"মানসিক ভাবে আজ ভীষন ক্লান্ত"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশাকরি সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কাটুক, সেই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শুরু করছি।
গতকাল থেকে হঠাৎ করে মানসিক ভাবে ভীষন ক্লান্ত বোধ করছি। জীবনের অনেক না পাওয়া অনুভূতি গুলো যেন হঠাৎই ভিতর থেকে কান্না হয়ে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। অনেকদিন বাদে গতকাল থেকে এমন অনুভূতি কাজ করছে নিজের মধ্যে। ইচ্ছা করছে চিৎকার করে কাঁদি, আর মনের ভিতরে জমিয়ে রাখা অভিমান, অভিযোগ গুলো আজ জানিয়ে দিই তাদের, যাদের জন্য আমার এই মুহূর্তে আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে।
![]() |
---|
গতকাল সন্ধ্যা বেলায় দরকারে বাজারে গিয়েছিলাম। ট্রেনের আওয়াজ পেতেই একবার মনে হলো ট্রেন ধরে চলে যাই কোথাও। পরমুহূর্তেই মনে হলো যাবো কোথায়? মন যদি অশান্ত থাকে পৃথিবীর কোনো প্রান্তে গিয়েই শান্ত মেলে না।কারন মাথা ও মনের যুদ্ধ চলে সর্বত্র।
ফিরে এলাম বাড়িতে। জীবন যে সিনেমা নয় তা এখন বুঝতে শিখেছি। তাই আমার চলে যাওয়ার কারন বুঝে কেউ আমাকে ভালোবেসে ফিরিয়ে আনবে এসব আজ আর মনে হয় না। কারণ জীবনের বাস্তবতার ভয়ংকর সত্যি আমি জেনে গেছি। এই সকল অনুভূতিগুলি আমার বড্ড পরিচিত। কারণ মাঝে মাঝেই এই অনুভূতির লড়াই চলে আমার মনের ভেতরে।
তবে বয়সের সাথে সাথে মানুষ কতখানি পরিণত হয়, সেটা এখন যেন নিজেকে দেখে নিজেই অনুভব করতে পারি। একটা সময় ছিলো যখন নিজের খারাপ লাগা গুলো অবলীলায় প্রকাশ করতাম। যদিও তখনও সেগুলো মূল্যায়িত হতো না। তবে প্রকাশ করার পর আফসোস করতাম কেন বলতে গেলাম।
তবে সেই কেনোর উত্তর খুঁজতে খুঁজতে আজ সকল অনুভূতি অপ্রকাশিত রাখতে শিখেছি। হ্যাঁ মনের ভার বেড়েছে বটে, তবে অন্যের দিক থেকে অবজ্ঞা পাওয়ার অবকাশ কমে গেছে, এটা খানিকটা হলেও অস্বস্তির হাত থেকে বাঁচিয়েছে আমাকে।
![]() |
---|
একটা সময় ছিলো যখন সকল রাগ অভিমান সকলের সামনে কান্না হয়ে বেরিয়ে আসতো। উল্টো দিকের মানুষগুলো ক্ষণিকের সহানুভূতি দেখালেও, সেই কান্না নিয়ে পরমুহূর্তেই যে সমালোচনা করতে পারে এটা বিশ্বাস করতে বেশ কিছু বছর সময় লেগেছে আমার।
তবে শেষ পর্যন্ত যখন বুঝতে পেরেছি, তখন তাদের কাছে আমার একান্ত নিজস্ব অনুভূতিগুলো প্রকাশ করা বন্ধ করেছি ধীরে ধীরে। আজ হয়তো মানুষগুলো ভাবে আমি আর কাঁদি না। তবে পার্থক্য এখানেই আমার কান্না তারা আর দেখতে পায় না। কারণ যা আমার নিজস্ব, একান্ত ব্যক্তিগত, কাছের মানুষ ভেবে যাদের কাছে তার প্রকাশ করতাম, সেটা যে শুধুই তাদের সমালোচনার বিষয় হতে পারে, সেটা বুঝতেও আমার সময় লাগলে বেশ কিছু বছর।
