"অপরিকল্পিত ভাবেই সুন্দর কাটলো এই বছরের নবমীর রাতটা- প্রথম পর্ব"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
দেখতে দেখতে পুজো শেষ, আজ বিজয়া দশমী। তাই হিসেব মতন এই বছরের পূজোর আজই শেষ দিন। মা দুর্গার আসার অপেক্ষার দিনগুলোই যেন সবথেকে বেশি আনন্দের হয়। তবে বিদায় বেলা সকলের মনের কোণে খারাপ লাগা উঁকি দেয়। যার খানিকটা প্রকাশিত হয়, আর খানিকটা থাকে অপ্রকাশিতই।
তবে মায়ের বরণ এবার করা সম্ভব হলো না। সত্যি বলতে এ বছর তবু অশৌচের কথা ভেবে বোধহয় খারাপ লাগছে, যে অশৌচের কারণে না অঞ্জলি দিতে পারলাম, আর না মাকে বিদায় জানানোর সুযোগ পেলাম। তবে অন্যান্য বছর অশৌচ না থাকা সত্ত্বেও কখনো কখনো মাকে বরণ করতে যাওয়া হয়ে ওঠে না।
![]() |
---|
যাইহোক আমার আগের পোস্টে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম আমি মামা বাড়িতে গিয়েছিলাম। কারণ অনেকদিন হয়েছে মামাবাড়িতে যাওয়া হয়নি। আর পূজোর মধ্যে বাড়ি থেকে বেরোনো হয়নি, কিছু ব্যক্তিগত কারণে মনটা খারাপই ছিলো। তারপরেও ননদের বাড়ি থেকে পরদিন সকালে মামা বাড়িতে গিয়েছিলাম।
তবে হঠাৎ করেই সমস্ত প্ল্যান কেমন যেন চেঞ্জ হয়ে গেল সন্ধ্যার দিকে। আমার দিদি অর্থাৎ তিতলি, তাতান, দিদি এবং জামাইবাবু এসে হাজির হলো মামা বাড়িতে। কারন পুজোর মধ্যে ওরাও কোথাও বেরোয়নি। আমি মামার বাড়িতে গিয়েছি শোনার পরে প্ল্যান করে ওরাও পৌঁছে গিয়েছিলো, সকলে মিলে একটা রাত মামীর কাছে থাকবো এই আশাতে।
![]() |
---|
মামীর মধ্যে আমরা যেন মায়ের ঝলক দেখতে পাই। এমনটা শুধু আমার ক্ষেত্রে হয় তা নয়, দিদির ক্ষেত্রেও এমনটাই। তাই আমি গিয়েছি শুনে ও আর না এসে থাকতে পারেনি। তবে ওরা এসে ভালোই হয়েছে জানেন, বহু বছর বাদে সকলে একত্রিত হয়েছি, একটা দিন সাথে থেকেছি, মামীর হাতের রান্না খেয়েছি, সবকিছু মিলিয়ে একটা ভালো দিন কেটেছে আজ।
প্রথমে কথা ছিলো দিদিরা সন্ধ্যার পর আসবে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে হাবরা স্টেশন থেকে মামীবাড়ি পর্যন্ত আর কোনো ভ্যান বা টোটো যাবেনা। কারন তার আগেই নো এন্ট্রি করে দেয়, যাতে মানুষ হেঁটে ঠাকুর দেখতে পারেন। সে কথা জানানোতেই দিদিরা বললো দুপুরের পরপরই রওনা করবে।
তাই আমাদের দুপুরের খাওয়া শেষ হওয়ার পরপরই দিদিরা চলে এসেছিলো। ওরা কিছুতেই খাবে না কিন্তু মামি কিছুই শুনলো না। অল্প করে ওদের সবাইকে খেতে দিলো। তারপর সকলে মিলে বসে অনেকক্ষণ গল্প করলাম আমরা।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
যাইহোক সন্ধ্যার পর তিতলি তাতানের জোরাজুরিতে আমরা রাজি হয়েছিলাম ঠাকুর দেখতে যাওয়ার জন্য। আমার মামার মেয়ে শ্বেতাও পুজোর মধ্যে ঠাকুর দেখতে বেরোয়নি। তাই সে কথা শুনে সকলেই ঠিক করলাম মামীর বাড়ির আশেপাশের দু তিনটে ঠাকুর দেখে আসা যেতেই পারে। আমার খুব একটা ইচ্ছে করছিলো না, কিন্তু দিদি এবং বোনের জোরাজুরিতে আমিও তৈরি হয়ে গেলাম যাওয়ার জন্য।
