Better life with steem// The Diary Game// 09th February,2025

in Incredible India10 days ago
IMG_20250211_234958.jpg
"কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

রুটিন মাফির জীবন যাপনে হঠাৎ করে শাশুড়ি মায়ের শরীর খারাপের কারণে, গততিন থেকে একটু বিঘ্ন ঘটেছে ঠিকই, তবে সবকিছু সামনে নিয়ে মোটামুটি দিনগুলো কেটে যাচ্ছে।

আশাকরি আপনাদের সকলের দিনগুলো ও বেশ ভালো কাটেছে। অনেকদিন হলো দিন-যাপনের গল্প আপনাদের সাথে তেমন ভাবে শেয়ার করা হয়ে ওঠে না। তাই ভাবলাম সাপ্তাহিক ছুটির দিন অর্থাৎ গত রবিবার দিনটি কিভাবে কাটিয়েছিলাম। আজ না হয় সেই গল্পই করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

IMG_20250209_200754.jpg
"শীতকালীন ফুল"

রবিবার মানেই সকালবেলা ফোনের অ্যালার্মে নয়, ইচ্ছামতন ঘুম ভাঙ্গবে এই প্রত্যাশা নিয়ে আগেরদিন রাতে শুতে যাই। তবে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে ওঠার কারণে, এই রবিবার দিনটায়ও যেন একই সময়ে ঘুম ভেঙে জানান দেয় সকাল হয়েছে। তবে জোর করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার কোনো উপায় ছিল না এই রবিবার।

কারণ শনিবার ছিল একাদশী। আর রবিবার পারণ, তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উঠে স্নান সেরে, পুজো দিয়ে নিয়মটি পালন করার তাগিদেই বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। মাঝে দুই একদিন ঠান্ডা না থাকলেও, আবারও কিন্তু বেশ শীত লাগছে সকালের দিকে। যদিও দুপুরে রোদ্দুরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তখন আবহাওয়াটা বেশ ভালোই লাগে, তবে আর কয়েকদিন পর থেকে এই রোদ্দুরটাই সহ্য করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

IMG_20250209_231824.jpg
"পারণের পুজো শেষ করার পর তোলা ছবি "

ফ্রেশ হয়ে ঠাকুর ঘরের কাজ গুলিয়ে, স্নান করেই পুজো দিতে বসলাম। ইতিমধ্যে শাশুড়ি মা উঠে ঠাকুরের পুজোর ফুল তুলে, শশুরমশাইকে চা দিয়ে নিজেও চা খেয়েছেন। আমি পুজো দিচ্ছি এমন সময় তিনি আবার বিছানায় এসে শুলেন। আমি ভেবেছি হয়তো রান্নার দেরি আছে, তাই একটু সময় শুয়েছেন। কিছুক্ষণ বাদে খেয়াল করি উনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাই আর না ডেকে আমাদের শুভর জন্য চা বানিয়ে নিয়ে গেলাম উপরে।

IMG_20250209_200925.jpg
"শুভর জন্যে চা, আমি দুটো বিস্কুট খেলাম"

কিছুক্ষণ বাদে শুনলাম শাশুড়ি মায়ের অসম্ভব পেট ব্যাথা করছে। শুভ ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি ওনার ওষুধ আর ফেরার পথে কচুরি নিয়ে এসেছিলো দোকান থেকে ব্রেকফাস্ট এর জন্য। আর আমি নিজের জন্য প্রেশার কুকারে একটু খিচুড়ি বানিয়ে নিয়েছিলাম, যেহেতু পারবেন দিন আমি নিরামিষ খাব।

IMG_20250209_200859.jpg
"শুভর ব্রেকফাস্ট-কচুরি"

কনটেস্টের উইনার অ্যানাউন্সমেন্ট এর পোস্ট করতে গিয়ে সেদিন অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। সমস্যা মূলত আমার ফোনের। এতো পরিমাণে হ্যাং করছিল যে ফোন চালাতে চালাতে আমার মাথায় হ্যাং হয়ে গিয়েছিল। সেই সব কাজে অনেকটাই লেট হয়ে গিয়েছিলো। অন্যদিকে শাশুড়ি মায়ের শরীরটা অনেক বেশি খারাপ ছিলো। ফলে দুপুরের রান্নার চাপটাও মাথার উপরে ছিলো। এরপরে অনেক কষ্টে পোস্ট চলে গেলাম রান্না ঘরে।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

রান্না করার কাজটা আমার খুব একটা পছন্দের নয়, বিশেষ করে রোজকার মাছ, ডাল, ভাত রান্না করতে আমার ভালো লাগে না। বিষয়টা শাশুড়ি মা ও জানে। তাই দুপুরের রান্না তিনিই করেন। তবে শরীর খারাপ হলে তো আসলে কিছু করার নেই, তাই বাধ্য হয়ে আমাকেই করতে হলো।

