমরা মানুষ হতে পেরেছি? নাকি আমরা শুধু নামেই মানুষ।সৃষ্টির সেরা জীবের ট্যাগ লাগিয়ে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি এই সমাজ মাঝে। আমরা মানুষ হয়েও মানুষ হতে পারলাম না। আমরা মানুষ হয়েও যেন পশুর মত আচরণ করে সমাজে বসবাস করছি। তাই আমি মনে করি আমরা যদি বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে চলি তাহলে সমাজ থেকে এই কাজ কল্পনাতেও আসবে না।আর আমাদের বিবেক রয়েছে আত্মসম্মান রয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা চলবো তাহলে আমরা মানুষ হতে পারব। আমরা এখনো মানুষ হয়েও মানুষ হতে পারিনি। শুধু নামেই মানুষ রয়েছি, তাই কাজে কর্মের মধ্যে আমাদের মানুষ মনে হয় না। তাইতো আমি আজ প্রশ্নবিদ্ধ! আমরা কি আসলেই মানুষ হতে পেরেছি? নাকি মানুষ হয়েও আমরা পশুর মতো এই সমাজে বেঁচে আছি।
এই লেখা আমাদের মনকে গভীরভাবে ভাবায়। সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার তকমা, যদি আমাদের মধ্যে বিবেক ও আত্মসম্মান না থাকে, তবে কীভাবে আমরা মানুষ হতে পারব? আজকাল যা ঘটছে, তা দেখে মনে হয় আমরা শুধু নামেই মানুষ, কিন্তু আমাদের কাজের মধ্যে পশুত্ব ফুটে উঠছে। সমাজে ঘটে চলা নৃশংসতা আর অমানবিক কাজগুলো যেন আমাদের মানুষের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আসলেই, আমাদের মাঝে যদি মানবিকতা, সম্মান এবং ভালোবাসা থাকে, তবে এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কল্পনাতেও আসবে না। মানুষের মতো জীবনে বাঁচতে, আমাদেরকে নিজেদের বিবেক ও বুদ্ধি দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.