সুখ কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমরা কতভাবেই না নিজেদের ঘুরপাক খাই। কেউ মনে করেন, অর্থ-বিত্ত, যশ-খ্যাতি, বা বস্তুগত সম্পদই সুখের চাবিকাঠি। আবার কেউ ভাবেন, স্বপ্ন পূরণ বা ব্যক্তিগত লক্ষ্যে পৌঁছানোই সুখ। কিন্তু প্রকৃত সুখ কি শুধুই নিজেকে কেন্দ্র করে? নাকি সত্যিকারের সুখ লুকিয়ে আছে অন্যের সুখে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার মধ্যে? সুখ একটি ব্যক্তিগত অনুভূতি, কিন্তু এর প্রকাশ প্রায়শই সামাজিক। আমরা যখন নিজের জন্য কিছু অর্জন করি, তখন তা আমাদের আনন্দ দেয়। কিন্তু সেই আনন্দ কতক্ষণ স্থায়ী হয়? একটি নতুন গাড়ি, একটি বড় বাড়ি, বা চাকরিতে পদোন্নতি—এগুলো আমাদের সাময়িকভাবে তৃপ্তি দেয়। কিন্তু এই তৃপ্তি কি দীর্ঘস্থায়ী সুখের প্রতিশ্রুতি দেয়? গবেষণায় দেখা গেছে, বস্তুগত সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয় না। কারণ, মানুষের চাহিদা অসীম। একটি ইচ্ছা পূরণ হওয়ার পরেই আরেকটি নতুন ইচ্ছা জন্ম নেয়।

তাহলে স্থায়ী সুখের রহস্য কী? উত্তরটি হতে পারে—অন্যের সুখে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা। যখন আমরা অন্যের জন্য কিছু করি, তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলি, তখন আমাদের মধ্যে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি জন্ম নেয়। এই তৃপ্তিই প্রকৃত সুখের সন্ধান দেয়।অন্যের সুখে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার অর্থ হলো, নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে অন্যের মঙ্গল চিন্তা করা। এটি হতে পারে পরিবার, বন্ধু, সমাজ, বা এমনকি অপরিচিত কারো জন্য। যখন আমরা অন্যের সুখের জন্য কাজ করি, তখন আমাদের নিজেদের সমস্যা ও সংকটগুলো ছোট হয়ে যায়। আমরা নিজেদের থেকে বেরিয়ে এসে বৃহত্তর পরিসরে নিজেকে আবিষ্কার করি।

উদাহরণস্বরূপ, একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার কথা ভাবুন। আপনি যখন দুঃস্থ মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যান, তাঁদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারেন, তখন আপনার নিজের জীবনের ছোটখাটো সমস্যাগুলো তুচ্ছ মনে হয়। আপনি অনুভব করেন যে, আপনার প্রচেষ্টা কারো জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। এই অনুভূতিই আপনাকে প্রকৃত সুখ দেয়।বিজ্ঞানও এই ধারণাকে সমর্থন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যের জন্য ভালোবাসা ও দয়া প্রদর্শন করলে আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন ও অক্সিটোসিনের মতো "সুখী হরমোন" নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলো আমাদের মানসিক প্রশান্তি ও আনন্দ দেয়। অর্থাৎ, অন্যের সুখে নিজেকে জড়িয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুখী হতে পারি।

অন্যের সুখে নিজেকে জড়িয়ে ফেলার জন্য বড় কিছু করার প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন। যেমন, পরিবারের সদস্যদের সাহায্য করা, বন্ধুর সমস্যা শোনা, বা রাস্তায় একজন অপরিচিতকে সাহায্য করা।স্বেচ্ছাসেবা প্রকৃত সুখের একটি বড় উৎস। স্থানীয় কমিউনিটি বা সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে যান।প্রতিদিনের জীবনে দয়া ও সহানুভূতি প্রকাশ করুন। একটি ছোট হাসি, একটি উৎসাহব্যঞ্জক কথা, বা একটি সহানুভূতিশীল আচরণ কারো দিন বদলে দিতে পারে।অন্যের অনুভূতি বুঝতে চেষ্টা করুন। নিজেকে অন্যের জায়গায় রাখলে আপনি সহজেই তাদের সুখের জন্য কাজ করতে পারবেন।

সত্যিকারের সুখ হলো অন্যের সুখে নিজেকে খুঁজে পাওয়া। এটি কোনো দার্শনিক তত্ত্ব নয়, বরং জীবনের একটি বাস্তব সত্য। যখন আমরা অন্যের জন্য কিছু করি, তখন আমাদের নিজেদের সুখও বৃদ্ধি পায়। সুখ কোনো একক ব্যক্তির সম্পদ নয়, এটি একটি সামাজিক বন্ধন। তাই আসুন, আমরা সবাই অন্যের সুখে নিজেকে জড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করি। কারণ, সত্যিকারের সুখ হলো অন্যের মুখে হাসি ফোটানো।এই ব্লগটি আপনাকে অনুপ্রাণিত করুক এবং আপনাকে প্রকৃত সুখের সন্ধানে এগিয়ে নিয়ে যাক। মনে রাখবেন, সুখ ছড়িয়ে দিন, সুখ পাবেন।
আমার বাংলা ব্লগের ভাইয়া ও আপুদের সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন ব্লগে।

আল্লাহ্ হাফেজ

ক্যামেরা পরিচিতি

Device	Motorola g34 5g
Camera	52 MP
County	Bangladesh
Location	Rangpur, Bangladesh

আমার নাম মোঃ আবু বকর (সিদ্দিক) ।আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক।আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা।আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর কারমাইকেল কলেজ এর(IHC)ডিপার্টমেন্ট থেকে অনার্স করতেছি।আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। সবথেকে বড় পরিচয় আমি "আমার বাংলা ব্লগ"কমিউনিটির একজন সদস্য।আমি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি।বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে আমার।পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। আমার সব থেকে বড় ইচ্ছা আমি একজন উদ্যোক্তা হব।আমি মনে করি ধৈর্য,পরিশ্রম, বিশ্বস্ততা এগুলো সফল হতে সম্মুখ ভূমিকা পালন করে। ধন্যবাদ।

Vote@bangla.witness as witness

Or

Set@rme as your proxy

আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য সবাইকে অসংখ্য "ধন্যবাদ।