"ভিন্ন স্বাদের মেথি চিকেন রেসিপি"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
প্রথমেই আপনাদের সকলকে জানাই সরস্বতী পুজোর অনেক শুভেচ্ছা। যদিও এই বছর সরস্বতী পূজো দুদিনব্যাপী হবে।তিথি অনুযায়ী আজ দুপুর বারোটার পর থেকে আগামীকাল দুপুর পর্যন্ত পুজো করা যাবে।
তাই আজকেও অনেক জায়গাতে যেমন পুজা হবে, তেমনি আগামীকালও সকালের দিকে অনেকেই পুজো করতে পারবেন। যদিও আমাদের বাড়িতে পুজো হবে না।
আপনাদের সকলেরই নিশ্চয়ই আজকের দিনকে কেন্দ্র করে অনেক সুন্দর প্ল্যান রয়েছে। আমার তেমন কোনো প্ল্যান নেই। তবে বান্ধবীরা খুব জোড় করছে, ওদের সাথে স্কুলে যাওয়ার জন্যে। বহু বছর হল স্কুলের পূজায় উপস্থিত হতে পারি না, অথচ একটা সময় ছিলো, যখন এই পূজোর দিনটাকে কেন্দ্র করে স্কুলে যাওয়া নিয়ে কত প্ল্যান করতাম সকলে ।
কি রংয়ের শাড়ি পরবো তা ঠিক করা, তার সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ খুঁজে রাখা। পুজোর দিন সকালে উঠে ফুল তোলা, অঞ্জলি দিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি। শাড়ি পরে সকল বান্ধবীরা একসাথে বাড়িতে অঞ্জলি দিয়ে তারপর স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া। সকলে মিলে গিয়ে সেখানে প্রসাদ খাওয়া, সবকিছু মিলিয়ে সে এক আনন্দঘন মুহূর্ত ছিল, সেই সব কিছুই আজ স্মৃতি হয়ে রয়েছে।
জানিনা কি হতে চলেছে, যদি স্কুলে যাই সেই গল্প নিশ্চয়ই পরবর্তী পর্বে শেয়ার করবো। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি একটি চিকেনের রেসিপি।
মাঝে মাঝে একই ধরনের রেসিপি খেতে ভালো লাগে না, তাই স্বাদে একটু পরিবর্তন আনার কারণে, আমি একটু ভিন্ন রকম করে কখনো কখনো চিকেন রান্না করি।্আযজ সেরকমই একটি ভিন্ন ধরনের রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
চলুন তার আগে বলি এটি তৈরি করতে আমি কি কি উপকরণ ব্যবহার করেছি, -
|
---|
নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১. | চিকেন | ৫০০ গ্রাম |
২. | পেঁয়াজ কুচি | হাফ কাপ |
৩. | আদা বাটা | ১½ চা চামচ |
৪. | রসুন বাটা | ১½ চা চামচ |
৫. | কাঁচা লঙ্কা | ৪-৫ টা |
৬. | টমেটো | ১ টি মাঝারি সাইজের |
৭. | ভিনিগার | ১চা চামচ |
৮. | সরষের তেল | ৫ চা চামচ |
৯. | হলুদ গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
১০. | জিরে গুঁড়ো | ১ চা চামচ |
১১. | কাশ্মিরী লঙ্কা গুঁড়ো | ১ চা চামচ |
১২. | ধনে গুঁড়ো | ১ চা চামচ |
১৩. | কসৌরী মেথি | ১ চা চামচ |
১৪. | গরম মশলা | ½ চামচ |
১৫. | লবন | স্বাদ অনুসারে |
১৬. | বিরিয়ানী মশলা | ১ চা চামচ |
১৭. | আলু | ২টো মাঝারি সাইজের |
|
---|
প্রথমে চিকেন গুলোকে ভালো করে ধুয়ে, জল ছাড়ানোর জন্য রেখে দিতে হবে। জলঝরে গেলে তার মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ, হলুদ গুঁড়ো, ভিনেগার ও অল্প পরিমাণে সরষের তেল দিয়ে মেখে রাখতে হবে। আপনারা চাইলে ভিনেগারের বদলে পাতিলেবুর রসও ব্যবহার করতে পারেন।