আরো বিরক্ত লাগছিল যেহেতু আমি সেগুলো কিছুই খাবো না। তাই প্রথমে মাছ, ডাল আর একটা সবজি রান্না করে, আবার পুনরায় গ্যাস ভালো করে মুছে নিজের জন্য একটি সবজি রান্না করলাম। তার সাথে বেগুন ভেজে নিয়েছিলাম।

IMG_20250209_200529.jpg
"কুমড়ো ফুল ভাজা হচ্ছে"
IMG_20250209_200510.jpg
"কুমড়োর ফুল"

পরে ফ্রীজ খুলে দেখি তাতে কুমড়ো ফুল রাখা আছে। তাই আর দেরি না করে কয়েকটা ফুলও ভেজেছিলাম। আসলে রবিবার দিন যেহেতু শুভ বাড়িতে থাকে, আর এই ধরনের বড়া গরম ভাত ছাড়া খেতে একদমই ভালো লাগে না। তাই শাশুড়ি মা চেষ্টা করে এই বড়া বা বেগুনি কিংবা বাটা জাতীয় খাবার গুলো, রবিবার দুপুরে রান্না করার, যাতে সকলে মিলে একসাথে গরম ভাতের সাথে মিলে খেতে পারি।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে পিকলুর পিছনে অনেকটা সময় দিতে হলো। ওকে খাওয়ানো, ওষুধ দেওয়া এই সমস্ত করতে করতে অনেকটা সময় পার হলো। তারপর বসলাম ফোনটা ঠিক করতে, না হলে কাজ করতে খুব সমস্যা হচ্ছিলো।

এগুলো করতে করতে কখন সন্ধ্যা হয়েছে বুঝতে পারিনি, তাই সন্ধ্যা পুজো দিয়ে বুমিং এর কাজ করতে বসে গেলাম। গোটা দিনে কমিউনিটির কাজ খুব বেশি দেখার সুযোগ হয়নি, মোটামুটি সাংসারিকভাবে সেদিন তুলনামূলক বেশি সময় দিতে হয়েছে, তার উপর ছিলো ফোনের সমস্যা।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

IMG_20250209_200643.jpg
"মশালা পপকর্ন"

রাতের দিকে তেমন কাজ ছিল না ঠিক, তবে ফোন ঠিক করার জন্য অনেক সময় ব্যয় হয়েছিলো। তাই সেই ফাঁকে শুভ আর আমি মিলে পপকর্ন খেলাম। তারপর শাশুড়ি মায়ের ব্যথা কমছিল না বলে, তাকে গরম জল, লবন-চিনির জল, স্যালাইন জল এই সমস্ত কিছু মাঝে মাঝে তৈরি করে দিতে হচ্ছিলো।

IMG_20250209_195952.jpg
"শুভর ডিনার"

রাতের বেলায়ও তিনি কিছু খেতে চাইলেন না। শুধু অল্প একটু লবন জলের মধ্যে দুমুঠো মুড়ি ভিজিয়ে দিলাম। শশুর মশাই ও শুভ রুটি খেয়েছিলেন। আর আমার জন্য ভাত রাখাই ছিলো সেটুকু গরম করেই সবজি দিয়ে খেয়েছিলাম। সারাদিন শাশুড়িমা বিছানা থেকে উঠতে পারেননি। তাই বলতে পারেনা সারাটা দিন সময় কোথা দিয়ে পার হয়েছে বুঝতে পারিনি।

আর পাঁচটা দিন একটা নিয়ম অনুসারে কাজ চলে। আমি কিছু কাজ করি, আর শাশুড়ি মা কিছু কাজ করেন। তবে হঠাৎ করে যখন সেই সম্পূর্ণ কাজের দায়িত্ব নিজের উপরে পড়ে, একটু টালমাটাল অবস্থা হয় ঠিকই কিন্তু তার সাথেও দিনটা বেশি ব্যস্ততার মধ্যেই কাটে।

যাইহোক জীবনের প্রতিটা দিন যে সমান যাবে না, এটা আমরা সকলেই জানি। তাই মাঝেমধ্যে এমন দিন যাপন হলে কথা গুলো পুনরায় আরও একবার মনে পড়ে যায়। যাইহোক ভালো থাকবেন সকলে, সাবধানে থাকবেন। সকলের সুস্থ প্রার্থনা করি। ভালো থাকবেন।

