আমার চারটে দেয়াল!My four walls!

আমার ঘরের চারদিকের দেয়াল!
একদিক বলে আমি, একদিক বলে আমার;
একদিকে পুরোনো ক্ষত,
অপরদিকে আজগুবি খেয়াল!
শূন্যতা বিদ্যমান চতুর্দিকে;
সব দেয়ালের রং হয়েছে ফিকে!
আমি, আমার বলে অবশিষ্ট কিছু নেই;
পুরোনো ক্ষত চিহ্ন এড়াতে
সিলিং এ নজর দেই!
সেখানেও ঝুলতে দেখি স্নেহ;
ভালোবাসায় ছেদ পড়া নিথর দেহ!
সঙ্গে সঙ্গে চোখ বন্ধ করে ফেলি;
নিজের সাথেই লুকোচুরি খেলি!
অর্থ দিয়ে একমুঠো ভালোবাসা কেনা;
আজ পরিশোধিত, যত ছিল সব দেনা!
সময়ের সাথে প্রকৃত আচরণ যায় চেনা।
প্রিয়জন বলে কিছুই হয়না..
প্রয়োজন ব্যতী খোঁজ ও নেয় না!
স্বার্থপর দমবন্ধ মানুষের ভীড়ে;
একাকী স্মৃতি বিজড়িত নীড়ে!
কানে ভেসে আসা কিছু ডাক;
চোখ খুললেই হই হতবাক!
কোথাও কেউ নেই,
সেই আমি, আর আমার চারটে দেয়াল!


যাদের পেটে খাবার নেই, তাদের প্রতিদিন সংঘর্ষ করতে হয় পেটের ক্ষুধা নিবারণ করবার জন্য, তাদের ভাবার সময় নেই, মন কি চায়, কি বলছে শোনবার সময় নেই তাদের!
বাড়িতে অপেক্ষারত বৃদ্ধ মা, বাবা, পরিবারের খুদে সন্তানদের মুখগুলো তাদের দৈনন্দিন লড়াইয়ের রসদ সরবরাহ করে।
আর এখানেই সেই মানুষগুলোর সাথে এদের পার্থক্য যাদের লড়াই করবার জন্য চোখের সামনে কোনো মুখ ভেসে ওঠে না!
নিজের জন্য বাঁচা উচিত বটে, নিজেকে সুস্থ্য, ভালো রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে এটাও অনস্বীকার্য তবে এই মৃত্যু লোকে সত্যি কি মায়া মুক্ত হয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব?
বিশেষত যখন সাধারণ মানব দেহে জন্মে শুধু চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে অর্থ উপার্জনের পিছনে ছুটে একটা আস্তো জীবন শেষ হয়ে যায়!
মৃত্যু শয্যায় শুয়ে মনে হয়, কখন যেন জীবনের মূল্যবান সময় পার হয়ে গেলো কেবলমাত্র পারিপার্শ্বিক মানুষদের কথা ভাবতে ভাবতেই!

সত্যি কি তারা চলে গেলে মনে রাখবে এই পরিশ্রমের কথা? তারা তো তাদের মতো করেই জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করবে, আমি পড়ে থাকবো ছবি হয়ে, কখনও একটা মালা জুটবে আবার সময়ের সাথে সেটাও হয়ে যাবে বাড়তি খরচ!


যারা এই মায়ার বাঁধন থেকে বেরিয়ে সাধনার পথ বেছে নিয়েছে, তারাই বোধহয় ভালো থাকতে পারেন, কারণ সেখানে মানুষের কাছ থেকে কোনো প্রত্যাশা থাকে না!
সেখানে মোক্ষ লাভের জন্য কঠোর তপস্যা থাকে, কারণ তারা জানেন, এই মায়া কেবলমাত্র দুঃখ ছাড়া কিছুই বয়ে নিয়ে আসে না।
পেটের ক্ষিদে বড় সেই মানুষগুলোর কাছে যাদের একবেলা খাবার জোগাড় করতে কালঘাম ছুটে যায়, তবে এই মায়া এমন একটা অদৃশ্য ছলনা, যার হাত ধরে আসে লোভ, লালসা, হিংসা, হানাহানি আর এমন অনেককিছু যা অভাবের নামে স্বভাবে পরিণত হয়ে যায়, নিজেদের অজান্তেই!
আজকের অবস্থান যদি শুরু থেকেই থাকতো হয়তো আমিও এই জীবনেই অভ্যস্থ হয়ে যেতাম, তবে আমার শুরু তো আজকের মতো করে হয়নি, এক্ সময় দেয়াল দেখতেই পেতাম না, সম্পর্কে আবিষ্ট হয়ে ছিল চতুর্দিক, তাই হয়তো এই শূন্যতা আজ আমায় গিলতে আসে!
মানুষের উপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলেছি, ইহো জনমে আর বোধহয় মানুষকে বিশ্বাস করা আমার পক্ষে অসম্ভব!
সুন্দর ধবধবে সাদা, শ্যামলা, কালো চামড়ায় মোড়া, মিষ্টি হাসিখুশি সাদাসিধে চেহারার পিছনের কদর্যতা আমাকে বিস্মিত করেছে একাধিক বার!
মানুষের কর্ম, দুঃসময় তাদের ব্যবহার এগুলো দিয়েই তো চিহ্নিত করা যায়, কে মানুষ আর কারা মানুষ বেশি অমানুষ, আমার সাধারণ বুদ্ধি তে তাই বলে! যদিও বুদ্ধিজীবীদের অভিমত পৃথক হতেই পারে, তবে আমি সাধারণ থাকতে চাই, কিন্তু আজকাল এই থাকার প্রয়োজন শেষ হয়ে এসেছে এমন একটা অদৃশ্য অনুভূতি অনুভব করা শুরু হয়েছে, হয়তো খুব শীঘ্রই ইচ্ছের পূর্তি হবে!


সত্যি বলতে এত বিচিত্র ধরনের মানুষের মুখোমুখি হয়েছি যে মানুষের উপর থেকে বিশ্বাস আমিও হারিয়ে ফেলেছি।এর পেছনে আরও একটা কারণ বোধকরি আমার মা।সে বলতো কখনো কারো উপরে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করবি না।
কিন্তু আমি একসময় তার কথা না শুনে বার বার মানুষকে বিশ্বাস করেছি আর ধোকা খেয়েছি ।এখন আর কাউকে বিশ্বাস করতে সাহস পাই না।
অপর দিকে আমার বাবা ছিলো মায়ের বিপরীত ।তিনি বলতেন মানুষকে বিশ্বাস করতে ।যদিও সে তার এই বিশ্বাস এর বিনিময়ে বার বার ক্ষতিগ্রস্তই হয়েছে ।তারপরও কেন জানি বিশ্বাস করতে বলতো সবাইকে ।তাই আমিও ইদানিং চেষ্টা করি বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মাঝামাঝি একটা জায়গায় অবস্থান করার জন্য ।
0.00 SBD,
2.90 STEEM,
2.90 SP
Your comment has been supported by SC-05. We support quality posts, Original quality comments anywhere, and any tags
@sduttaskitchen,
thank you so much ma'am.
0.00 SBD,
0.10 STEEM,
0.10 SP
Appreciated your support @cymolan