Expectation! প্রত্যাশা।

আজকে ভীষণভাবে বিরক্ত হয়ে আছি। আমার মনের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করবার এই একটি স্থানকে আমি সর্বদা বেছে নিয়েছি।

এর পিছনে দুটি কারণ এর প্রথমটি হলো, এই প্ল্যাটফর্মে আমার মত আর কতজন মানুষ আছেন যাদের আমার মতোই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়? সেটা জানবার সদিচ্ছা, পাশাপশি দ্বিতীয় কারণটি হলো, এটা জানান দেওয়া পৃথিবী দিন দিন স্বার্থপর মানুষে ভরে যাচ্ছে!

এর আগেও একটা লেখায় আখের উদাহরণ দিয়েছিলাম, আজকেও এমন একটি ঘটনা আমার ব্যাক্তিগত জীবনে ঘটলো সেটা থেকে বুঝলাম, আমার বোধহয় জন্ম হয়েছে কেবল অন্যের প্রত্যাশা পূরণের জন্য!

এখন অনেকেই হয়তো বলবেন, তাদের সাথেও এরকম অনেক হয়, অথবা হয়েছে ইত্যাদি।
তবে, কথাটা বলবার আগে একটু ভেবে দেখবেন, দেওয়া নেওয়া উভয় দিকের শুধু দেওয়ার দিকেই কি আপনি বরাবর ছিলেন?

যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে আপনি আমার দলভুক্ত।
তবে, যদি দেওয়ার সাথে নেওয়া যুক্ত থাকেন তবে আপনি আমার দলের আওতাভুক্ত নন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ সহযোগিতা পেতে পেতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়ে যে, কোনোভাবেই না এই শব্দটি হজম করতে তাদের ভীষণ কষ্ট হয় বা সেটা তারা হজম করতে পারে না।

কারণ? পেতে পেতে তারা মনে করেন ওটা তাদের জন্মগত অধিকার এবং যারা ক্রমাগত দিয়ে চলেছেন সেই মানুষগুলো অস্তিত্বহীন, আবেগহীন! কাজেই তাদের নিজস্ব অভিমত, অনুমতির তোয়াক্কা তারা করতে নারাজ।

না বললেই মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে! আর সঙ্গে সঙ্গে যতকিছু পূর্বে তাদের জন্য করা হয়েছে নিঃস্বার্থ ভাবে, সবটাই জলে! এতটাই এরা নিজেদের প্রত্যাশার পারদ চড়িয়ে ফেলেছে।

বিরক্ত গিয়ে যাচ্ছি দিন দিন এই নকল মানুষগুলোর প্রকৃত কদর্য চেহারা দেখতে দেখতে!

যারা জীবনে স্বার্থ ছাড়া কারোর দিকে এক গ্লাস জল পর্যন্ত এগিয়ে দিতে নারাজ, তাদের প্রত্যাশা আকাশকুসুম!

আরে যাদের থেকে এই প্রত্যাশাগুলো করছেন, কখনও নিজেকে তাদের স্থানে রেখে দেখুন তার সিকিভাগও অবদান আপনার পক্ষ থেকে করে দেখেছেন কিনা?

অর্থ আছে মানেই সবাইকে তাই দিয়ে কেনার অভ্যেস বর্জন করুন!
এটার মত নিম্ন মানসিকতা দ্বিতীয়টি নেই, আর এখনও অনেক মানুষ আছেন যারা

নিজেরা যেটা অন্যের ক্ষেত্রে করতে গিয়ে লক্ষ্য বার ভাবেন, সেটাই সস্তায় প্রত্যাশা অন্যের কাছ থেকে করে থাকেন ক্ষমতার জোরে, তবে জীবনের শেষটা ভেবে মানুষের বর্তমানে পা ফেলা উচিত বলে আমি মনে করি।

তোষামোদি করে তাড়াতাড়ি বেশিদূর সমাজে এগোতে পারলেও,
উপর থেকে ততটাই দ্রুত বেগে নিচে নেমে আসতে হয়।

রইলো বাকি দেওয়া নেওয়ার হিসেব, তাহলে বলবো, আমার দৃষ্টিতে তারা অনেক উপরে যারা নিজেদের জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করে অন্যের প্রয়োজনে পাশে থাকে, অন্ততঃপক্ষে তাদের তুলনায় যারা আর্থিক ক্ষমতা দেখিয়ে রাষ্ট্র করে বেড়ায় তারা কত উপকারী।

অর্থ পরিশোধ যোগ্য, কিন্তু সময় নয়। তাই কৃতজ্ঞতার দাঁড়িপাল্লায় ওজন করলে সেই মানুষগুলো অনেক বেশি ধনী যারা নিঃস্বার্থভাবে নিজেদের সময় ব্যয় করে আপনার দুঃসময় পাশে ছিল।

দয়া করে টাকার অঙ্ক দিয়ে তাদের এই কৃতজ্ঞতা মূল্যায়ন যেমন করবেন না, ঠিক তেমনি প্রত্যাশায় লাগাম লাগাতে এবং না শুনতে নিজেকে অভ্যেস করুন।

মানুষ কোনো যন্ত্র নয়, তাকে দয়া করে ব্যবহার করবেন না, পৃথিবীটা গোল!