বেনারসে বিভীষিকা - ছায়াছবির রিভিউ!(Atrocities in Varanasi - A film review)
![]() |
---|
ফোনের গ্যালারির ছবি ঘেঁটে দেখলাম তিন বছর আগে সিনেমা দেখতে প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলাম!
এরপর আর অমুখ যাওয়া হয়নি, কারণ ভিন্ন ভিন্ন আছে তবে আজ সকাল প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ আমার দিদির ফোন।
আমার বাসস্থানের কাছে একটি ছায়াছবি মুক্তি পেয়েছে দেখতে আসবে, আমি যদি যাই তাহলে অনলাইন টিকিট কাটবে।
আমার প্রথম প্রশ্ন কি ধরনের ছায়াছবি? আমার দিদি ভালো করেই জানে রহস্য ছায়াছবি আমার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে, কাজেই বললো,
আমি বললাম হ্যাঁ হ্যাঁ জানি সুজন দাশগুপ্তের গোয়েন্দা চরিত্র!
যদিও আজ ঘরের অনেক কাজ ছিল, একদিকে বৃহস্পতিবার আবার অন্যদিকে ফ্রিজ পুরস্কারের পালা।
এবার থেকে কোনো আমিষ ফ্রিজে রাখবো না ঠিক করে আজকে ছায়াছবি দেখতে যাবো জেনেও ফ্রিজ পরিষ্কার পিছই নি!
এর সাথে ঘরের কাজ, স্নান পুজো সব সেরে বিকেল চারটে চুয়াল্লিশ এর শো টাইম এ হাঁটি হাঁটি পায়ে প্রেক্ষাগৃহে পৌঁছে গেলাম।
সযত্নে বসে পড়লাম একেন বাবুর চরিত্রে অভিনয় করেন বরাবর অনির্বাণ চক্রবর্তী।
ওনাকে দেখলে সন্তোষ দত্তের কথা মনে পড়ে যায় যিনি ফেলুদার সাথে জটায়ু অর্থাৎ লালমোহন গাঙ্গুলির চরিত্রে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন।
এবার আসবো ছায়াছবির বিষয়, প্রথমেই বলে রাখি যদি পুরোনো জাঁদরেল গোয়েন্দা গল্পের সাথে তুলনা না করে যদি ছায়াছবি দেখেন, তাহলে আপনাদের বিষয়বস্তু এবং গোয়েন্দা চরিত্র ভালো লাগবে, কারণ উনি একদিকে ধুরন্ধর, আবার অন্যদিকে রসিকতায় পারদর্শী।
চেহারা দেখলে খাদ্যরসিক মনে হলেও তাকে কোনো দিক থেকেই গোয়েন্দা মনে হয় না, এটা একটা পজিটিভ বিষয় এবং সুজয় দাশগুপ্তের রচিত এই চরিত্রটির এখানেই আগের গোয়েন্দাদের থেকে ব্যতিক্রমী করে তোলে।


Varanasi Ghat! |
---|
তবে, ওই যে বললাম, এই চরিত্রটি আমাকে লালমোহন গাঙ্গুলির চরিত্রে অভিনয় করা সন্তোষ দত্তের কথা মনে করিয়ে দেয়।
যেহেতু এটি একটি রহস্য গল্প কাজেই এর গল্প ফাঁস করে ছায়াছবি দেখার আগ্রহ মাটি করতে চাইছি না!
যেটা ভালো লেগেছে আমার সেটা হলো আমি যে বেনারস ঘুরতে গিয়েছিলাম, ছায়াছবির সাথে, জায়গাটিতে যাবার মুহুর্ত গুলো পুনর্জীবিত গিয়ে গেলো।
সেই বেনারসের ঘাট, সেই বাজার আরো অনেক জায়গা ছায়াছবির পর্দায় দেখে দিদি আমায় জিজ্ঞাসা করছিল, এখানে গিয়েছিলি?
আমি উত্তর দিলাম হ্যাঁ গিয়েছি, গঙ্গাজল নিয়ে এসেছিলাম সঙ্গে করে।
অভিনয়ে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বরাবরের মতো সবাইকে ছাপিয়ে গেছে।
ছায়াছবির শেষ দৃশ্য জয়বাবা ফেলুনাথ কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে হুবহু একটি দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি তথা সেই দৃশ্যের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে।
একেন বাবুর রসিকতার দিকগুলো আমার ওনার গোয়েন্দা চরিত্রের চাইতে অধিক তার ভুল বলার অভ্যেস, তার খাদ্যের প্রতি লোভ আপনাকে হাসির খোরাক জোগায়, আর এই বিষয়টি আমিও উপভোগ করেছি।
তবে, আমার যেহেতু মোটামুটি সমস্ত গোয়েন্দা চরিত্র পড়া তাই, যদি তাদের সাথে তুলনা করে এই গোয়েন্দা চরিত্রকে মূল্যায়িত করতে হয় আমি ওই দশে দেবো সাড়ে ছয়।
কারণ, আমার কাছে শার্লক হোমস, ব্যোমকেশ বক্সী, ফেলুদা, আগাথা ক্রিস্টি, কাকাবাবু, মিতিন মাসি এরকম অনেকে সারিতে আগে রয়েছে।
এছাড়াও অনেক নাম আছে তালিকায় এর পরের সারিতে, যাইহোক যারা গোয়েন্দা গল্প পড়বার সময় পান না, কিন্তু রহস্য পছন্দ করেন, তাদের দেখার জন্য ছায়াছবিটি ভালো।
একঘেয়ে বোধ করবেন না ছায়াছবিটি দেখতে দেখতে, আপনার মধ্যে একটা টানটান উত্তেজনা কাজ করবে, এটাই রহস্যের সবচাইতে মূল্যবান বিষয় যেটির জন্য আমি এই বিষয়টি পড়তে এবং দেখতে পছন্দ করি।
ছায়াছবির শেষে আমরা গিয়েছিলাম কাছের একটি রেস্টুরেন্টে, সেই বিষয় নিয়ে রিভিউ দেবো আগামী লেখায়।
আজকে এখানেই ইতি টেনে বিদায় নিলাম।
"দ্য একেন: বেনারসে বিভীষিকা" |
---|
👇
পরিচালক:- জয়দীপ মুখোপাধ্যায়(৮/১০)
অভিনেতা:- শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়(৯/১০)
ইশা সাহা, গৌরব চক্রবর্তী:- (৭.৫/১০)
অনির্বাণ চক্রবর্তী (একেন বাবু):- (৮.৫/১০)

