আজকের কবিতা:- কূপমন্ডুক! (A little learning!)
|
---|
গুপী বাঘা রাজ্য ছাড়া হয়;
ভুতের রাজা তাদের
মনের দুঃখ শুধায়!
তিন বর বুঝে নিয়ে,
রাজকন্যা পেলে,
হীরক রাজার দেশে
শিক্ষকের দেখা মেলে!
কাজে লাগিয়ে তিন বর
দুঃখের অবসান;
ক্ষমতার সঠিক প্রয়োগ
করেছিল তারা প্রমাণ!
হারিয়ে গেছে গুপী আজ,
নেই বাঘার দেখা;
তাই বোধহয় শিশুদের
হয়না নীতি শেখা!*
ফাঁক পেলে অভিসন্ধি,
আর মতলব কষা!
আজ কিছু সিংহাসনে
হীরক রাজাই বসা।
মগজ ধোলাই চলছে যেথা
সর্বক্ষণ পিছে পিছে;
সততা আজকাল বৃথা জ্ঞান,
সত্যি, সম্মান সবই মিছে!
কূপমন্ডুক দের জ্ঞানের হাড়ি,
তাই নিয়েই করে বাড়াবাড়ি!
শব্দকোষ ভর্তি শুধু
ভাগাভাগির কথায়;
ঐক্যতার শক্তির কথা
নেই কারোর মাথায়!
*নিজে বাঁচেলে বাপের নাম,
বিনা স্বার্থে, নেই করা কোনো কাম!
মাথা মুড়িয়ে, বিষ ঢুকিয়ে,
মগজ ধোলাই চলছে!
যন্ত্রের মন্ত্র রটছে কেবল,
নির্বুদ্ধিয় ভরা শূন্য মগজ
শেখানো বুলি বলছে
আবোল-তাবোল!
শব্দের অর্থ নেই জানা,
না জানা মাপকাঠি;
তাইতো, হাতে বইয়ের পরিবর্তে
ধরে আছে সব লাঠি।
(পুরোনো সংগ্রহশালা থেকে নেওয়া ছবি) |
---|
ব্যস্ততার মাঝে নিজের মনে উঁকি দেওয়া কিছু শব্দকে ছন্দের একার দেবার প্রয়াস করলাম মাত্র!
নির্ভেজাল মানুষগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছে, সৃষ্টিকর্তা কোথাও গিয়ে বোধহয় হতাশ!
ভালোর ভালোটা চলে গেলে চোখে পড়ে! কি অদ্ভুত! কি বিষ্ময়কর! সাথে খানিক বিরক্তির কারণ ও বটে।
আসলে এই আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের যে সুবিধাগুলো দিয়েছে, সেগুলোকে আমরা নিজেদের উন্নয়নের স্বার্থে প্রয়োগে ব্যর্থ!
আগে, বইয়ের দোকানে ভিড় হতো, প্রতি বছর নতুন জামা কিনি বা নাই কিনি পুজো সংখ্যা কিনতেই হবে।
বই মানে একটা জগৎ, বই মানে অমূল্য সম্পদ, কাউকে দেবার উপায় নেই!
বর্তমান যুগে যারা পড়তে ভালবাসেন তারা এই আধুনিক প্রযুক্তিতে কাজে লাগিয়ে অনলাইন থেকে বিভিন্ন স্বাদের বই পড়েন।
এটা উন্নয়নের একটা ভালো দিক, কিন্তু আমি বহুবার অনলাইন থেকে গল্প পড়ার চেষ্টা করেছি, কিছু পড়েছি তবে সেখানে নতুন বইয়ের পাতার গন্ধ কোথায়?
(নিজের তোলা পূর্বেও ব্যবহৃত ছবি) |
---|
বই পড়া মানে তো শুধু লেখা পড়া নয়, নাক মুখ গুঁজে তার নতুন গন্ধের আস্বাদন করা!
সেটা যদি না থাকে তবে সে পড়ায় আনন্দ কোথায়?
আমার সংগ্রহশালায় যদি দেশ বিদেশের লেখনীর নিদর্শন চোখে না পড়ে, তবে সেই সৃষ্টির স্বাক্ষর পরের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা কি সম্ভব?
তবে, এখন অনলাইনে কেবলমাত্র (বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই) কিছু গুজব, কিছু অতিরঞ্জন এগুলোতেই মেতে থাকতে পছন্দ করেন মানুষ, সেগুলোই তাদের মনোরঞ্জনের সাধন!
অথচ, লেখক শিবরাম চক্রবর্তী, নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়, এদের মজার গল্প কি অসম্ভব মন ভালো করার রসদ, যারা পড়েছেন তারাই বুঝবেন।
এখনও যে লিখছি, শিবরাম চক্রবর্তীর একটি ছোট গল্প মাথায় ঘুরছে, যেখানে একজন সাংবাদিক হিসেবে তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন, এবং তাকে তার উর্ধতন কর্মকর্তা বলেছিলেন এক্ জায়গায় শোনা গেছে ভুতের উপদ্রব, তুমি গিয়ে খবরটা নিয়ে এসো, বিষয়টি বেশ আকর্ষণীয়।
উত্তরে শিবরাম চক্রবর্তী ওরফে ওই সাংবাদিক বলেছিলেন, ও... ও... কাজ আমি পারবো না! আমার ভুতে বিশ্বাস নেই!
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বাস যখন নেই, তখন যেতে আপত্তি কোথায়?
শিবরাম চক্রবর্তী বলেন, না.... আসলে ভুতকে আমার বিশ্বাস নেই! চোখে দেখা যায় না!
কখন কোথা থেকে এসে উপস্থিত হয় বলা যায় না!
তবে শেষ পর্যন্ত উনি গিয়েছিলেন, এবং সেখানে বিষয়বস্তু যেভাবে তুলে ধরেছিলেন তাঁর লেখনীতে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাবার মত।
দুঃখের বিষয়, আজকে কারোর লেখা পড়ায় মাথা ব্যথা নেই, কেবল অভিযোগ, সুবিধা, সহজ পথ অবলম্বন আর সস্তা কথাবার্তায় তারা বেশি আনন্দ পায়।
এখানেই, প্রকৃত শিক্ষা এবং পছন্দের বিস্তর ফারাক তৈরি হয়েছে। ফলস্বরূপ, কোথায় কথা বলছি, কি বলছি, কতটুকু বলা সমিচীন এগুলো তাদের শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত কোনোদিন হতে পারে নি, আর পারবেও না।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.