"বাড়ি ফেরার পূর্ব মুহূর্ত"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
হসপিটালে বসে লাস্ট যে পোস্টটা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, সেখানে বলেছিলাম আগের বুধবার হসপিটালে পৌঁছানোর পর জানতে পেরেছিলাম সেদিন শশুর মশাইকে ছুটি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে সকালে জানতে পারলেও ছুটি হতে হতে সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়েছিলো, আজ সেই দিনেরই কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, এই পোস্টের মাধ্যমে।
যখন থেকে শুনেছিলাম বাড়িতে ফিরবো, তখন থেকে মনের মধ্যে আনন্দ শুরু হয়েছিলো, তবে বাড়ি ফেরা বললেই আসলে বাড়ি ফেরা হয় না। অনেক নিয়ম কানুন আছে ডিসচার্জের। আমার মনে হয় অন্যান্য নার্সিংহোম বা হসপিটালের তুলনায় এইমস এর নিয়ম কানুন একটু ভিন্ন। কারণ এখানে রোগী ভর্তি ও ডিসচার্জের অনেক কিছু নিয়ম পালিত হয়।
আমাদের দিক থেকে হয়তো মনে হয় এতো কিছু নিয়মের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। কিন্তু অতো বড় একটা হসপিটাল চালাতে গেলে এই নিয়মগুলো পালন করা আসলেই প্রয়োজন, অন্যথায় সঠিকভাবে পরিচালনা করা অসম্ভব। কিন্তু যেহেতু আমরা রোগীর বাড়ির লোক, তাই কখনো কখনো ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলি। অনেকদিন অপেক্ষার পর আর যেন দেরি সহ্য হয় না। তাই বোধহয় সবকিছু আমাদের জন্য একটু বেশিই মনে হয়।
যাইহোক ওপিডিতে ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছিলো তিনি ওটি থেকে ফেরার পর ডিসচার্জ পেপারে সাইন করবেন এবং তারপর প্রসিডিওর শুরু হবে শ্বশুর মশাইয়ের ছুটির। তাই দীর্ঘক্ষণ আমরা নিচের ওয়েটিং এরিয়াতেই বসে কাটিয়েছিলাম।
সকাল থেকে সেখানে একের পর এক মানুষের ভিড় বাড়ছিল। সকলের কথাবার্তা শুনে যেটুকু আন্দাজ করতে পারছিলাম ওনাদেরকে ফোন করেই আসতে বলা হয়েছিলো। এটা ওখানকারই একটা নিয়ম। প্রতিদিন রোগী ডিসচার্জ হয়ে যাওয়ার পর বেড ফাঁকা হয়, তারপর ওয়েটিং লিস্টে থাকার রোগীদেরকে একে করে সেই বেডে ভর্তি করা হয়।
তবে হসপিটালে থাকাকালীন সময়ে এমন অনেক বার দেখেছি যে, সারাদিন বসে থাকার পরেও রোগীরা বাড়িতে ফিরে গেছে। কারণ যে পেশেন্টদের ছুটি হওয়ার কথা ছিলো, তাদের সেদিন ছুটি দেওয়া হয়নি। ফলতো বেড ফাঁকা না হওয়ায় তারা আবার বাড়ি ফিরে গেছে এবং পরের দিন তাদেরকে আবার আসতে বলা হয়েছে।
যাইহোক দুপুরটা সেখানে অপেক্ষারত অবস্থায় কাটানোর পর, বিকেলের দিকে কাজ শুরু হলো। কিছু মেডিসিন নেওয়ার দরকার ছিল সেটা আমি নিয়ে নিয়েছিলাম এবং শুভ অন্যান্য কাজগুলো সেরে নিয়েছিলো। আসলে আগামী পরশুদিন আবার এন্ডোস্কোপি করার ডেট রয়েছে, সেগুলোই লেখানো, ডাক্তারের সই করানো, ইত্যাদি আরও অনেক কাজ ওইদিন করতে হয়েছিলো।
এরপর শুভ আমাকে ফোন করে জানায়, যেখানে অ্যাডমিশন বা ডিসচার্জ কাউন্টার সেখানেই লাইন দিতে বলে, কারণ ওদিকে সমস্ত কাজ কমপ্লিট করে ফাইনালি এখানে সমস্ত বিল পে করতে হবে এবং এখান থেকে কাজ শেষ করে আমরা রোগীদেরকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারি। আমি লাইনে দাঁড়ানোর কিছুক্ষণ পরে শুভ নেমে এলো। তারপর আমি ব্যাগগুলো নিয়ে ওয়েটিং এরিয়াতে বসেছিলাম, শুভ সমস্ত বিল পে করে ফাইনালি শশুর মশাইকে আনতে ওয়ার্ডে গেলো।
কিছুক্ষণ বাদে শশুর মশাই আর শুভ একসাথে নেমে এলো। এরপর গাড়ি ঠিক করা হয়েছিলো তার অপেক্ষা করার জন্য আমরা গেটের সামনে দিয়ে দাঁড়ালাম। সেখানেই ব্যাগ গুলো রেখে অপেক্ষা করছিলাম। অনেকদিন বাদে বাইরে বেরিয়ে শ্বশুর মশাই সামনে একটু হাটাহাটি করছিলেন।
এমন সময় চোখ পড়ল পাশেরই একটা ফুল গাছে। কি সুন্দর ফুলগুলো ফুটে ছিলো। ফুলের রংটা আমার ভীষণ পছন্দের, এমনকি ফুলগুলো দেখতেও খুব সুন্দর। ছোট্ট হলেও তার সৌন্দর্য্য কিন্তু কোনো অংশে কম নয়। তাই রাতের বেলায় সেখানে দাঁড়িয়ে আমি ছবি তুললাম। কিছুক্ষণ বাদে গাড়ি এলো, আমরা সমস্ত কিছু নিয়ে গাড়িতে উঠে রওনা করলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
শুভর জন্য তখন চিন্তা হচ্ছিলো, কারণ ওকে বাইক নিয়েই ফিরতে হবে। আর যে রাস্তা দিয়ে আমাদের ফেরার কথা, রাতের বেলায় ওই রাস্তা দিয়ে অনেক বড় বড় লরি মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করে। যার মধ্যে দিয়ে বাইক নিয়ে যাতায়াত করা আসলেই অনেকটা ঝুঁকিপূর্ন। সেই কারণেই চিন্তা হচ্ছিলো, যাইহোক ওকে ধীরে ধীরে আসতে বলে আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমরা বাড়িতে ঢোকার মিনিট কুড়ি বাদেই শুভও বাড়িতে চলে এসেছিলো।
এইভাবে আমাদের ২২ দিনের যাত্রা সম্পূর্ণ করে বাড়ি ফিরেছিলাম। মাঝে কয়েকটা দিন কাটতে না কাটতেই আগামীকাল আবার গন্তব্য হবে এইমস। কারণ এদিন শ্বশুর মশাইয়ের এন্ডোস্কোপি করার দিন পড়েছে। ফলতো কাল ভোরবেলা আবার ওনাকে নিয়ে সেখানে যেতে হবে।
যাইহোক বাড়ি ফেরার দিনের গল্প ও কিছু মুহূর্ত আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে।
Congratulations
This post has been curated by
Team #5
@mikitaly
Thank you so much for your support @mikitaly ma'am. 🙏