মেয়েকে নিয়ে পার্কের আনন্দ
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি এবং আমার পরিবার ভালো আছি। আজ আপনাদের জন্য একটা সুন্দর গল্প শেয়ার করতে যাচ্ছি, যা গতকাল আমার মেয়ে আর আমি পার্কে কাটানো একটি আনন্দময় দিন নিয়ে। চলুন তা হলে দেরি না করে শুরু করি।
গতকাল সকালে যখন আমি এবং আমার মেয়ে বাসার মধ্যে একটু সময় কাটাচ্ছিলাম, তখন মনে হলো, আজ একটু বাইরে বের হয়ে খেলা-ধুলা করা উচিত। আমাদের বাসার নিচেই একটি সুন্দর পার্ক রয়েছে, যেখানে বাচ্চাদের জন্য খেলার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। আমার মেয়ে খুবই আনন্দিত হয় যখনই তাকে এই পার্কে নিয়ে যাই। সে তখন খুশিতে লাফাতে থাকে, যেন পৃথিবী তার কাছে সবচেয়ে আনন্দময় জায়গা হয়ে ওঠে। তাই আমি তাকে নিয়ে পার্কে চলে গেলাম।
পার্কে পৌঁছানোর পর, আমার মেয়ে একদম ঝলমলে আনন্দে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। স্লাইড, দোলনা, স্কিপিং রোপ সব কিছুতে সে একে একে খেলছিল। অন্য বাচ্চাদের সাথে মিলিয়ে তার হাসি আর আনন্দ যেন চারপাশে ভরে উঠেছিল। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে তার খেলা দেখছিলাম, খুব ভালো লাগছিল তার মুখে সেই বিশাল হাসি দেখে। মনে হচ্ছিল, এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান স্মৃতি হয়ে থাকে।
সে এতটাই ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল যে আমাকে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর আমি তাকে ডাকলাম, আম্মু! একটু বিশ্রাম নাও। সে ফিরে এসে আমার কাছে এসে বসল।এসময় আমি তাকে কিছু পানি দিলাম এবং আমাদের ছোট্ট কথা বললাম। তারপর, কিছুক্ষণের মধ্যে সে আবার দৌড়ে পার্কের মধ্যে চলে গেল। পার্কে খেলতে খেলতে আমরা আরও কিছু সময় কাটালাম, একে অপরের সঙ্গে দারুণ সময়। এরপর, খেলাধুলা করতে করতে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম। আমি মেয়েকে বললাম, চলো, ক্যান্টিনে গিয়ে কিছু খাই। সে আনন্দের সাথে আমার হাত ধরে বলল, চলো আম্মু!
ক্যান্টিনে এসে বসে আমি এবং আমার মেয়ে কিছু ফুচকা খেতে শুরু করলাম। ফুচকা খেতে খেতে আমরা একে অপরের সাথে হাসিমুখে কথা বলছিলাম। মেয়ে বলল,আম্মু, আর ও খেলবো কত ভালো হবে!তার মুখে এতটা খুশির চিহ্ন ছিল, যেন তার পুরো পৃথিবী সুন্দর হয়ে গেছে। আমি ভাবলাম, কত সুন্দর এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো, যেগুলোই আমাদের একে অপরের কাছাকাছি নিয়ে আসে। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তগুলো এই সহজ, ছোট ছোট সময়গুলোতেই লুকিয়ে থাকে।
আমাদের পাশের টেবিলে একটি ছোট পরিবার বসে ছিল। তাদেরও তাদের বাচ্চা ছিল, যেটি খুবই সোনালী হাসি নিয়ে আমাদের দিকে তাকাচ্ছিল। আমি একটু হেসে বললাম, এটা কি আপনারা প্রতিদিন করেন? তারা মৃদু হেসে বলল, হ্যাঁ, আমরা প্রায়ই এখানে আসি। বাচ্চারা তো শুধু খেলতে চায়, আর আমরা একটু বিশ্রাম নিতে চাই।তাদের কথায় আমি আরও বেশি বুঝতে পারলাম, কেমন সাদামাটা জীবনে আমাদের সময়গুলো আসলেই কত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এতদিন জানতাম, পার্কে আসা বা খেলা, ফুচকা খাওয়া এটা সবই সাধারণ, কিন্তু আজ বুঝলাম এর গভীরতা কত বেশি।
