**"অভিরাজ" হোমস্টেতে থাকার অভিজ্ঞতা**

in Incredible India10 days ago
IMG_20250706_233440.jpg

Hello,

Everyone,

কেমন আছেন আপনারা সকলে? আশাকরি সকলে ভালো আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।

দার্জিলিং ভ্রমনের গল্প শেয়ার করার আগের পোস্টেই আমি আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম, পরবর্তী পর্বে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো অভিরাজ হোমস্টেতে থাকার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। চলুন তাহলে শুরু করি,-

IMG_20250706_232837.jpg

যাইহোক গাড়ি থেকে নামার পর আমাদের লাগেজ হোমস্টের দাদারাই ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিলেন। একজন দাদার সাথে আমরা প্রথমেই পৌঁছে গেলাম আমাদের রুমে। রুমটিতে ঢুকে বেশ ভালো লাগলো।

IMG_20250706_231828.jpg

যদিও তুলনামূলকভাবে আমাদের রুমটি একটু ছোটো ছিলো। তবে সম্পূর্ণ ঘরটা ছিল কাঠের ডিজাইন করা, আর দুপাশে ছোট্ট জানালা। জানালা খুলেই যেন মন ভরে গিয়েছিলো, সেখানকার পরিবেশ দেখে। হাত বাড়ালেই যেন মেঘের ছোঁয়া পাচ্ছিলাম আমরা।

IMG_20250706_232003.jpg
IMG_20250706_231855.jpg

আর সামনের ব্যালকনিটাও ছিল ততখানি সুন্দর। যদিও ব্যালকনির ছবিটা আমি পরদিন সকালে তুলেছিলাম। কারণ আমরা যতক্ষণে সেখানে পৌঁছেছিলাম ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছিলো। তাই পরদিন সকালে উঠেই হোমস্টের সামনে লাগানো অপূর্ব সুন্দর ফুলের বাগানের ছবি তুলতেও কিন্তু ভুল করিনি।

যাইহোক রুমে পৌঁছে সবেমাত্র ফ্রেশ হয়ে আমরা বসেছি। তৎক্ষণাৎ আমাদের একজন দাদা এসে জানালেন আমাদের রুম শিফট করা হয়েছে, তাই লাগেজ গুছিয়ে অন্য রুমে যেতে হবে। আবার সমস্ত কিছু গোছগাছ করে অন্য একটা রুমে গিয়ে একেবারে অবাক হয়ে গেলাম। অনেকটা বড় রুম এবং রুমের সামনে ভিউটা ভীষণ সুন্দর ছিলো।

IMG-20250706-WA0011.jpg
IMG-20250706-WA0009.jpg

একটু বাদেই বাইরে টুপটাপ বৃষ্টি হতে শুরু করলো। রাখি এসে জানালো বৃষ্টি পড়ছে, সকলেই দৌড়ে গেলাম এবং বারান্দায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টি উপভোগ করলাম। আমাদের হোমস্টে থেকে নিচের এলাকাটার টিম টিম আলোগুলো দেখে মনে হচ্ছিল যেন জোনাকি জ্বলছে। এমন একটা পরিবেশে থাকতে পারবো এটা আসলে কখনো ভাবি নি। কেবলমাত্র কল্পনাতেই এমন ভাবনা‌গুলো সীমাবদ্ধ ছিলো। আর কল্পনা যখন বাস্তবে রূপ নেয়, তখন সেটা বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হয় বৈকি।

IMG-20250706-WA0005.jpg

কিছুক্ষণ বাদেই কলিং বেল বাজতে দরজা খুললাম, আসলে ওরা জানতে এসেছিলেন আমরা কে কি চা খাবো। সেখানে লিকার এবং দুধ চা দুটির অপশন ছিলো। তবে আমরা সকলে লিকার চায়ের কথা বলেছিলাম, শুধু আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য একজন দাদা নিজের জন্য এক কাপ দুধ চা অর্ডার করেছিল। এখানে শুধু চা আসবে সাথে কিন্তু কোনো বিস্কুট ওরা দেয় না। তবে আমাদের সাথে বিস্কুট ছিলো।

IMG-20250706-WA0017.jpg
IMG-20250706-WA0015.jpg

হোমস্টে থেকেই সন্ধ্যার স্ন্যাকস আমাদের দেওয়ার কথা ছিলো, তাই চা খাওয়ার পরে আমরা সেটির অপেক্ষা করছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ বাদে আমাদেরকে সেখান থেকে চিকেন পকোড়া দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেকের জন্য চারটি করে পকোড়া ছিলো এবং তারা পকোড়া গুলো একটা হট পটে দিয়েছিল যাতে গরম থাকে। আর তার সাথে ছোট্ট ছোট্ট প্লেট ও টমেটো সস। বেশ‌ মজা করেই পকোড়া খেয়েছিলাম।

IMG-20250706-WA0013.jpg

আমাদের এখানে মূলত চিকেনের পিস গুলোকে ম্যারিনেট করে চিকেন পকোড়া তৈরি করা হয়। তবে ওখানকার পকোড়া দেখলাম চিকেনের কিমা তৈরি করে তারপর বানানো হয়। খেতে যে ভীষণ সুস্বাদু ছিলো একথা বলবো না। তবে অনেকদিন বাদে খেতে পেয়ে মোটামুটি মন্দ লাগছিলো না।

যাইহোক এরপর আমরা বেশ কিছুক্ষণ নিজেদের মতো সময় কাটালাম। তবে আমি খুব সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম, যেহেতু বুমিং এর জন্য আমাকে পোস্ট পাঠাতে হবে এবং আমি কোনো ভাবেই নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলাম না। বান্ধবীদের ফোন থেকেও ওয়াইফাই নেওয়ার চেষ্টা করলাম, কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হলাম। এরপর অগত্যা হোমস্টের মালিকের কাছে গিয়ে সেখানকার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড নিলাম। বৃষ্টির কারণে নেটওয়ার্কের খুবই সমস্যা হচ্ছিলো। তবুও বাইরে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্টে আমি অ্যাডমিন ম্যামকে মেইল পাঠালাম।

তারপর ঘরে গিয়ে সকলে মিলে সারাদিনের তোলা ছবি সবাই সবাইকে শেয়ার করলাম এবং এই সমস্ত কিছু করতে করতে রাতের খাবারের সময় হয়ে এলো। রাতে আমরা চিকেন থালি অর্ডার করেছিলাম এবং সেখানে ডাল, আলু ভাজার পাশাপাশি ছিল চিকেন কষা। সত্যি কথা বলতে গত দুদিনের তুলনায় ওই দিন চিকেন কষাটা খেতে বেশ ভালো লেগেছিল। আসলে ওটা চিকেন কষা নয় বাটার চিকেন ছিলো যেটা খেতে বেশ সুস্বাদুই হয়েছিল। তবে ফোন‌ ঘরে থাকায় ছবি তোলা হয়নি।

IMG-20250706-WA0007.jpg

বাইরে আকাশে‌ তখন চাঁদ দেখতে পেয়ে খাওয়া দাওয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ঘরের সামনের বারান্দায় এসে আরও কিছুক্ষণ নিজেদের মত সময় কাটালাম সকলে। সে এক অনন্য মুহূর্ত। আজ‌‌ আপনাদের সাথে সেকথা শেয়ার করতে গিয়েও মুহুর্তগুলো মিস করছি‌।

তারপর সকলেই ঘুমিয়ে পড়লাম। তবে ওখানে থাকাকালীন দিনটায় নেটওয়ার্কের জন্য ভীষণ সমস্যায় পড়েছিলাম। যতক্ষণ ওখান থেকে না বেরিয়েছি বাড়ির কারো সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি। যাইহোক রাতটা খুব ভালোভাবেই ঘুম হয়েছিলো। পরদিন সকালেই সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ঘুম ভেঙেছিলো‌ আমাদের।

তাই সূর্যোদয়ের পর থেকে আমরা কিভাবে হোমস্টেতে সময় কাটিয়েছি এবং ব্রেকফাস্ট এর পর সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা কোথায় কোথায় ঘুরেছি, সেই আলোচনা হবে পরবর্তী পর্বে। আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো আপনাদের এই অভিরাজ হোমস্টের সময় কাটানোর গল্প পড়ে, তা অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে খুব ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...