ABB Contest-45| দুধ নারিকেল দিয়ে কচুর শাকের মজাদার রেসিপি।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।আজ আমি আপনাদের, দুধ নারিকেল দিয়ে কচু শাকের মজাদার রেসিপি সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন । আপনারা সকলে অবগত আছেন আমাদের কমিউনিটিতে শাকের মজাদার রেসিপি প্রতিযোগিতা চলছে। শাকের রেসিপি প্রতিযোগিতা দেখে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। প্রথমেই আমাদের প্রিয় হাফিজ ভাইয়াকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর শাকের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের শাক রান্না করে থাকি। শাকসবজি খেতে সবাই পছন্দ করে। যতোই মাছ মাংস থাকুক না কেন? কোন এক প্রকারের শাক রান্না না করলে ভালো লাগে না এটাই যেন বাঙাল স্বভাব। বিশেষ করে দুপুর বেলায় শাক না থাকলে খাবারের কেমন যেন পরিপূর্ণতা তৃপ্তি পায় না। খাবারের মেন্যুতে কোন এক প্রকারের শাক থাকলে তবেই খাবারের পরিপূর্ণ তৃপ্তি অনুভব করা যায়। শাকের প্রতিযোগিতা দেখে ভাবছি কি করা যায়? পরে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম তখন আম্মু বললো কচুর শাকের মজাদার রেসিপি তৈরি করা যাবে। তবে তার জন্য দুধ এবং নারিকেল প্রয়োজন। দুধ নারিকেল দিয়ে কচু শাকের রেসিপি আমার দাদু প্রায় তৈরি করতেন।
যদিও দাদুকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। তবে আম্মুর মুখে তার নানা রকম রেসিপি তৈরির কথা শুনে থাকি। এই রেসিপিটা খেতে অনেক মজাদার। এই রেসিপি টা আমাদের এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ে যেকোন অনুষ্ঠানে এই ধরনের রেসিপি তৈরি করা হতো মেহমানদের আপ্যায়ন করার জন্য। কচুর শাক, কচুর ডাটা এবং কচুর কাঠ দিয়ে নানা রকম রেসিপি তৈরি করা হতো। কালের বিবর্তনে এসব রেসিপি আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। ছোট কালে আম্মা এই ধরনের রেসিপি তৈরি করেছে তবে এখন তেমন কিছু মনে নেই। কচুর শাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
যদিও অনেকে কচুর শাকের গুরুত্ব বুঝে না কারণ গ্রামে অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে থাকে। অনায়াসে সব জায়গায় পাওয়া যায় বলে। কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন,প্রোটিন শর্করা, ক্যালসিয়াম রয়েছে।কচুর শাক খাওয়ার উপকারিতা অনেক। দুধ নারিকেল দিয়ে কচু শাকের রেসিপি আগে কখনো তৈরি করে নি। এই রেসিপি তৈরি আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন। রেসিপি করার সময় ভাবছি কেমন জানি হবে? এই রেসিপি তৈরি করাতে নতুন অভিজ্ঞতা হলো আমার। অবশেষে সুন্দর ভাবে রেসিপি টি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। দুধ আর নারিকেলের স্বাদে কচু শাকের রেসিপি বেশ দারুন ছিলো।
আমার কাছে খেতে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। পরিবারের সবাইকে যখন দিয়েছি সবাই খেয়ে বেশ ভালো বলেছে। অনেকে রেসিপিটি ভাতের সাথে খায়। আবার অনেকে ভাত ছাড়াও খেয়ে থাকে। আমার কাছে বিশেষ করে ভাত ছাড়া খেতে বেশ ভালো লেগেছে। আশা করি রেসিপি টা আপনাদেরও ভালো লাগবে। এই রেসিপিটি তৈরি করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং কিভাবে তৈরি করলাম তার বর্ণনা নিচে প্রতিটা ধাপে উপস্থাপন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।
আসুন শুরু করি
প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ :-
নাম | পরিমাণ |
---|---|
কচুর শাক | পরিমাণ মতো |
দুধ | এক কাপ |
নারিকেল | পরিমাণ মতো |
লেবু | পরিমান মত |
চিনি | এক টেবিল চামচ |
পেঁয়াজ কুচি | একটি |
লবণ | পরিমান মত |
তেজপাতা, এলাচি | পরিমাণ মতো |
ভিনেগার | পরিমান মত। |
↘️ প্রস্তুত প্রণালীঃ ↙️
↘️ধাপ :- ১↙️
- রেসিপি তৈরি করার জন্য যাবতীয় উপকরণ জোগাড় করে নিলাম।
- প্রথমে আমি কচুর শাক কেটে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিলাম।
↘️ধাপ :- ২↙️