মামিদের বাড়ির পাশেই তিনটে ঠাকুর হয়েছে। তাই এই তিনটে ঠাকুরের দেখবো, সেটাই ঠিক করেছিলাম। তারপর আর হেঁটে অন্য আর কোথাও ঠাকুর দেখতে যাওয়া আমার পক্ষে অন্তত সম্ভব ছিলো না। আমার দিদির চুল অনেক বড় হয়েছে, তাই ওকে চুলটা ছেড়ে যাওয়ার জন্য আমরাই বলেছিলাম।
কয়েকদিন বাদে ও চুল কেটে ফেলবে। আসলে ওর কিছু মানত করা রয়েছে, সেই সবগুলো হয়ে যাওয়ার পর ও চুল কেটে ফেলবে। কারণ ওর প্রফেশনে এতো বড় চুল রাখাটা একটু কষ্টেরই বটে। যাইহোক এরপর আমরা সকলে মিলে তৈরি হয়ে বেড়োতে যাবো, ঠিক সেই মুহূর্তেই তাতান ঘুমিয়ে পড়লো।
![]() |
---|
![]() |
---|
ঘুমন্ত বাচ্চাকে কোলে করে নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না ভেবে, ওকে মামীর কাছে রেখেই আমরা তিন বোন, তিতলি এবং দাদা বেরিয়ে পড়লাম। মামা বাড়ির একদম পাশেই "আমরা সবাই ক্লাব" র প্যান্ডেলটি প্রথম দেখতে গিয়েছিলাম। যেটা খুবই সুন্দর ছিলো। এই প্যান্ডেলের থিম ছিল নারী শক্তি।
খুবই সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ প্যান্ডেলটির সাজিয়ে ছিলো। আর মানুষেরও ঢল নেমেছিলো প্রচুর। যেহেতু নবমী ছিলো আর তার পরদিন যেহেতু দশমী তাই সেদিন ভির অনেকটাই বেশি ছিলো। আর দুপুরের দিকে মেঘলা আকাশ ছিলো বলে আবহাওয়াটাও অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলো। ফলতো মানুষের বেরোতে খুব একটা সমস্যা হয়নি।
![]() |
---|
যাইহোক ওখানে দাঁড়িয়ে কম বেশি কিছু ছবি তুললাম। এরপর প্যান্ডেলের বেশ কিছু ছবি তুলে ধীরে ধীরে মানুষের ভিড়ের সাথে এগিয়ে গেলাম ভিতরে মায়ের দর্শন করতে। অন্যান্য মন্ডপের তুলনায় ঠাকুরটা একটু অন্যরকম তৈরি করেছিলো।
![]() |
---|
তবে এখানে যে প্রতিমার পুজো হয়েছিলো সেটি কিন্তু অন্যান্য প্রতিমার মতনই ছিলো। তবে আকারে অনেকটা ছোটো ছিলো। আপনারা হয়তো উপরে ছবিটা দেখে বুঝতে পারবেন।
![]() |
---|
প্যান্ডেলের প্রবেশ পথ এবং বাহিরপথ আলাদা ছিলো। বাহির পথ থেকে বেরিয়েই একদম সামনে চোখে পড়ল শ্যামা মায়ের একটি মন্দির। আসলে এই মন্দিরে শ্যামা মায়ের সারা বছরই পূজো হয় এবং বছরের একটা নির্দিষ্ট দিনে, অনেক বড় আয়োজন করে সকলে মিলে সেখানে শ্যামা পূজা করে।
যাইহোক সেখানে ঠাকুরটিকে দেখে বেশ ভালো লাগলো। এরপর আমরা আরও দুটো ঠাকুর দেখেছিলাম। তবে সেই সম্পর্কে একটা পোস্টে লিখলে পোস্টটা অনেক বড় হবে, তাই পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
নবমীর দিনের বাকি সময়টুকু ঠিক কিভাবে উপভোগ করেছিলাম। মামাবাড়িতে কিভাবে সময় কাটালাম, সবটুকু পরের পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।