সময় লাগুক, সময় সবকিছু ঠিক করুক অসুবিধা নেই। কিন্তু নিজেকে ঠিক করার উপায়, আর ঠিক রাখার অনবরত চেষ্টা করতে করতে সত্যিই কখনো কখনো ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আর এই ক্লান্তি শুধুমাত্র আমার আমি এমনটা বলবো না। কারণ আমি জানি আমার মতো এমন অসংখ্য মানুষ আছে যারা প্রতিদিন নিজেকে ঠিক রাখার এই অদম্য লড়াই লড়ে চলেছে। জীবন থেকে হার মেনে নেওয়া খুব সহজ, জীবনটাকে চালনা করাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
![]() |
---|
আমরা যখন মানুষ তখন অনুভূতি আমাদের ভিতরে থাকবেই। খারাপ লাগা, ভালোলাগা, কষ্ট, সুখ, দুঃখ, আনন্দ, হাসি এই প্রত্যেকটা আমাদের খুব সহজাত অনুভূতি। তাই এগুলো আমার মধ্যে থাকবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে যেটা মনে রাখতে হবে সমস্ত অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য আশেপাশের সমস্ত মানুষ উপযুক্ত নয়।
তাই জীবনে সেই মানুষটিকে খুঁজে পাওয়া দরকার, যার কাছে আপনার এই অনুভূতিগুলি কখনো হাস্যকর হবে না, কখনো আলোচনার বিষয় হবে না, তবে দুঃখের বিষয় কি জানেন? আমরা সেই মানুষগুলোকে খুঁজে পেতে বড্ড দেরি করে ফেলি।
মোহোগ্রস্ত হয়ে আমরা শুধু মরীচিকার পিছনেই ছুটে বেড়াই। মরীচিকার সৌন্দর্য্য এতটাই বেশি যে সেই মানুষগুলো ঢাকা পড়ে যায়, যারা সত্যিকার অর্থে আমাদের অনুভূতির মূল্যায়ন করতে পারে। তবে ঈশ্বর আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন মানুষ পাঠায়, যারা সঠিক সময়ে তাকে চিনে নিতে পারে তাদের অনুভূতিগুলি আজীবন কাল মূল্যায়িত হয়।
![]() |
---|
আর যারা সেটা পারেন না তারা আমার মতো করে অনুভূতি লুকানোর অদম্য চেষ্টা করে চলে। যাতে নিজের অনুভূতিগুলি মূল্যায়িত না হলেও, অন্ততপক্ষে যাতে সমালোচিত না হয়।
যাইহোক গতকাল থেকে এমন কিছু লড়াই চলছে মনের ভিতরে, যে লড়াইয়ের কোনো শেষ নেই। শুধু নতুন কোনো মুহূর্ত, কোনো পরিস্থিতি এই লড়াইয়ে ইতি টানতে পারে। শুধু অপেক্ষা করছি সেই রকম একটা পরিস্থিতির। কারন এইভাবে চলতে থাকলে হয়তো নিজের বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাবে, যেটা একেবারেই আমার কাম্য নয়। তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে আমার এই বর্তমান পরিস্থিতি তিনি পরিবর্তন করেন। ভালো থাকবেন সকলে।
এরকম একটা সময়ের ভেতর দিয়ে আমি দীর্ঘসময় কাটিয়েছি তাই আপনাকে বুঝতে পারছি আপনার ওপর দিয়ে কি চলছে ।আমারও মনে হতো সবকিছু ছেড়ে চলে যাই যেদিকে চোখ যায় ।কিন্তু যাবোটা কোথায় ? আর সেই সাথে ছিলো দায়িত্ব ।তাই চিন্তা মাথার মাঝে আসলেও সেটাকে পাশে সরিয়ে রেখে হাসিমুখে দায়িত্ব পালন করে গিয়েছি।
একসময় মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে নিজেকে ঠিক রাখতে মনোচিকিৎসক এর কাছেও গিয়েছি এবং উপকারও পেয়েছে ।তবে এখন কাটিয়ে উঠেছি সেই অবস্থা ।
সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপনিও যেন দ্রুত এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারেন এবং আপনার জীবনে মানসিক শান্তি ফিরে আসে।