আসসালামু আলাইকুম
আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আমার গতকালের ডাইরি নিয়ে হাজির হলাম। তো চলুন বেশী দেরি না করে শুরু করা যাক আমার গতকালের ডাইরি। |
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে
গতকাল ঘুম থেকে উঠেছিলাম সকাল সাড়ে আটটার সময়। ঘুম থেকে সাড়ে আটটায় উঠলেও বিছানা থেকে উঠতে উঠতে সাড়ে নয়টা বেজে গিয়েছিলো। কেননা ঘুম থেকে উঠেই মোবাইলটা হাতে নিয়ে আগে স্টিমিটে প্রবেশ করে নোটিফিকেশন চেক করি ও কয়েকজনের পোস্টে আপভোট দেই। এরপর মেসেঞ্জারে গিয়ে বন্ধুদের মেসেজের রিপ্লে দেই ও কিছু সময় কথা বলি। তারপর সকাল সাড়ে নয়টায় বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম। এরপর আমার সকালের খাবার খেয়ে নিলাম। গতকাল সকালে মেসে খিচুরি ও আলুর ভর্তা দিয়েছিলো যেটা খেতে অনেক মজার হয়েছিলো। খাওয়ার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে মেসের বাইরে বের হলাম ও দেখলাম যে অনেক রোদ উঠেছে। তাই বাইরে না থেকে আবারো মেসে প্রবেশ করে ফেললাম।
এরপর আমার রুমে এসে বসে বসে স্টিমিটে একটা পোস্ট করে ফেললাম। পোস্ট করার পর বসে বসে মোবাইলে রিলস ভিডিও দেখছিলাম। রিলস দেখতে দেখতে কখন যে দুপুর হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না। মোবাইলটা চার্জে দিয়ে আমি গোসলটা সেরে নিলাম। গোসল করার পর গায়ে সরিষার তেল মেখে বাইরে গিয়ে রোদে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকলাম। এরপর মেসে ফিরে এসে দেখি যে তখনো দুপুরের খাবার দেয় নি। এদিকে আমার অনেক ক্ষিদাও লেগেছে। আসলে গতকাল দুপুরে রোস্ট, পোলাও, বুটের ডাল, ডিম এগুলো রান্না হয়েছিলো তো তাই একটু বেশী সময় লেগেছে। কিছুক্ষন পর খাবার দিলে সেটা নিয়ে আমার রুমে চলে আসলাম ও একটা ছবি তুলে খাওয়া শুরু করে দিলাম। খাবারটা অতো বেশী মজার হয় নি। আর আমার ভাগের ডিমটা আমার বন্ধু তামিমকে দিলাম।
কারমাইকেল কলেজের মসজিদ
খাওয়ার পর একটু বিশ্রাম নিলাম ও বসে বসে স্টিমিটে আরো একটি পোস্ট করে ফেললাম। পোস্ট করার পর বসে বসে মোবাইলে বন্ধুদের সাথে চ্যাটিং করলাম। এরপর আমার বান্ধবী আমাকে কল দিলো এবং বললো যে বিকালে কারমাইকেল কলেজে যাবে। তাই আমি আর দুপুরে ঘুমালাম না কারন তখন এমনিতেই তিনটা বেজে গিয়েছিলো। কিছুক্ষন মোবাইল টিপতে টিপতে বিকাল হয়ে গেলো। এরপর আমার বান্ধবী মেসেজ দিয়ে কারমাইকেলে যেতে বললো। আমিও তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিলাম ও হাগতে হাটতে চলে গেলাম কারমাইকেল কলেজের ভিতরে। কলেজের ভিতরে গিয়ে দেখি যে আমার বান্ধবীরা গেইটের সামনেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। সেখানে গিয়ে তাদের সাথে একটি গল্প করলাম ও তাদের কয়েকটা ছবি তুলে দিলাম। এরপর কারমাইকেলের সুন্দর মসজিদের ফটোগ্রাফি করলাম।
তারপর আমরা হাটতে হাটতে পুরো কারমাইকেল কলেজের ক্যাম্পাসটা ঘুরলাম ও তারপর সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম। এরপর আমরা একটি হোটেলে ঢুকে নাস্তা করলাম এবং নাস্তার বিলটা আমার বান্ধবীই দিলো। তারপর চলে গেলাম বাজারের ভিতরে। বাজারের ভিতরে গিয়ে আমার বান্ধবী একটি মাটির কাসা নিলো চিতই পিঠা বানানোর জন্য। আমি সেই মাটির জিনিসপত্রের দোকানে কয়েকটা ছবি তুললাম। এরপর বান্ধবীদের সাথে হাটতে হাটতে খামার মোড়ে চলে গেলাম। সেখান থেকে বান্ধবী চলে গেলো তার মেসে আর আমি আমার বন্ধু ফয়সালকে কল দিয়ে খামার মোড়ে আসতে বললাম। ফয়সাল আসা পর্যন্ত আমি বসে বসে মোবাইলে গেম খেললাম।
সালেক মার্কেটে তোলা ছবি
কিছুক্ষন পরেই আমার বন্ধু ফয়সাল চলে আসলো। এরপর আমরা একটি রিকশা নিয়ে চলে গেলাম রংপুর সালেক মার্কেটে। রংপুরের সালেক মার্কেট কাপড় ফিটিং এর জন্য অনেক বিখ্যাত। আমার বন্ধু ফয়সাল তার শার্ট ও প্যান্ট ফিতিং করবে তাই সেখানে যাওয়া। সালেক মার্কেটে গিয়ে দুই তলায় উঠতেই সবাই ডাকাডাকি করছিলো। আমি গিয়ে প্রথম দোকানটাতেই প্রবেশ করলাম ও সেখানেই ফিটিং করতে দিলাম। এরপর বসে বসে সেখানে ফিটিং করা দেখলাম আর মাঝে মাঝে ফয়সাল সেগুলো পড়ে দেখছিলো যে ঠিকঠাক হচ্ছে কি না। সেখানে ফয়সালের সাথে একটা সেলফি নিলাম ও দোকানের ছবিও তুললাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমাদের কাজ হয়ে গেলো। ফয়সাল সেগুলো পড়ে দেখলো যে সব ঠিকঠাক আছে। এরপর বিল ১৩০ টাকা দিয়ে আমরা সেখান থেকে বের হলাম।