অন্যদিকে আবার রসুন, কাঁচালঙ্কা, ধনে ও জিরে গুঁড়ো সবকিছু ভালো করে বেটে নিতে হবে এবং বাটা মসলা গুলোকে ম্যারিনেট করে রাখা মাংসের মধ্যে দিতে হবে।
এরপর ওর মধ্যে কসৌরী মেথি, বিরিয়ানি মসলা, অল্প গরম মসলা, কাশ্মীরী লঙ্কা গুঁড়ো এবং সামান্য হলুদ গুঁড়ো দিয়ে আরও কিছুক্ষণের জন্য ভালো করে মেরিনেট করে রাখতে হবে।
এরপর পেঁয়াজ ও টমেটো গুলোকে ভালো করে কুচি করে কেটে নিতে হবে। যেহেতু আমি মাংসটা ভেজে রান্না করবো, সেই কারণে সকল বাটা মশলা গুলোকে আমি মাংসের সাথে ম্যারিনেট করে রেখেছিলাম।
এরপর গ্যাসে কড়াই বসিয়ে ভালো করে একটু গরম করে নিয়ে, তার মধ্যে পরিমাণ মতো সরষের তেল দিয়ে দিলাম। এরপর মেরিনেট করে রাখা মাংসের টুকরোগুলোকে এক এক করে তেলের মধ্যে দিয়ে, এদিক ওদিক করে ভালো করে ভেজে নিলাম। যেহেতু ভিনিগার ব্যবহার করেছি, তাই মাংসটা বেশ সহজে নরম হয়ে গিয়েছিলো। সবকটা মাংসের পিস এইরকম ভাবে ভাজা হলে, একটা থালার মধ্যে তুলে রাখলাম।
এরপর ওই তেলের মধ্যে কেটে রাখা পেঁয়াজ ও টমেটো দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিলাম। তারপর যে পাত্রে মাংস ম্যারিনেট করে রেখেছিলাম, তার মধ্যে জল দিয়ে পাত্রে লেগে থাকা সমস্ত মসলা গুলোকে কড়াইয়ে দিয়ে, ভেজে রাখা পেঁয়াজ ও টমেটোর মধ্যে দিয়ে ভালো করে বেশ কিছুক্ষণ কষিয়ে নিলাম।
এই রেসিপিতে চাইলে আপনারা আলু ব্যবহার নাও করতে পারেন। কিন্তু যেহেতু আমি আর শুভ মাংসে আলু খেতে পছন্দ করি, তাই আমি আলু ব্যবহার করেছিলাম। মসলা কষে এলে তার মধ্যে কেটে রাখা আলু গুলো দিয়ে, সামান্য লবণ দিয়ে আরও বেশ কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে কষতে থাকলাম, যতক্ষণ আলুগুলো নরম না হয়।
এরপর আমি ভেজে রাখা মাংসগুলোকে দিয়ে আরো কিছুক্ষণ কষিয়ে, তারপর সামান্য পরিমাণে জল দিয়ে দিলাম। এক্ষেত্রে আমি একটু উষ্ণ গরম জল ব্যবহার করেছিলাম, আপনারাও পারলে সেটাই করবেন, তাতে রান্নার স্বাদ ভালো হয়।
এরপর জল কিছুটা কমে এলে, সামান্য পরিমাণে লবণ ও গরম মসলা দিয়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে ভিন্ন স্বাদের চিকেন রেসিপি।
এটি মূলত রুটি, লুচি ও পরোটার সাথে খেতেই বেশি ভালো লাগবে। খুব বেশি সময় লাগে না এটি তৈরি হতে, তাই আপনারা চাইলে একদিন একটু ভিন্ন রকম ভাবে চিকেন রান্না করতেই পারেন।
যাইহোক রেসিপিটি আমার তো বেশ পছন্দের, আপনাদের কেমন লাগলো সেটা মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই জানাবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ভালো কাটুক আপনাদের আজকের দিনটি।
