ক্লান্তির চাপ যখন শরীরের মধ্যে পড়ে তখন সত্যিই আর কোন কিছু ভাল লাগেনা। সারাদিনের কাজকর্ম করার পর আবার নতুন করে কোন কাজ করবো সেই ইচ্ছা কখনোই জেগে ওঠে না। ইচ্ছে করে চুপচাপ যদি শান্তি মত একটু ঘুমাতে পারতাম, তাহলে কতই না ভালো হতো। কিন্তু আমাদের মত মেয়েদের সেই ইচ্ছা করাটাও বোকামি।কারন সেই ইচ্ছা কখনোই পূরণ হয় না। কাজ যেন আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। একটার পর একটা করতেই হবে। তা নাহলে সবকিছু জমে পাহাড় সমান হয়ে যাবে। পরবর্তীতে সব কিছু একসাথে করা কখনোই সম্ভব হয়ে ওঠেনা। সমস্ত কাজ গোছানোটা কতটা কষ্টকর, যারা সেই কাজ করে তারা সেটা ভালোভাবেই বুঝতে পারে।
কর্মব্যস্ত জীবনের শেষ হয়তোবা কখনোই হবে না। তবে প্রতিনিয়ত কাজ করে যেতে হবে এটাই হচ্ছে আমাদের ধর্ম। কাজ করতে পারলে সবার কাছে ভালো না করতে পারলে আপনি সবার কাছে খারাপ। কিন্তু কিছু কিছু মেয়ের ক্ষেত্রে সংসারের সারাদিন কাজ করার পরেও তাদেরকে শুনতে হয়। সারাদিন কি করেছ এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়িয়েছো এই ভাত রান্না করার সেটা তো আমরাই করতে পারি। এই ধান রোদের মধ্যে শুকানো এই কাজ তো একেবারেই সহজ। এটা করতে তেমন একটা কষ্ট হয় না। এমন কথা শোনার পর আসলে কাজ করার প্রতি মন-মানসিকতা সবকিছুই নষ্ট হয়ে যায়।
 |
 |
আলহামদুলিল্লাহ নতুন একটা সকালের দেখা পেয়ে অনেক বেশি আনন্দিত। সকালের কাজগুলো গুছিয়ে নিয়েছিলাম খুব তাড়াতাড়ি আর তাড়াতাড়ি রান্না করতে হবে। একটু পরেই ধানের মেশিন চলে আসবে জমিন থেকে ধান নিয়ে আসতে হবে। তাই সকাল থেকেই সমস্ত কাজ গোছানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। আলহামদুলিল্লাহ রান্নাবান্নার কাজ মোটামুটি ৯ঃ০০ টার সময় শেষ করলাম। তারপর সকালবেলার খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। কবুতরের বাচ্চাগুলোকে খাবার দিয়েছিলাম, কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য আমার একটা কবুতরের বাচ্চা মারা গেছে। এটা দেখে আরো বেশি খারাপ লাগলো। এরপর ওদের সাথে কিছুটা সময় পার করে নিচে চলে আসলাম।
 |
নিচে আরো কিছু কাজ ছিল সেগুলো সম্পন্ন করে নিয়েছিলাম। এরপর মাঠে গিয়েছিলাম ধান আনার জন্য। মোটামুটি দুপুর একটা পর্যন্ত ধান আনার পরে নামাজ পড়ে নিয়েছিলাম। তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে আবার চলে গিয়েছিলাম ধান আনার জন্য। রোদের পরিমাণটা একেবারেই কম। তাই ছাদের মধ্যে ধান সামান্য পরিমাণ মেলে দিয়েছিলাম আর বাকিগুলো শুধু বস্তায় ভরে রেখে দিয়েছিলাম। ধান আনতে আনতেই মাগরিবের আযান দিয়ে দিয়েছিল। এভাবে কাজ করতে করতে সময় পেরিয়ে গেছে। আসলে সারাদিন কাজ করার কারণে শরীরের অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে গেছিল। তার উপরে এত পরিমাণে গরম রোদ না থাকলেও গরমের পরিমাণটা অনেক বেশি। বাতাস মোটামুটি আছে তারপরেও কাজ করলে মনে হয় গরমের পরিমাণটা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। ঘামে অবস্থা খারাপ তাই তাড়াতাড়ি করে গোসল করে নিয়েছিলাম।
 |
 |
গোসল করতে করতে মাগরিবের আজানের পর হয়ে গেল। তারপর ও দুপুরে এসে নামাজ পড়ে নিলাম। এরপর ছেলেদেরকে নিয়ে কিছুক্ষণ পড়তে বসলাম কিন্তু শরীরের অবস্থা মোটেই খারাপ কিছুই করতে পারছি না। হাত-পা প্রচন্ড ব্যথা করছিল। একটু পরেই কারেন্ট চলে গেল গরমের পরিমাণটা যেন আরো বেশি বৃদ্ধি পেলে। তারপর ছেলেদেরকে নিজের হাতে ভাত দিলাম। আসলে হাত প্রচন্ড ব্যথা করছিল ওদেরকে ভাত খাইয়ে দেবো এমন শক্তি আমার শরীরে ছিল না। এরপর নামাজ পড়ে কোন রকমে শুয়ে পড়েছিলাম। আসলে খাবার খাওয়ার মত ইচ্ছা মোটেও ছিল না। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজেও জানিনা। এভাবেই আমার জীবন থেকে আরও একটা দিন অতিবাহিত করলাম। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
বৈশাখ মাস তাই নতুন সোনালী ধানে উঠতে শুরু করেছে । আপনাদের গ্রামের বাড়িতে এখন নতুন সোনালী ধানের গন্ধে মৌ মৌ করছে ।
এই ধান থেকে চাল তৈরি করা অনেক কঠিন কাজ। অনেক সময়, ধৈর্য নিয়ে এবং পরিশ্রম দিতে হয়।আপনি এতো পরিশ্রম করার পরও নিয়মিত কমিউনিটিতে যুক্ত থাকছেন।
আপনার কথাগুলোর সাথে আমিও একমত। পুরুষদের সাপ্তাহিক ছুটি আছে, কাজের বিরতি আছে। অন্যদিকে আমাদের ছুটির দিনে আরও বেশী কাজ থাকে। মাঝে মাঝে নিজেকে রোবট মনে হয়।
আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় পোস্ট পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
নতুন ধান এসেছে আসলে বেশ ভালই লাগছে তবে কাজ করতে গিয়ে নিজের অবস্থায় একেবারেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে সবার কাজের ছুটি থাকলেও ঘরের মহিলাদের কাজের কোন ছুটি নেই তাদের প্রতিনিয়ত কাজ করতেই হবে তা না হলে সব কিছু একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।