চিতই পিঠা ও দুধ পুলি পিঠা বানানোর রেসিপি পর্ব এক
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছে সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি চমৎকার গল্প শেয়ার করব আশা করি এখান থেকে অনেকেরই নানা রকম অভিজ্ঞতা হবে। গল্পটি হলো দুধ পিঠা।এই দুধ পিঠাকে আমরা চিতই পিঠা বা দুধ পুলি পিঠা বলে থাকি ।
দিনের বেলা থেকেই পরিকল্পনা করছিলাম আজকে একটু চিতই পিঠা বানিয়ে দুধের ভিতর ছেরে দেবো মানে চিতই পিঠা দিয়ে দুধ পুলি পিঠা রেসিপি।আগে থেকেই আমি একটা দুধের বোতল পানিতে ভিজিয়ে রেখেছিলাম। রাত বাজে প্রায় সাড়ে আটটা। একবার ভাবতেছি যে আজকে কি পিঠাটা তৈরি করব, না করব না। আবার ভাবতেছি দুধ পানিতে ভিজায়া রাখছি যদি আবার তুলে ফ্রিজে রেখে দেই তাহলে অবশ্যই এটা নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ অনেকক্ষণ ফ্রিজের দুধ বাইরে পানিতে রাখলে সেটা আবার ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই হাজারো চিন্তা মাথার ভিতরে ঘুরতেছে আসলে কি করব।
পিঠা কি আজকে বানাবো না অন্য দিন বানাবো। অনেক ভাবনা চিন্তা করার পর ভাবলাম যে পিঠাটা করেই ফেলি কারণ দুধটা পানিতে ভিজায় রাখছি। এদিকে মেয়েটাও ঘুমিয়ে পড়েছে এই তো সুযোগ। আমার কাছে পিঠা বানানোর খোলাটা ছিল না কারণ এই পিঠা বানানোর জন্য মাটির খোলা প্রয়োজন। তাই আমি চলে গেলাম আমার @karobiamin71 ভাবির কাছে। ভাবি আমাকে দিনের বেলা বলেছিল যে যদি দুধ পিঠা বানাতে চান তাহলে আমার খোলা টা নিয়ে আসেন।অনেক চিন্তা ভাবনা করেই চলে গেলাম ভাবির কাছে ভাবির কাছ থেকে চিতই পিঠা বানানোর খোলাটা হাতে নিয়ে ভাবিকে বললাম ভাবি আমার তো ভয় লাগতেছে পিঠা বানানোর খোলাটা যদি ফুটে যায়।
যেহেতু মাটির খোলা ভয়তো লাগারই কথা কারণ গ্যাসের চুলায় যে কোন সময় ফুটে যেতে পারে। ভাবি আমাকে আশ্বাস দিল যে সমস্যা নেই আপনি নিয়ে যান। তাড়াতাড়ি চলে আসলাম বাসায়, বাসায় আসার পর পিঠা বানানো তে লেগে পড়লাম। সবকিছুই ঠিকঠাক মতো মিশিয়ে যেই না খোলাতে দিয়েছি প্রথমবারেই খোলাটা হালকা ভাবে ফেটে গেল। আমি অনেকটাই ভয় পেয়ে গেলাম এবং তাড়াতাড়ি করে খোলাটা নেমে ফেললাম। আরো যদি বেশি করে ফেটে যায় তখন কেমনটা হবে এই ভেবে আমি তাড়াতাড়ি করে খোলাটা চুলা থেকে নেমে ফেললাম।পড়ে গেলাম খুব চিন্তায় এবার আমি কি করবো।
এতগুলো আটা চিনি অপচয় করব ফেলে দিব এইসব ভাবতে ভাবতেই কেমন যেন লাগছিল। কি করবো এত রাতে রাতও প্রায় অনেকটাই হয়ে গেছে। কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে চলে গেলাম আমার হাজবেন্ড এর কাছে কি করবো বলো না। কিন্তু আমার হাজব্যান্ড খুব সুন্দর ভাবে একটা বুদ্ধি বের করে দিল। ঘরেই ছিল আমার একটা মাটির হাড়ি। যেহেতু আমি শহর অঞ্চলে থাকি।
শহর অঞ্চলের খুব একটা মাটির হাড়ি দেখা যায় না কিন্তু আমার হাজবেন্ড আমাকে সুন্দর একটা রং করা মাটির হাড়ি এনে দিয়েছিল। সেটা আমি অনেক যত্ন করে রেখেছিলাম যে কখনো যদি কাজে লাগে এটা কাজে লাগাবো।
আমার হাজব্যান্ড আমাকে মনে করে দিল যে তুমি মাটির হাড়িটা নিয়ে আসো আমি তোমাকে সুন্দর করে একটা বুদ্ধি বের করে দেই এই পিঠা বানানোর জন্য। আমি তাড়াতাড়ি করে মাটির হাড়িটা নিয়ে এসে আমার হাজবেন্ডের কাছে দিলাম। আমার হাজব্যান্ড খুব সুন্দর ভাবে মাটির হাড়িটা প্রস্তুত করে দিতে চাইলো কিন্তু মুহূর্তে মাটির হাড়িটা একটু এলোমেলোভাবে ভেঙ্গে গেল। যাইহোক এই ভাঙ্গাচোড়া মাটির হাড়িটা দিয়েই আমি সুন্দর করে পিঠা বানানো শেষ করলাম। আলহামদুলিল্লাহ সব কিছুই আমার ভালো হয়েছে পিঠাটাও দারুণ হয়েছে নরম,খেতেও মাশাল্লাহ অনেক মজা হয়েছে।
যাইহোক আমার একা একা ভাবতে অনেক ভালো লাগতেছে যে আমার এরকম বিপদের সময়ে আমি আমার হাজব্যান্ড কে পাশে পেয়েছি এবং সে আমাকে পিঠা বানাতেও সাহায্য করেছে। যে মাটির খোলা টা আমাকে প্রস্তুত করে দিয়েছিল আমার হাজব্যান্ড সেটাতে আমি প্রথমে পিঠা বানাতে পারিনি আমার পিঠাটা নষ্ট হয়ে গেছে আমার হাজব্যান্ড আমাকে হাতে কলমে শিখিয়েছে যে এই ভাবে মাটির খোলাতে চিতই পিঠা বানিয়ে দুধের ভিতর ভিজাতে হয়। আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ এত ভাগ্য করে একটা আমি হাজবেন্ড পেয়েছি। আমার মনে হয় প্রতিটি মেয়েই চাই এরকম একটা হাজবেন্ডকে,সব সময় পাশে থাকবে সব রকম বিপদ আপদে সাহায্য করবে।
অবশেষে সব কাজ শেষ করে রান্নাঘরটা খুব সুন্দর ভাবে রান্নাঘরটা গুছিয়ে মুছিয়ে ঘুমাতে চলে গেলাম। আসলে যখন আমি এই পিঠাটা তৈরি করতে পারছিলাম না রান্নাঘরের অবস্থা একদম এলোমেলো করে ফেলছিলাম। তবে অনেকটা ধৈর্য নিয়ে ভাবতে লাগলাম আসলে কি করবো তখন আমার হাজবেন্ড এর কাছে গেলাম এবং সবকিছু খুলে বললাম।
যাই হোক খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের আরেকটি পর্বে আমার পিঠা বানানোর রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। আজ তাহলে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শীতকালে পিঠে পুলি খাওয়ার মজাই আলাদা। পৌষ সংক্রান্তির দিন আমাদের সকলকে পিঠাপুলি তৈরি করতে হয়। আপনাদের মত আমরাও মাটির সরা করে পিঠে তৈরি করি। পিঠে তৈরি করতে সকলেরই রান্নাঘর একদম এলোমেলো হয়ে যায়। আপনার পিঠা তৈরির রেসিপি অপেক্ষায় থাকবো।
পিঠা আমার প্রিয় একটা খাবার, পিঠা খেতে পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। তবে এটা খেতে যেমন মজা এটা তৈরি করতেও ঠিক ততটাই কষ্ট।
অনেকটা সময়, ধৈর্য এবং প্যাশন নিয়ে এই কাজটি করতে হয়, খুবই ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট দেখে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো।
শীতের সময় গ্রাম অঞ্চল কিংবা শহর প্রতিটা জায়গায় পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে গ্রামের প্রতিটা ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ধুম যেন লেগেই থাকে আজকে আপনি আমাদের সাথে চিতই পিঠা এবং দুধপুলি পিঠা কিভাবে তৈরি করতে হবে সেটা শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার পিঠা তৈরির পদ্ধতি শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
শীতকে বলা হয়ে থাকে পিঠার মৌসুম কারণ এই সময়ে সবাই নানা রঙের পিঠা বানানোর জন্য অনেক কিছু আয়োজন করে।। আজকে আপনিও শীতের পিঠা বানানোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন দুর্ভাগ্য শত সেটি আর করতে পারেননি কারণ আপনার ভাবির দেওয়া মাটির খোলা টা ফেটে যায়।।
শুনে ভালো লাগলো আমাদের ভাইয়া খুবই চমৎকার বুদ্ধি দিয়েছে আপনাকে আর সেই বুদ্ধি আপনি কাজে লাগিয়েছেন।। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো থাকবেন।।