মাঝে মাঝে ভাবতেই অবাক লাগে। একটা সময় যেমন এই পৃথিবীতে আমাদের কোন অস্তিত্ব ছিল না। ঠিক তেমনি একটা সময় পরে আমরা আবারো এই পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাব। আসলে এই পৃথিবী হচ্ছে ক্ষণস্থায়ী। আমাদের আগেও অনেক মানুষ এই পৃথিবীতে এসেছিল। তারা আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছে, তারা আমাদেরকে এই পৃথিবীতে জায়গা করে দিয়ে, নিজের অবস্থানে পৌঁছে গেছে। আমরা এখন এই পৃথিবীতে আছি আমরাও আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যতের জন্য, জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হবে পরকালে, তারপরেও আমাদের কত অহংকার।
গত ২০ বছর আগে যেই মানুষগুলো এই পৃথিবীতে বসবাস করত। তাদের মধ্য থেকে প্রায় বেশিরভাগ মানুষ পরকালে চলে গেছে, আমরা বর্তমানে যারা আছি তারাও চলে যেতে হবে। অহংকার করে কোন লাভ নেই দুই দিনের দুনিয়ায় আপনি যত বেশি মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারবেন। মানুষ আপনাকে ঠিক ততটাই ভালো মনে করবে। আসলে এই পৃথিবীতে বর্তমান সমাজে আপনি যদি চুপ করে সহ্য করতে পারেন, আপনি যদি চুপচাপ থাকতে পারেন। তাহলে আপনি সবার কাছে ভালো থাকতে পারবেন। শুধুমাত্র কারো কথার জবাব দিতে যান, অথবা তর্ক করতে যান। তাহলে আপনি সবার কাছে খারাপ হয়ে যাবেন এটাই বাস্তব।
সব সমস্যার সমাধান আমরা কখনোই খুঁজে পাই না। তার পরেও সমাধান খোঁজার চেষ্টায় প্রতিনিয়ত ব্যাকুল হয়ে থাকি। যাই হোক রাত্রে ঘুমিয়ে ছিলাম ঠিকই কিন্তু ঘুম ভেঙে যায় রাত 1 টা 10 মিনিটে, কারণ আমার জ্যাঠা শ্বশুর মারা গেছে। আমরা যেহেতু একা বাড়িতে থাকি ওনারা ও আলাদা একটা বাড়ি করে অন্য একটা জায়গায় থাকে। তাই ঘুম থেকে উঠে সোজা ওখানে চলে গেলাম, গিয়ে দেখলাম সবাই কান্নাকাটি করছে সবাইকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম অনেকক্ষণ। আসলে সবাইকে এই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হবে।
এরপর বাড়িতে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কারণ। সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে তাদের জন্য রান্না করতে হবে। তাই আমিও সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই নিজের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে, প্রথম অবস্থায় আমার ভাগিনাকে বাজারে পাঠিয়েছিলাম। কেননা অনেক মানুষের জন্য রান্না করতে হবে বাজার প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে। এরপর ও বাজার থেকে আসার পর এক এক করে সমস্ত রান্না গুছিয়ে নিয়ে, আমি রান্না করতে বসে গেলাম। জানি আজকে আমার অবস্থা একেবারেই খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু তারপরেও কিছু করার নেই।
যাইহোক এরপর আমি সমস্ত রান্না এক এক করে গুছিয়ে নিয়েছিলাম। আমার ননদরা সবাই এসেছে তাদের জন্য রান্না করেছি, এরপর গোসল করে তাদের বাড়ির দিকে গিয়েছিলাম তাদের বাড়ির অবস্থান জানার জন্য। তবে সাড়ে এগারোটার সময় আমার জ্যাঠা শশুর মশাই কে মাটি দেয়া হয়ে গেছে। ওখানে গিয়ে দেখলাম সবাই কান্নাকাটি করছে, তারপর সবার সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার বাড়িতে চলে আসলাম, কেননা তাদের জন্য খাবার রেডি করতে হবে, এরপর সবাই আমাদের বাড়িতে চলে আসলো তারপর সবাই এক এক করে দুপুরের খাবার খেয়ে নিল।
আমি নিজেও দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। এরপরে আমাকে আবার আমার বাবার বাড়ি আসার জন্য রেডি হতে হয়েছিল, কারণ আমার মা খুবই অসুস্থ যার কারণে আমি নিজেও সবকিছু রেডি করে নিয়েছিলাম। তারপর বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। আসার সময় কবরস্থানে জ্যাঠা শ্বশুর মশায়ের কবরটা দেখে এসেছিলাম। আসলে গত পরশুদিন ও আমার সাথে কথা বলেছিল অথচ আজকে সেই মানুষটা আমাদেরকে ছেড়ে পরকালে চলে গেছে, ভাবতেই চোখে জল আসছিল। এরপর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সোজা গাড়িতে উঠে বাবার বাড়িতে চলে আসলাম।