5c08ed51-26dc-462f-94f6-6f9e6e0fa2b4.gif

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328TqCvhjhspw5NBPbWMShaDD4yjYoZFwyWS9XH9YcrMyqTMGHiWpaGrwDGkXYMbDHgxptYZq3ueRpXapEAPkAuu3vPaZSXJ2USdTC.png

Sort:  
Loading...
 9 days ago 

আপু আপনার দিনযাপনের সুন্দর বর্ণনা পরে খুব ভালো লাগলো। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা,শাশুড়ির মায়ের অসুস্থতা সংসারের দায়িত্ব সামলানো সবকিছুই খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে আপনার যত্ন ও দায়িত্ববোধ খুব সুন্দর স্পষ্ট। রান্না করা আপনার পছন্দ না হলেও পরিবারের প্রয়োজন অনুযায়ী সব সামলে নেওয়ার মানসিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনার শাশুড়ি মায়ের দূরত্ব সুস্থতা কামনা করি।

 6 days ago 

আসলেই তাই, রান্না করা অপছন্দ হলেও প্রয়োজনে রান্না করতেই হয়। কারণ অনেক সময় জীবনে অনেক কাজ অনিচ্ছা সত্ত্বেও করতেই বোধহয় আমরা মেয়েরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। শাশুড়ি মা আপাতত সুস্থ আছেন, তবে ওনার জন্য প্রার্থনা করার জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। চেষ্টা করি দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত কিছু সামলে নেওয়ার, তবে কতটুকু পারি সেই বিষয়ে সত্যি আমি নিজেও সন্ধিহান। কারণ যতই করা হোক না কেন তবুও কিছু জিনিস যেন ঠিক বাদ থেকে যায়।ভালো লাগলো মন্তব্য পড়ে। ভালো থাকবেন

 9 days ago 

আপনার দিনযাপনের বর্ণনা সত্যিই খুব হৃদয়স্পর্শী। সংসারের দায়িত্ব আর শাশুড়ি মায়ের অসুস্থতার মধ্যে আপনি যেভাবে সবকিছু সামলে নিয়েছেন, সেটা অসাধারণ। আপনার মনের শক্তি এবং ভালোবাসা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আশা করি শাশুড়ি মা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন,তার জন্য এই দোয়াই করি।

 6 days ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। সত্যি বলতে আমরা মেয়েরা না চাইতেই সংসারের প্রতিটা দায়িত্বের মধ্যে এমন ভাবে আটকে যাই যে, সেটা থেকে বেরোনোটা কঠিন হয়ে পড়ে। আর একসঙ্গে থাকাতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়ি যে, ভালোবাসা কখন যেন তৈরি হয়ে যায়। তবে উল্টো দিকের মানুষগুলো যদি সেগুলো না বোঝে তখন কষ্টটাই অব্যক্ত থাকে। দায়িত্ব ভেবে সমস্ত কাজগুলো করার চেষ্টা করি,আর যখন আপনাদের মন্তব্যগুলো পড়ি সত্যিই ভালো লাগে। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

 2 days ago 

ঘরের মধ্যে যদি এতজন মানুষ অসুস্থ থাকে তাহলে আপনার নিজের মাথা হ্যাং করবে এটাই স্বাভাবিক তারপরেও আপনি সঠিকভাবে নিজের কাজগুলো সম্পন্ন করে যাচ্ছেন এটা দেখেই অনেক বেশি ভালো লাগছে আসলে আমরা যতই চেষ্টা করে যে একটা দিন নিজের মতো করে ঘুম থেকে উঠবো কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠে না কারণ প্রতিদিনের অভ্যাস আমাদের থেকে যায় একই সময়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ি।

উইনার এনাউন্সমেন্ট এর কোর্স করতে গিয়ে আপনার অবস্থা একেবারেই খারাপ হয়ে গেছে আমার মনে হয় আপনার মোবাইলটা পরিবর্তন করা খুব প্রয়োজন এত পরিমাণে যদি মোবাইল হ্যাং করে তাহলে কাজ করার ক্ষমতাটা আমি আরো আগেই হারিয়ে ফেলতাম আমার মোবাইলে সামান্য একটু সমস্যা দেখা দিলেই ইচ্ছে করে মোবাইলটা কে ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভেঙে ফেলি আপনি তাও ধৈর্য ধরে কাজ করছেন।

রাতের বেলায় শরীর খারাপ থাকার কারণে আপনার শাশুড়ি মা খাবার খেতে চাইনি শুধুমাত্র একটু মুড়ি খেয়েছিলেন আপনারা সবাই মিলে রাতের খাবারটা খুব সুন্দরভাবেই উপভোগ করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ এত ব্যস্ততার মাঝেও আপনার একটা দিনের কার্যক্রম আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।