চড়কপূজার কিছু মুহুর্ত!
Hello Everyone
আশা করি, আপনারা সকলে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।
মানুষের স্মৃতি ধরে রাখার সব থেকে সহজ উপায় কি জানেন? ডায়রি অথবা ফটোগ্রাফি !
একটা সময় মানুষ ডায়রিতে নিজের মনের কথাগুলো লিপিবদ্ধ করে সেটা স্মৃতির পাতায় লিখে রাখতো। একটা সময় বললেও ভুল হবে, এখনও অনেকেই ডায়রি লেখেন।
ফটোগ্রাফি আরও সহজ মাধ্যম স্মৃতিগুলোকে অক্ষত রাখার জন্য। আজ আমি আপনাদের সাথে বেশ কয়েক বছর আগের একটা স্মৃতি নিয়ে লেখা শেয়ার করবো।
সেদিনকার মুহুর্তগুলো আমি ক্যামেরা বন্দী করেছিলাম বলে আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারছি। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের নিকট চড়ক পূজা ঐতিহ্যবাহি একটা পূজা। চড়কপূজা খুব বাস্তবসম্মত একটা পূজা। যারা ঈশ্বরের বিশ্বাস করেন না তাদের একবার হলেও চড়কপূজা দেখা উচিত।
আচ্ছা, প্রথম থেকেই শুরু করা যাক -
আমাদের গ্রামে কোথাও চড়কপূজা হয় না। যদিও পাশের গ্রামে হয় তবে আমার কখনওই যাওয়া হয় নি
আমার মাসির বাড়িতে চড়কপূজা ভীষণ ধূমধাম করে অনুষ্ঠিত হয়। একই গ্রামে অনেক জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়। সে বার আমাকে মাসির বাড়ি থেকে ফোন করেছিলো এবং বারবার যেতে বলছিলো৷ অন্যান্য বছরও যেতে বলতো তবে যেতাম না।
তবে সে বছর আমার দিদির বিয়ে হয়েছিলো এবং দাদাবাবু ও দিদি চড়কপূজার সময় মাসির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো আর তাই দাদাবাবু আমাকে বারবার যেতে বলছিলো। তাই না করতে পারিনি!
তাছাড়া আমি আগে কখনও চড়ক পূজা দেখিনি। হ্যা দেখেছি, তবে সেটা অনেক ছোটো বেলায়৷ তাই এবার মনে মধ্যে বেশ আগ্রহ কাজ করছিলো৷
তখন আমি খুলনাতে থাকতাম।
পূজা যেহেতু সন্ধ্যার পর শুরু হয় তাই আমি বিকালে রওনা দিয়েছিলাম।
আমি পৌছানোর খানিক পরে পূজা শুরু হলো। অনেক লোক সেখানে উপস্থিত হয়েছিলো কারন পানখালি গ্রামের চড়কপূজা অনেক নামকরা তাই অনেক দুর থেকেও লোকজন আসেন পূজা দেখতে।
ছোটোবেলায় গল্প শুনেছি, শিব ঠাকুর খুব সহজ মনের হয়। অল্পতেই খুশি হয়ে অসুর দের বর প্রদান করতেন এবং পরবর্তীতে সেটা সকল দেবদেবীদের জন্য বিপদের কারন হয়ে দাড়ায়।
চড়কপূজা হলো শিব ঠাকুরের পূজা তবে পূজার নিয়ম একটুও যদি অমান্য করা হয় তাহলে শিব ঠাকুর হারিয়ে যায়। তখন সবাই মিলে কান্নাকাটি করে এবং কিছু নিয়মাবলি পালন করার পর শিব ঠাকুর আবারও ফিরে আসেন আর একারনে চড়কপূজাকে সবাই অনেক বিশ্বাস করেন।
চড়কপূজার সব থেকে আকর্ষণীয় মুহুর্ত হলো চরক ঘুল্লি।
যেখানে পিটে বঁড়শি ফুটিয়ে ওর উপর ভর করেই ঘোরা হয়। চরক ঘুল্লি শুরু করার আগে আমার সত্যি ভীষণ ভয় লাগছিলো।
একটা বঁড়শির উপর একজন মানুষের সম্পূর্ণ ভর থাকবে এটা ভাবতেই অবাক লাগছিলো।
পূজার শেষ পর্বে যখন দুজন লোকের পিঠে বঁড়শি ফুটিয়ে ঝুলিয়ে দিলো সেই মুহুর্তে আমার হাত পা যেন ঠান্ডা হয়ে আসছিলো৷ যেহেতু আগে এই দৃশ্য দেখার অভিজ্ঞতা নেই তাই ভীষণ ভয় লাগছিলো।
আপনাদের সাথে সেই মুহুর্তগুলো আরও ভালো ভাবে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ডিডিও শেয়ার করেছি। যেটা দেখে আপনারও খানিকটা উপভোগ করতে পারেন।
বঁড়শি ঝুলিয়ে দেওয়ার পর নিচে অনেক মানুষ বড় খুঁটি ধরে ঘুরছিলো। যে দু'জন ঘুরছিলো তারা ঘুরে ঘুরে সবার উদ্দেশ্যে প্রসাদ ছড়াচ্ছিলো।
এত কিছু দেখে আমি সত্যি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক, আজ আপনাদের সাথে মুহুর্তগুলো শেয়ার করতে খুব মন চাইলো।
নিজ নিজ ধর্মকে সবাই বিশ্বাস করে, তবে নিজ ধর্মের পাশাপাশি সকল ধর্মকেই সম্মান করা উচিত আর এতেই হয়ত নিজ ধর্মের শিক্ষা প্রকাশ পায়
Congratulations! This post has been voted through steemcurator. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.
Thank you sir for your support. 🙏