Better Life With Steem | The Diary game ,July , 12 , 2025।দুঃসংবাদ পাওয়ার এর দিন।

in Incredible India8 days ago (edited)

IMG_1314.jpeg

ছেলের বন্ধুর এক্সিডেন্ট করা গাড়ি (গুগল থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট )

আজকের সকালটা বেশ সুন্দরভাবেই শুরু হয়েছিলো ।যদিও বিড়ালছানাটাকে নিয়ে খানিকটা টেনশনে ছিলাম এবং এখনো আছি ।ও পেটের সমস্যায় ভুগছে আনার পর থেকেই ।যে দিয়ে গেছে সে ওষুধও দিয়ে গেছে সেটাই খাওয়াচ্ছি ।

সাথে গতকাল অনলাইনে অর্ডারে দিয়ে প্রোবায়োটিকও আনিয়েছ৭ ।এখন দেখি কি হয় ।বাচচাটার ওপর দিয়ে ঝড় চলতেছে ।পেটে ক্রিমিও আছে হয়তো কিন্তু ও এতোই দূ্র্বল যে ওকে ক্রিমির ঔষুধও দিতে ভয় পাচ্ছি। কারন এই ঔষুধ দিলে বিড়াল খানিকটা দূর্বল হয়ে পরে ।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার পরপরই দেখি বড় ছেলেও উঠে এসেছে ।নাস্তা বানাবো কিনা ভাবতেছিলাম এমন সময় ছেলে ও তার বাবা এসে বললো যে ওরা দুইজন গ্রামের বাড়িতে যেতে চাচ্ছে ।

আমিও যাওয়ার বিষয়ে মানা করি নাই কারন দিন তিনেক আগেই ওর এক ক্লোজ বান্ধবী মারা গেছে , যার সাথে ও প্লেগ্রুপ থেকে একসাথে পড়াশোনা করেছে । ও মারা যাওয়ার পর থেকেই দেখতেছি ওর মন কিছুটা খারাপ ।

শুধু ওরই না আমারও মনটা বেশ খারাপ ।চোখের সামনে বাচচাটাকে বড় হতে দেখেছি ।বাবা-মার একমাত্র সন্তান ছিলো।
এজন্যই ও যাবো বলার সাথে সাথেই আমি ও ওর বাবা দুজনেই রাজী হয়ে গেছি ।

এখন এই লেখা লিখতেছি আর ভাবতেছি ও আজকের দিনে এমন দূঃসংবাদ পাবে জানলে হয়তো ঢাকা থেকে বের হতো না আজকের এই দিনে।

4ac56d2d-0b58-4571-bb84-2e89eecb8d9e.jpeg

(গুগল থেকে নেয়া স্ক্রিনশট )

ওরা রাস্তায় নাস্তা করে নিবে বলায় আমি আর নাস্তা বানাই নাই ।না বানানোর আরও একটা কারণ হলো আমি ও আমার ছোট ছেলে সকালে নাস্তা খুব কমই করি।

ওরা চলে যাবার কিছু সময় পরে দুপুরের রান্না করে ফেলি ।রান্না শেষ করার কিছু সময় পরেই হয়তো ১২টার দিকে ছেলের কল পাই ।ওর কন্ঠ শুনেই চমকে যাই আমি ।ওর কন্ঠ কাঁপতেছিলো তখন ।ও আমাকে জানালো যে , আম্মু আমাদের কি হয়েছে ? দুদিন আগেই একজন মারা গেল আজকে আবার প্রত্যয় চলে গেল।
ও আরো জানালো যে , একই গাড়িতে ওরা তিন বন্ধু ছিলো মাসনুর , প্রত্যয় এবং সামিউল ।প্রত্যয় স্পট ডেড এবং ওদের অবস্থাও ভালো না ।দুজনেই আইসিইউতে রয়েছে ।কে গাড়ি চালাতেছিলো সেটা বলতে পারলো না। ও এটা বার বার বলতেছিলো যে ওরা তিনজনইতো খুব ভালো ড্রাইভ করে ।

