Kintsugi -A Japanese art form! (কিন্টসুগি - জাপানি শিল্প!)
![]() |
---|
আপনার, তথা আমাদের অর্থাৎ বেশিরভাগ মানুষের একটি সহজাত অভ্যেস হলো কোনোকিছু ভেঙে গেলে সেটা আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেওয়া!
আমরা বিশ্বাস করি কোনোকিছু ভেঙে গেলে সেটা পুনরায় ব্যবহার যোগ্য থাকে না, অনেক ক্ষেত্রে এটি সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য!
অনেককিছু যেমন পড়ার আছে, তেমনি সেখান থেকে শেখার থাকে বহুকিছু।
সেরকম একটি শিক্ষা জাপানিদের একটি পদ্ধতি কিন্টসুগি শিল্প থেকে শেখার সুযোগ পেলাম।
- এখন পদ্ধতিটি কি? কেন জাপানিরা এই শিল্পকে গুরুত্ব দেন?
প্রথমে এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যাক। কোনো জিনিষ ভেঙে গেলে জাপানিরা সোনা, পিতল কিংবা অন্যান্য ধাতুর দ্বারা সেই ভেঙে যাওয়া জিনিসটিকে একটি নতুন প্রাণ তথা পুরোনো কিংবা নতুন আকার যেটাই বলুন ফিরিয়ে দিয়ে থাকে, আর এই পদ্ধতিটিকে বলে কিন্টসুগি শিল্প।
এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে জানাবো, জাপানিরা বিশ্বাস করেন, কোনো কিছুই ফেলা যায় না, এমনকি ভঙ্গুর জিনিসকেও চাইলে রূপান্তরিত করে তাকে নতুন করে পুনরুদ্ধার সম্ভব!
কি অভূতপূর্ব ভাবনা, তাই না? সত্যি তো, দৈনন্দিন জীবনে এমন কত কিছু রয়েছে যেগুলো ভেঙে গেলে খারাপ লাগে, কিন্তু তাকে পুনরুদ্ধারের কথা খুব কম আমাদের মাথায় আসে, পরিবর্তে নতুন কিনতে হবে সেটাই মাথায় কাজ করে।
এই শব্দটি সম্পর্কে আমি "খুদা হাফিজ," নামের একটি ছায়াছবি থেকে প্রথম শুনেছি! এরপর নিজের কৌতূহল নিবারণের জন্য, পড়া শুরু করেছি।
কারণ? আজকাল মানুষ মানসিক ভাবে অধিক ভেঙে পড়ছে, আমি নিজেও সেই তালিকায় সামিল!
কিন্টসুগি শিল্প আমাদের ভাবতে শেখায় ভঙ্গুর কোনোকিছু ফেলার আগে তাকে পুনরুজ্জীবিত করবার প্রয়াস আমাদের প্রত্যেকের করা উচিত!
পদ্ধতিটি বা বর্তমানে প্রসিদ্ধ শিল্পটি যদিও এক সেনার চায়ের প্রিয় কাপ ভেঙে যাওয়া থেকে সূত্রপাত, কিন্তু এই একটি শিল্প কতগুলো শিক্ষা আমাদের দেয়?
পরিত্যাগ করবার অথবা হেরে যাবার পূর্বে ভাবুন!
সম্পর্ক কিংবা দ্রব্য আস্তাকুঁড়ে ফেলবার পূর্বে একবার পুনরুদ্ধারের প্রয়াস করুন!
নতুন রূপ, ভেঙে যাওয়া বস্তুকে যেমন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখায়;
তেমনি আমাদের ভেঙে যাওয়া আত্মবিশ্বাসকে আরেকবার নতুন করে বাঁচার অবকাশ দেয়!স্মৃতির গাঁথা সুপ্তবস্থায় রয়েছে এই শিল্পের আড়ালে, যেখানে আমরা কোথাও না কোথাও গিয়ে ভাবতে বাধ্য, সত্যি কি ভঙ্গুর কোনোকিছু অপ্রয়োজনীয়?
নাকি তাকে একটি নতুন রূপ দিয়ে ব্যবহার যোগ্য পাশাপশি প্রয়োজনীয় করে তোলা সম্ভব?

পুনরুজ্জীবিত করবার কৌশল নেই! |
---|
মুশকিল হলো, সস্তার জিনিস বাজারে এখন সহজলভ্য! তাই পরিত্যক্ত জিনিষ দের পুনরুদ্ধারের প্রয়াস মানব জীবন থেকে প্রায় হারাতে বসেছে।
ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলে হয়তো অনেকেই আমার উপরিউক্ত কথার যথার্থতা উপলব্ধি করতে পারবেন।
আর এই ভাবনার জন্য ফিরে যেতে হবে শৈশবে।
যখন থেকে পেন্সিল ছেড়ে পেন দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম, মনে পড়ে সেই দিনগুলো?
তখন, পেনের মধ্যে থাকা রিফিল আলাদা করে কিনতে পাওয়া যেতো!
🖋️ ফাউন্টেন পেন এর কালির দোয়াত আলাদা কিনতে পাওয়া যেতো!

পুনরুদ্ধার সম্ভবপর একটি পেন |
---|
একটি পেন যাতে অধিকবার ব্যবহার করা যায় ঠিক সেই কারণে এইসকল ব্যবস্থা লক্ষ্যণীয় ছিল!
আর এখন? বেশিরভাগ পেন তৈরি হয় ইউজ এবং থ্রো হিসেবে!
ঠিক সম্পর্কের মতই!
যত দামে রিফিল কেনা হবে তার চাইতে সস্তা পেন, কাজেই পুনরুদ্ধারের পরিবর্তে আস্তাকুঁড়ে তাদের ফেলে দেওয়ার বন্দোবস্ত ব্যবসায়ীরা করেছেন, আর আমরা নিজেদের সেই অভ্যেসেই অভ্যস্ত করে ফেলেছি!
কি অদ্ভুত বিষয় তাই না? পিছন ফিরে একটু ভেবে দেখবেন, কি শিক্ষায় শৈশব অতিবাহিত হয়েছে, তাহলে হয়তো অনেক কিছু আস্তাকুঁড়ে জায়গা পাবার পরিবর্তে পুনরুদ্ধার হলেও হতে পারে!


প্রথমেই দিদি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এতো সুন্দর একটা পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
পুরাতন জিনিস সম্পর্কে জাপানিদের এই ভাবনা আমি আগে কখনও জানতাম না৷ আজকেই আপনার পোষ্ট থেকে জানতে পারলাম।
আসলেই আমরা মনে করি কোন কিছু পুরাতন হওয়া বা ভেঙে যাওয়া মানে সেটা শেষ। এর থেকে আর কিছু পাওয়ার নাই৷ কিন্তু আজকে আপনে সুন্দর ভাবে বুঝিয়েছেন না চাইলে ভাঙা জিনিস দিয়েও নতুন কিছু গড়ে তোলা যায়।
0.00 SBD,
0.14 STEEM,
0.14 SP
Your content has been successfully curated by our team via @ kouba01.
Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.