- এই ধাপে আমি একটি পাতিল গ্যাসের উপর বসাই। তাতে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে কচু শাক ঢেলে দিলাম পাতিলের মধ্যে।
↘️ধাপ :- ৩↙️
- কচু শাক ভালো করে সিদ্ধ হচ্ছে।
↘️ধাপ :- ৪↙️
- শাক সিদ্ধ হওয়ার পর প্লাস্টিকের জালির মধ্যে নিয়ে পানি সরিয়ে নিলাম।
↘️ধাপ :- ৫↙️
- এই পর্যায়ে আমি শাক একটি পাতিলের মধ্যে নিলাম। তারপর তাতে পরিমাণ মতো লেবুর রস দিলাম।
অনেকে কচুর শাক খেলে গলা চুলকায় তার জন্য লেবুর রস দিয়ে কিছুক্ষণ কচু শাক রাখলে গলা চুলকায় না।
↘️ধাপ :- ৬↙️
- পাতিল গ্যাসের উপর দিয়ে শাকের পানি শুকিয়ে নিলাম।
↘️ধাপ :- ৭↙️
- এখন আমি পাতিলের মধ্যে পরিমাণ অনুযায়ী লবণ, চিনি, দুধ, নারিকেল, তেজপাতা এবং এলাচি দিলাম।
↘️ধাপ :- ৮↙️
- সকল উপাদান দেওয়ার পর আমি চামচ দিয়ে নাড়িয়ে দিলাম।
↘️ধাপ :- ৯↙️
- পাতিলের মধ্যে ঢাকনা দিয়ে দিলাম। তারপর কিছুক্ষণ পরপর ঢাকনা উঠিয়ে নাড়িয়ে দিলাম।
↘️ধাপ :- ১০↙️
- কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর অবশেষে কচুর শাকের রেসিপি তৈরি হয়ে গেছে।
↘️ সর্বশেষ ধাপ :- ↙️
- পরিশেষে আমি সামান্য পরিমাণ ভিনেগার ঢেলে দিলাম। আমার কাঙ্খিত দুধ নারিকেল দিয়ে কচু শাকের মজাদার রেসিপি তৈরি করা শেষ হয়েছে।এরপর পরিবেশন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | রেসিপি |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি আরো বিভিন্ন ধরনের রেসিপি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো , ইনশাআল্লাহ।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ বিকাল
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলায় প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন, মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করে থাকি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://twitter.com/MdAgim17/status/1709500769840337388?t=14Z58jUET2ImKSOiaSr1LQ&s=19
কচুর শাক আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। নারকেল দিয়ে কচু শাক রান্না করা খেয়েছি। তবে দুধ এবং নারকেল দিয়ে এভাবে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। আপনার রেসিপিটা দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, কচুর শাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এই কনটেস্ট অংশগ্রহণ করার জন্য ভাই আপনি দুধ নারিকেল দিয়ে কচুর শাকের মজার রেসিপি তৈরি করেছেন। কচু শাক দিয়ে এমন রেসিপি তৈরি করা যায় এর আগে আমার জানা ছিল না। সত্যি বলতে এই কনটেস্ট না হলে অনেক রান্না আমার অজানা ছিল আজকের মোটামুটি ভালো সবকিছুতে ধারণা পেলাম ধন্যবাদ ভাই আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। প্রতিযোগিতার পোস্ট দেখে এত সুন্দর প্রশংসা করে পাশে থাকার জন্য।
অনেক ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন। রেসিপি টা দেখতে অনেক আকর্ষণীয় হয়েছে। রেসিপি টা দেখে একটু টেস্ট করতে ইচ্ছা করছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
রেসিপি পোষ্ট দেখে এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
রেসিপি কনটেস্ট গুলোর মাধ্যমে এমন সব ইউনিক ইউনিক রেসিপির সাথে পরিচিত হই, একারণেই রেসিপি কনটেস্ট এর সবার অংশগ্রহণ পোষ্ট পড়ি ভীষণ আগ্রহের সাথে। আপনার পোষ্ট টি আমার জন্যও নতুন। দারুণ ইউনিক লেগেছে আপনার রেসিপির আইডিয়া! আপনার জন্য শুভকামনা রইলো আজিম ভাই।
আপনার জন্য আপু অনেক অনেক শুভকামনা রইলো । এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
ভাবছি বসে বসে এত এত ইউনিক রেসিপির কাছে আমার রেসিপি তো দুধ ভাত। কেন যে করতে গেলুম। এখানে তো সবাই বেশ জিনিয়াস। সবাই বেশ ইউনিক রেসিপি করেছে। তার মাঝে আপনার রেসিপিটি কিন্তু চোখে পড়ার মত। দোয়া রইল এত সুন্দর একটি রেসিপি নিয়ে যেন ভালো একটি পজিশন পেতে পারেন।
কি বলেন আপু? আপনার রেসিপি বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। রেসিপি দেখে এত সুন্দর প্রশংসা করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।