এই ৩ জনকেও ছোট থেকে চিনি ।ওদের প্রতিদিনের আড্ডা ছিলো আমার বড় ভাইয়ের বাড়িতে । চোখের সামনে বেড়ে উঠা বাচচাগুলোর একে একে চলে যাচ্ছে এটা মানা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিলো না।
এইতো সেদিন অস্ট্রেলিয়াতে যাওয়ার আগে দেখা করে গেছে ওরা । তিনজন একই প্রতিষ্ঠানে পড়তো এবং একসাথেই থাকতো।
এরপরে কি হয়েছে এটা সম্পর্কে দুই ছেলেই বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিতে শুরু করলো।যেহেতু দেশে না তাই একেক সময় একেক রকমের কথা শুনতে পেলাম। ওদের বাড়িতে যাওয়া প্রয়োজন ছিলো কিন্তু আমার সাহস হয় নাই ওর মায়ের মুখোমুখি হওয়ার অন্তত আজকের দিনে ।তাই ভাবলাম ছেলে আসলে ওর সাথেই যাবো ।

IMG_1312.jpeg

(সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া ভিডিওর স্ক্রিনশট )

পরে জানতে পারলাম যে মাসনুর গাড়ি চালাচ্ছিলো।পাহাড়ি ঢালু রাস্তায় হঠাৎ করেই সামনে কয়েকটা ক্যাঙ্গারু চলে আসে ।গাড়ি ঘুড়িয়ে ফেলে একটা ক্যাঙারুকে বাচাতে পারলেও গাড়ির স্পিড ও ঢালু জায়গা হবার কারনে ওদের গাড়ি উল্টে যায় ।সাথে সাথে প্রত্যয় মারা যায়।এটা পরে মেসেন্জারএর ভিডিওতেও দেখলাম।

প্রত্যয় ও সামিউল আমার ছেলের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলো ।
এর মাঝে ছেলে হুয়াটসআাপে কয়েকটি স্ক্রিনশট এবং মেসেন্জারে নিউজ এর ভিডিও দেয় ।
আপনারা যারা এই লেখা পড়বেন তারা প্লিজ সামিউল ও মাসনুরের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করবেন ।

এরিক মারিয়া রেমার্কের লেখা অল কোয়ায়েট অন দি ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট এর একটা লাইন পড়েছিলাম ,

মৃত্যু যন্ত্রণার চেয়ে ভয়ংকর যে আর কিছু নেই সেটা এই যুদ্ধক্ষেত্রে এসে বুঝতে পেরেছি কিন্তু মৃত বন্ধুদের ফেরত পেতে যদি জানতাম এই মৃত্যু যন্ত্রণাও সহ্য করতে হবে , সেটাও সহ্য করতাম

ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে এই লাইনের কথাগুলোই যেন ওর চেহারায় ফুটে উঠতে দেখলাম ।কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না ।কিছু কিছু সময় সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয় যে আসলে আমরা তার কাছে কতটা অসহায় ।

এমনিতেই মন খারাপ এরই মাঝে এই লেখা লেখার সময়ে ছেলে এসে জানালো যে ওর আরেক বন্ধু অনিন্দ রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলো ।এমন সময় হঠাৎই স্পিডে একটা গাড়ি এসে ওর পায়ের ওপরে উঠিয়ে দিয়েছে ।এখন ও হাটতে পারতেছে না ।ওকে এখন পপুলারে নিয়ে যাচ্ছে ।আমার আর লেখার মতো মনের অবস্থা নেই ।



Thank You So Much For Reading My Blog

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZtXBBbvSyg7mut1UXDfs91vJBbjvRWniW7kqxJWyzxfBiUR15zUSmmBJcNfGq...Ht8czzm6jLNcmNtMoo5CkngVjPkfuaMSLwsyZ4C5H6d9jw4uJUs6CASqouF5fYyKSD1UQmTGYWz78pUD8S1PSYbAD7jA5t5jwPtEujVi2vgQth35XJdpamtpjp.png

Sort:  
Loading...