ফুচকা খেতে খেতে আমরা একটু বিশ্রাম নিলাম। পরে মেয়ে বলল, আম্মু, এবার আবার খেলতে যাব?আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম, তারপর বললাম, হ্যাঁ, চল। কিন্তু একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার শুরু করি। মেয়েটি ছুটে চলে গেল, আবার তার সেই আনন্দময় হাসি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়ে গেল। আমি জানি, সে হয়তো এসব ছোট ছোট খেলার মুহূর্তগুলোকেই জীবনের সবচেয়ে বড় সুখ হিসেবে মনে করবে।
এভাবে সারাদিন খেলে, খাওয়া দাওয়া করে, আমাদের সেই ছোট্ট পার্কের দিন শেষ হয়ে গেল। আসলে, এমন ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের কারণ হয়ে ওঠে।
যতই বড় হই, ততই বুঝি, জীবনের আসল সুখ তো আমাদের ছোট ছোট স্মৃতি গুলিতেই লুকিয়ে থাকে। পার্কে কাটানো এই সময়টি আমার জন্য খুবই বিশেষ হয়ে থাকবে। আমার মেয়ের হাসি, খেলা, আর আমাদের একসাথে সময় কাটানোর এই স্মৃতিগুলো আমি চিরকাল মনে রাখব।শেষে, আমি আর আমার মেয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। মনে হচ্ছিল, যতই দিন যায়, ততই আমাদের সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হয়, এই সহজ আনন্দের মুহূর্তগুলোর মাঝে। এই গল্প হয়তো শেষ হলো, কিন্তু আমাদের এই পার্কে কাটানো সুন্দর দিনটি আমার জীবনের এক সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে।
এটি ছিল গতকালের একটি সুন্দর দিন, যা পার্কে কাটানো মুহূর্তের মাধ্যমে জীবনের এক অসাধারণ অংশ হয়ে থাকবে। আশা করি, আপনাদেরও এই গল্পটি ভালো লেগেছে।সবাই ভাল থাকেন সুস্থ থাকেন আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো, মা, মেয়ে মিলে পার্কে ঘুরছেন অনেক সুন্দর একটা আনন্দ মুহূর্ত দিন প্রবাহিত করেছেন। এত সুন্দর একটা আনন্দ মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইল।
ছোট বাচ্চাদের এই একটা সমস্যা তারা যখন খেলনা জিনিস কিংবা কোথাও ঘুরতে যায় তখন তার সাথে কে গিয়েছে সে কথা সে একেবারেই ভুলে যায় আসলে আমাদের জীবনটাই এমন ছোটবেলায় আমরা আমাদের জীবনটাকে কতটা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা হীন ভাবে কাটিয়েছি সেটা আমরা ভুলে গেছি।
দিনশেষে এসে এখন আফসোস হচ্ছে আমরা আমাদের জীবনের সেই মুহূর্তগুলোকে যদি আবার ফিরে পেতাম তাহলে কতই না আনন্দ হতো ওই যে একটা কথা বলে না আল্লাহ তা'আলা আমাদের জন্য যে সময়টা বরাদ্দ রেখেছেন সেই সময়টা কিন্তু আমরা সঠিকভাবেই পার করছি কিন্তু পরবর্তীতে আমরা যে সময়টা চেয়ে নিয়েছি সেই সময়টা আমাদেরকে গাধার খাটুনির মতো কেটে যেতে হচ্ছে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।