রেসিপিটি পড়ে সত্যিই দারুণ লাগলো! মেথির গন্ধে মিশে থাকা চিকেনের স্বাদ নিশ্চয়ই অসাধারণ হয়েছে। বিস্তারিতভাবে উপকরণ ও প্রণালী দেওয়ায় রান্নাটা সহজে বোঝা গেল। আলু দেওয়ার আইডিয়াটাও ভালো লেগেছে, বিশেষ করে যারা মাংসের সাথে আলু খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য। আপনার লেখা সবসময়ই সুন্দর হয়, তাই পড়তে বেশ ভালো লাগে আপু। এমন ভিন্ন স্বাদের রেসিপি আরও শেয়ার করবেন। শুভ কামনা রইলো।
আপনার পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম। আপনার ছোটবেলার স্কুলের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেল। একটা জিনিস মানুষের কখনো বুড়ো হয় না দিদি, সেটা হল মানুষের মন। আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম। আপনার খুব ইচ্ছা জাগছে, এই সরস্বতী পূজায় আপনার ছোটবেলার বান্ধবীদের সাথে স্কুলের কিছুটা সময় যদি আড্ডা দিতে পারতেন তাহলে হয়তো বা মনটা অনেক হালকা হতো। আপনার রেসিপিটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আমাদেরকে বুঝিয়েছেন কিভাবে রেসিপিটি তৈরি করতে হয়। আপনাকে সরস্বতী পূজার শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সব সময় আপনার জন্য শুভকামনা রইল দিদি।
Your post has been supported by THE PROFESSIONAL TEAM. We support quality posts, quality comments anywhere, and any tags
Thank you @sduttaskitchen ma'am for your support. 🙏
আমাদের সবারই আনন্দের মুহূর্ত গুলো মনে হয় ছোটবেলাতেই শেষ হয়ে গেছে। ছোটবেলায় নিজেদের বিশেষ দিনগুলো আমরা একটু অন্যরকম ভাবেই কাটানোর চেষ্টা করতাম। আপনার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে ছোটবেলায় সঠিকভাবে অঞ্জলি দেয়া স্কুলে যাওয়া সবকিছুই হত, কিন্তু বড় হওয়ার পর সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। তারপরেও আপনার বান্ধবী আপনাকে জোর করেছে স্কুলে যাওয়ার জন্য।
আচ্ছা আপনি আমাদের সাথে অন্য স্বাদের মেথি দিয়ে চিকেন রান্না করার পদ্ধতি শেয়ার করেছেন। আসলে এভাবে আমি কখনো রান্না করিনি আর মেথি খেলে নাকি খাওয়ার রুচি একেবারেই কমে যায়। সেটা আমি জানিনা তবে আজকে আপনার রন্ধন প্রণালী আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। একদিন অবশ্যই ট্রাই করবো। অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার রন্ধন প্রণালী এবং নিজের ছোটবেলার গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আমারও আপনার মতন একই কথা মনে হয়, জীবনের সব ভালো মুহূর্ত গুলো আমরা ছোটবেলাতেই উপভোগ করি। বড় হলে সেই আনন্দের মধ্যেও বেশ খানিকটা খারাপ লাগা, দায়িত্ব, ও কর্তব্যের বোঝা জমা হয়। মেথি খেলে খাওয়ার রুচি কমে যায় এটার সম্পর্কে আসলেই আমি জানতাম না। তবে সবকিছুর পরেও আপনি যে আমার রান্নার রেসিপিটি পছন্দ করেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।