ওখানে গিয়ে প্রথম অবস্থায় মায়ের জন্য ওষুধ নিয়ে এসেছিলাম। তারপর ওনাকে ওষুধ খাইয়ে দিলাম ঘরের অবস্থা একেবারেই খারাপ করে রেখেছে, আসলে কাজ করতে না পারলে যা হয় আর কি। এরপর সম্পূর্ণ ঘর পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম গরমে আমার অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু কিছুই করার নেই তারপর সবকিছু গুছিয়ে গ্যাসের মধ্যে ভাত বসিয়ে দিলাম। তারপর তরকারি রান্না করে নিয়েছিলাম এসব করতে করতে আমার এশার আজান দিয়ে দিল। তারপর ছেলেদেরকে রাতের খাবার খাইয়ে দিলাম। মা কে ও রাতের খাবার খাইয়ে দিয়ে, আমি নিজে অল্প পরিমাণে খাবার খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিয়েছিলাম। এভাবেই আমার জীবন থেকে আরও একটা দিন অতিবাহিত করলাম। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
আপনার জ্যাঠা শশুর রাতে মার গিয়েছেন আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা করে নিক।
কোন আত্মীয় মারা গেলে সেই বাড়িতে তিনদিন রান্না করা হয় না এবং সেই বাড়িতে খাবার দেয়াটা আমাদের সামাজিক প্রথা যা আপনিও করেছেন ।
আবার সেখান থেকে মায়ের বাড়িতে গিয়ে তার সেবা ও রান্না করেছেন ।বুঝতে পারছি আপনার উপর দিয়ে ঝড় চলছে ।
নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।দোয়া করি সবসময় সুস্থ ও ভালো থাকুন।
এটা আপনি একেবারেই ঠিক বলেছেন আমি ছোটবেলা থেকেই এটা দেখে আসতেছি যে যাদের বাড়িতে মারা যায় তারা তিন দিন নয় বরঞ্চ চার দিন তাদের বাড়িতে কোনরকম আগুন ধরানো হয় না পরবর্তীতে যা করা হয়ে থাকে এটা আমাদের একটা প্রথা বা নিয়ম হিসেবেই আমরা পালন করে থাকি আর সেই নিয়মটাই পালন করতে গিয়ে আসলে অনেকটা সময় আমাকে ব্যয় করতে হয়েছিল তবে আমি বলব এই সময়টা আমার সার্থক হয়েছে। বাবা মায়ের জন্য কিছু করতে পারাটা হচ্ছে আমাদের সৌভাগ্য আমরা তাদের জন্য কিছু করতে পারছি এটাই আমাদের জীবনের সবচাইতে বড় পাওয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
TEAM 07
Congratulations!!!
Your post has been supported. We support quality posts good comments anywhere and any tags.
Curated By : @wirngo
@wirngo,
Thank you so much for your encouraging support, ma'am.
Our team is looking for quality posts and comments to reward across the steemit platform. Enhance your experience in creating engaging content
Curated by @mahadisalim
আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য।
সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সৃষ্টি করার পর থেকে কিছু না কিছু সমস্যা দিয়েই রেখেছেন। কারন আমরা যদি সমস্যা ছাড়া থাকি তখন তাকে আর মনে করবা না ।তাই তো মনে হয় যে আমাদের হাজার সুখে থাকার পরেও কোন কিছু এর জন্য আমাদের মনের ভিতরে আফসোস থাকে। যত ধনী হোক, যত সুখী হোক ,এমন কোন ব্যক্তি নেই যার কোন না কোন সমস্যা নেই। দেখবেন কিছু না কিছু অবশ্যই সমস্যা থাকবে ।
দুঃখের বিষয় হলো আপনার জ্যাঠা শ্বশুর রাত ১টা ১০ মিনিটে মারা গিয়েছে। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি । আপনি সেই পরিবারের জন্য অনেক কিছু রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলেন। শোকাক্লান্ত পরিবারের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল ।
আপনি একেবারেই ঠিক বলেছেন আমরা যখন একটু ভালো থাকি তখন আমরা আল্লাহর কথা ভুলে যাই এটা করা মোটেও ঠিক না সুখ-দুঃখ নিয়েই মানুষের জীবন আর সমস্যা না থাকলে আমরা সৃষ্টিকর্তার কথা ভুলে যাই আসলে এত নিয়ামত ভোগ করার পরেও আমরা কেন তাকে ভুলে যাই এটাই আমরা বুঝতে পারি না।
প্রতিটা সময়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় অবশ্যই বরাদ্দ থাকে একটা সময়ের পরে আমাদেরকে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে আমার জ্যাঠা শ্বশুর মশাই ওই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তার জন্য অবশ্যই সবাই দোয়া করবেন অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।