হঠাৎ করে আমি ভীষণ অসুস্থ
আসসালামু আলাইকুম
গতকালকে সকালটা অন্যরকম এক যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে শুরু হলো।হঠাৎ করে বুকের এক পাশে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়। এতটাই তীব্র ছিল যে মনে হয়েছিল বুকটা যেন ফেটে যাচ্ছে। তবুও একজন স্ত্রী ও মায়ের মত নিজের দায়িত্ব ভুলে থাকাটা যেন সম্ভব নয়। ব্যথার মধ্যেই রান্না করলাম বাসন ধুয়ে গোছালাম মেয়ের জন্য আলাদা করে রান্না করলাম মেয়েকে খাওয়াইলাম সব কাজ শেষ করে একটা গ্যাসের ওষুধ খেয়ে নিলাম যে হয়তো একটু আরাম পাবো।কিন্তু না ব্যাথাটা একটুও কমলো না। রাতে ব্যথাটা কিছুটা সহনীয় ছিল,হয়তো ক্লান্ত শরীর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাই খুব একটা অনুভব করিনি।
কিন্তু সকালে বিছানা থেকে উঠতে আবার সে আগুনে ঝলসে যাওয়ার মত ব্যথা ফিরে এলো। এবার আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি নাস্তা সেরে আমার হাজব্যান্ডকে বললাম চলো ডাক্তার দেখাতে হবে। উনিও আরেকটুও দেরি করলেন না, মেয়েকে নিয়ে তিন জনে রওনা দিলাম কাছে এক ডাক্তারের কাছে। গিয়েই দেখি মেয়ে আমার আজ যেন ভিন্ন মুডে আছে। মেয়ে আমার বায়না ধরল চিপস খাবে,আবার সেই সাথে চোখ ওয়ালা ক্যান্ডি, না দিলে সে শান্ত হবে না। চিপস সহজেই কিনে দিলাম কিন্তু চোখওলা ক্যান্ডি আমি আগে কখনো খাইনি ফোনে কয়েকবার দেখেছিলাম এটা হচ্ছে চায়না ক্যান্ডি।কি আর করার মেয়ে বায়না ধরেছে তাই কিনে দিলাম।যেহেতু আমি অসুস্থ তাই আমার মেয়েকে শান্ত রাখার জন্য হলেও কিনে দিলাম।
কিন্তু সমস্যাটা হল এই,আমি আগে কখনো এ ধরনের ক্যান্ডি খোলার চেষ্টা করিনি। অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও যখন পারলাম না খুলতে তখন পাশের এক ভাবিকে বললাম ভাবি একটু খুলে দেবেন?তিনি হাসিমুখে খুলে দিলেন অনেক চেষ্টার পর। তখন মনে হল মানুষের একটু সহযোগিতা কত বড় শান্তি এনে দিতে পারে। খুলতে পারছিলাম না আমার মেয়ে তো একপ্রকার রাগ করে বসেছিল। যেই না দেখেছে ক্যান্ডি খোলা গেছে ওর হাসির আর শেষ নেই। এইসব ব্যস্ততা ও অস্থিরতার মধ্যে ডাক্তার দেখালাম। আমার সমস্যার কথা শুনে তিনি কিছু প্রশ্ন করলেন এবং প্রেসক্রিপশনে কিছু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ লিখে দিলেন। সাথে দিলেন একটি গ্যাসের ফাইল যেটা নিয়মিত খেতে হবে এবং কিছু নির্দিষ্ট খাবার পরিহার করতে বললেন।
ডাক্তার ম্যাম বললেন যে এই ওষুধগুলো তিনদিন খান খাওয়ার পরও যদি ব্যথাটা অনুভব করেন তারপরে এসে কয়েকটা টেস্ট করতে দেব সেগুলো করবেন। আমিও মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম।গ্যাসের ব্যাথা এমন ভয়ংকর হতে পারে সেটা নিজের অভিজ্ঞতা না হলে হয়তো কেউই বিশ্বাস করত না। ডাক্তার বললেন আপনার স্ট্রেস লেভেলও একটু বেশি মনে হচ্ছে। বিশ্রাম নিতে হবে পানি খেতে হবে বেশি করে। মসলাযুক্ত ও ভারী খাবার পরিহার করতে হবে। আমি মাথা নাড়লাম বাসার হাজারো কাজ মাথায় ঘুরছিল ঠিকই কিন্তু নিজেকে ভালো না রাখলে সবকিছু সামাল দেবো কিভাবে সব মাথার ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসার সময় মেয়ের মুখটা দেখি সেই চোখ ওয়ালা ক্যান্ডি মুখে দিয়ে কি একটা বিজয়ী হাসি। আমি তাকিয়ে হেসে ফেললাম ব্যথার মধ্যেও এই ছোট্ট আনন্দ গুলো যেন আমাদের জীবনের বড় তৃপ্তি। শেষে এতটুকুই বলবো শুধু নিজের শরীরটাকে সময় দিন ভালোবাসুন। কারন আপনি সুস্থ থাকলেই আপনার চারপাশটা সুন্দরভাবে চলবে। আলহামদুলিল্লাহ আজ একটু ভালো লাগছে বাকিটাও ভালো যাবে ইনশাআল্লাহ।আজ তাহলে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
আমাদের মত মেয়েরা সংসারে অসুস্থ হলে মুখ বুজে তবুও তাকে সংসারের সমস্ত কাজ পড়ে যেতে হয়। অসুস্থ হলেও সন্তান স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে কাজ তো করতেই হবে। সংসারে সমস্ত কাজ ছেড়ে স্বামীর সন্তানকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আপনার সন্তান বায়না করছিল খাওয়ার জন্য। আসলে ওরা তো বাচ্চা। ওরা কতটুকুই বা বোঝে তাই বাইরে বেরোলেই ওদের এটা ওটা খেতে ইচ্ছে করে। যাইহোক ঈশ্বরের কাছে কামনা করি আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। সারাদিনের কাজকর্ম শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।