আলফা মেনের ভিতরে মানুষের উপচে পড়া ভীড়
এরপর আমরা হাটতে হাটতে চলে গেলাম রংপুরের জাহাজ কোম্পানি মোড়ে। সেখানে গিয়ে আমার বন্ধু জয়কে কল দিয়ে জাহাজ কোম্পানি মোড়ে আসতে বললাম। জয়ের বাসা সেখানেই। জাহাজ কোম্পানি মোড়ে গিয়ে জয়ের সাথে দেখা হয়ে গেলো। গতকাল জাহাজ কোম্পানি মোড়ে "আলফা মেন" নামে নতুন একটি শো রুমের উদ্বোধন হয়েছে আর উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ অফার ছিলো। তাই আমিও সেখানে গিয়েছিলাম একটু কেনাকাটা করার জন্য। কিন্তু সেখানে গিয়ে যা অবস্থা দেখলাম। দোকানের বাইরে অনেক মানুষ সিরিয়াল ধরে ছিলো। অনেক কষ্টে আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং দেখলাম যে ভিতরের অবস্থা আরো বেশী ভয়াবহ। ভিতরে আরো অনেক বেশী মানুষ ছিলো। আর তাদের প্রডাক্টগুলো অতোটা মানসম্মত ছিলো না। তাই কোনো কিছু না নিয়েই সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম।
মজাদার দুধ পেটিজ ও বন্ধুদের সাথে তোলা সেলফি
এরপর আমি, জয় ও ফয়সাল তিনজন মিলে একটা রিকশা নিলাম ও রিকশায় করে চলে গেলাম খামার মোড়ে। রিকশায় যাওয়ার সময় একটা সেলফি তুললাম। খামার মোড়ে নেমে আমড়া একটি চায়ের দোকানে গেলাম ও সেখানে সবাই দুধ পেটিজ খেলাম। এখানে দুধ, একটি পেটিস, একটি কলা ও চিনি দেয়া থাকে। যেটা খেতে খুবই মজাদার ও পুষ্টিকর। দুধ পেটিজ খাওয়ার সময় আমার বন্ধু জয়ের সাথে সেলফি তুললাম। খাওয়ার পর খাবারের বিলটা জয় মাকে দিতে দিলো না সে নিজেই দিয়ে দিলো। এরপর আমার বন্ধু সাঈদ আমাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলো যে আমি কোথায় আছি। আমি খামারের মোড়ের কথা বললে সে আমাদেরকে সেখানে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে বললো। তাই আবারো সেই দোকানের একটি বেঞ্চে বসে তিনজন মিলে গল্প করতে লাগলাম।
চা ও চা খাওয়ার সময় বন্ধুদের সাথে তোলা সেলফি
কিছুক্ষনের মধ্যেই সাঈদ চলে আসলো। এরপর আমরা একটি চায়ের দোকানে গিয়ে চা খেলাম। চা খাওয়ার সময় চায়ের ছবি তুললাম ও একটি সেলফি তুললাম। তারপর জয়কে বিদায় দিয়ে আমরা তিনজন হাটতে হাটতে মেসে ফিরে গেলাম। মেসে এসে ফ্রেস হয়ে মোবাইলটা চার্জে দিলাম। তারপর আমার বন্ধু আতিকের সাথে কিছুক্ষন গল্প করলাম। আতিকও গতকাল সন্ধায় মেসে এসেছিলো। আতিকের সাথে গল্প করার পর আবারো মোবাইলটা হাতে নিয়ে রিলস দেখলাম ও বন্ধুদের সাথে চ্যাটিং করলাম। এরপর আমার রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। খাওয়ার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে আমি, আতিক ও সাঈদ তিনজন মিলে ফ্রি ফায়ার গেম খেলা শুরু করলাম। ফ্রি ফায়ার গেম খেলতে খেলতে অনেক রাত হয়ে গেলো। তখন মোবাইলটা রেখে শুয়ে পড়লাম।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট । আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে । ভূল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। |
ধন্যবাদ সবাইকে
সবগুলো ছবিই আমার আইফোন ১২ মোবাইল দিয়ে তোলা হয়েছে
X promotion : https://x.com/saikat01718/status/1891384138793443369?s=46
মোটামুটি বলা যায় আপনার দিনটা অনেক বেশি সুন্দরভাবে কাটিয়েছেন তবে আপনাকে অনুরোধ করব রিলস ভিডিও দেখে নিজের সময় নষ্ট না করে সময়টাকে একটু কাজে লাগান পরবর্তীতে আফসোস করার চাইতে বর্তমান সময়টাকে কাজে লাগানো অনেক বেশি উত্তম।
বিকেলবেলা আপনি আবার আপনার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়েছেন আসলে ছেলেরা বাহিরে ঘুরতে গেলে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দৃশ্য দেখতে পায় আমরা আসলে ঘোরাঘুরি করার সময় পাইনা নিজের পরিবারকে সময় দিতে গিয়ে জীবন থেকে অনেক জিনিস হারিয়ে ফেলছে ধন্যবাদ বন্ধুদের সাথে চা খাওয়া এবং বিভিন্ন খাবার দাবার খাবার খাওয়ার মুহূর্ত আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন।