কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়ের (তৃতীয় পর্ব) নিয়ে
আসসালামু আলাইকুম/আদাব আমার প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা। কি অবস্থা সবার কেমন আছেন। আশা করি মহান রব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে। আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে,
আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।আজকে আমি আপনাদের সামনে আবারো হাজির হয়ে গেলাম।
কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়ের (তৃতীয় পর্ব) নিয়ে।
- পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি, এটা আমরা সবাই জানি। তবে আমরা সেটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি না। তার একটাই কারণ আমাদের এই উপায় গুলো অনেকেরই অজানা। কিভাবে সঠিক উপায়ে আপনার এই কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়াবেন তা নিয়ে আমি গত দুই পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবং এই পর্বেও আমি যতটুকু পারি আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
আমি আশা করছি গত দুই পর্বে আমি আমার সামর্থন অনুযায়ী আপনাদের বোঝাতে পেরেছি। আপনারা কিভাবে খুব সহজে কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় গুলো, নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারবেন সেই বিষয় নিয়ে।
চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল কথায় ফিরে আসা যাক।
০৫ আপনার নিজের ঘুম এবং বিশ্রাম কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন
আমরা অনেকেই, নিজেকে কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে সবার সামনে উপস্থাপন করার জন্য অনেক পরিশ্রম করি। নিজেদের ঘুম কিংবা বিশ্রাম কে তেমন একটা গুরুত্ব দেই না। তবে আপনি জানেন কি, আপনি এই আপনার কঠোর পরিশ্রম করার জন্য, যে বিশ্রাম এবং ঘুমকে ত্যাগ করছেন।
সে বিশ্রাম এবং ঘুম না যাওয়ার কারণে আপনার অলসতার দিকটা খুব ঘনিয়ে আসছে। কারণ এই বিশ্রাম এবং ঘুম আমাদের শরীরের অনেক মারাত্মক ক্ষতি করে।
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
আমরা যখন একটানা অনেকক্ষণ কাজ করি দিনের বেলায়। তখন রাতে যখন ঠিকমতো ঘুমাই না।যখন আমাদের শরীরকে একটু বিশ্রামের জন্য সময় দেই না। কাজ করতেই থাকে তখন কিন্তু, আমাদের শরীরে যে অতিরিক্ত পরিশ্রম করার ক্ষমতাটা রয়েছে।
ওই ক্ষমতাটা আমাদের শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এবং ওই ক্ষমতাটা দিয়েই আমরা অতিরিক্ত কাজগুলো করি। এতে করে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। যার কারণে আমরা অনেকদিন আর তেমন ভাবে কঠোর পরিশ্রম করতে পারি না।
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
এই ভাবেই যদি আমরা আমাদের শরীরের উপর কঠোর পরিশ্রম করার চাপ সৃষ্টি করি। তখন একটা পর্যায়ে দেখা যাবে আমাদের শরীরে কঠোর পরিশ্রম করার যে ক্ষমতাটা রয়েছে। সে ক্ষমতাটা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমরা অনেকদিন যাবত কঠোর পরিশ্রম করতে পারব না। কারণ আমাদের শরীরের কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা থাকবে না। যার ফলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়বো।
আমরা প্রায় সকলেই জানি, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অন্ততপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। যদি আপনি সেটা না পারেন।তাহলে আপনাকে নূন্যতম হলেও 6 ঘন্টা ঘুমাতেই হবে। আর আপনাকে অবশ্যই রাত্রিবেলা খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে।
এবং সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে। কারণ সকালের আবহাওয়াটা খুবই ভালো থাকে। সকালে যখন সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। আর সেই রোদ যখন আমাদের গায়ে পড়ে, তখন ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।
আপনারা অবশ্যই জেনে থাকবেন, বড় বড় যারা মনীষী রয়েছে বা সাফল্যবান ব্যক্তিরা রয়েছে। তাদের একটা সূত্র রয়েছে "সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়ো সকাল সকাল আবার ঘুম থেকে জেগে ওঠো"
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
- আপনি যদি এই অভ্যাসগুলো আপনার মধ্যে আয়ত্ত করতে না পারেন। তাহলে আপনি হয়তো বা কয়েক দিন বেশ ভালই কঠোর পরিশ্রম করবেন। এ কয়েক দিনে আপনি বেশ সাফল্য অর্জন করবেন। আপনার জীবনে কিন্তু তারপরে,আপনি আর খুব ভালোভাবে কখনোই কঠোর পরিশ্রম করতে পারবেন না।
০৬ পরিশ্রম শেষে কি ফলাফল বের হতে পারে সে বিষয়টা আগে মাথায় রেখে তারপর কঠোর পরিশ্রম করুন।
- আমরা প্রায়সই জানি আমাদের এ পৃথিবীতে যারা সাফল্যবান ব্যক্তি রয়েছে। তারা যেমন তাদের নিজের জীবনের জন্য, একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে সমাজের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে। ঠিক তেমনি আমাদের দেশের জন্য তারা অনেক কিছু রেখে গিয়েছে।
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং তাদের অধম্ম ধৈর্যের কারণে, তাদের কথা আজ সবার মুখে মুখে।আর তাদের যখন কাজ করার ইচ্ছে ছিল না। তখনও তারা কাজ করেছে। কারণ তাদের একটাই লক্ষ্য তাদের পরিশ্রমের যে ফল বের হবে। এতে শুধু তারাই খুব ভালো একটা বিষয় বা ভালো একটা সমাজ পাবে না। দেশ এবং দেশের মানুষ সবাই এটাকে খুব ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন।
আমি মাঝে মাঝে নিজেও কনফিউজড হয়ে যাই যে, আমি কি করছি, আপনার কি মনে হয় আমাদের সকল কাজের বিষয় খুবই মজাদার। মোটেও এই কথা কখনোই চিন্তা করবেন না। বড় বড় মনীষীদের জীবনী পড়ে আমি বুঝতে পারলাম।তারা পরিশ্রমের ফলাফলের দিকে টার্গেট করেই, তাদের কঠোর পরিশ্রম করেছে। তারা তাদের মাথায় একটা জিনিস বসিয়ে নিয়েছে। আজকে যদি আমরা কঠোর পরিশ্রম করে, আমাদের এই পথ পাড়ি দিতে পারি।কালকে আমরা সুখে থাকতে পারবো।
এখন আমি আপনাদের সাথে আমাদের স্কুল জীবনের একটা ঘটনা শেয়ার করি। আমাদের দুইটা ফ্রেন্ড ছিল যারা প্রতিনিয়তই বই নিয়ে বসে থাকতো। যখন অন্যান্য ছেলেরা আড্ডা দিত। স্কুলের বারান্দায় বসে খেলাধুলা করত বা কেউ ছাদে গিয়ে খেলাধুলা করতো।
কেউ আবার দোকানে গিয়ে টিভি দেখতো।কিন্তু আপনার কি মনে হয় যে ছেলেটা বই নিয়ে সারাক্ষণ বসে থাকে। সেই ছেলে বা মেয়ের কি আড্ডা দিতে ইচ্ছে করেনা। সেই ছেলের বা মেয়ের কি টিভি দেখতে ইচ্ছে করে না। সেই ছেলের বা মেয়ের কি সবার সাথে একটু খেলতে ইচ্ছে করে না। তাদেরও ইচ্ছে করে, কিন্তু তারা তাদের মাথায় একটা জিনিস ঢুকিয়ে নিয়েছে।আজকে যদি সে কষ্ট করে পড়াশোনা করতে পারে। ভবিষ্যতে ভালো একটা অবস্থানে যেতে পারবে।
- আমরা দেখবেন কাজ করতে করতে একঘেয়েমি হয়ে যাই। বোর ফিল করি। তখন যদি মনে হয় যে না আমার দ্বারা আর হবে না। তখন কিন্তু অনেক মানুষ ঝরে পড়ে যায়। তবে আমি আপনাদেরকে বলব কখনোই কঠোর পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকবেন না।
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
আপনার যদি ইচ্ছে হয় যে আমি এখন আর কাজ করবো না। আমাকে দিয়ে হবে না। তখন আপনি আপনার মাথার মধ্যে ওই কথাটা ঢুকিয়ে নেবেন। যে না আমি এখন যদি কঠোর পরিশ্রম করি। আমার ভবিষ্যতের ফলাফল অনেক মিষ্টি হবে।
আপনার এখনকার কঠোর পরিশ্রম আপনার ফলাফলের কাছে তুচ্ছ ছোট্ট একটা বিষয়। আপনার কঠোর পরিশ্রম করার পরে যে ফলাফলটা আপনার সামনে আসবে সে ফলাফলটা অনেক বড়। একটা বিষয় তাই অবশ্যই পরিশ্রম করার শেষে যে ফলাফলটা আসবে। সেই ফলাফলটা মাথায় রেখে কঠোর পরিশ্রম করবেন। জীবনে অনেক সাফল্য অর্জন করতে পারবেন।
আমাদের জীবনটা ছোট হলেও আমাদের অনেক ইচ্ছে আশা থাকে।আর সেই ইচ্ছে আশা গুলো পূরণ করার জন্য আমাদেরকে প্রতিনিয়ত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তবে আমাদেরকে একটা জিনিস মাথায় রেখেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। আজকের দিনটা যদি হয় কষ্টকর হয়তোবা, কালকের দিনটা অনেক সুখের হতে পারে।
ছবির উৎস কপিরাইট মুক্ত pixabay
কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়ের শেষ পর্ব নিয়ে আগামীকাল অবশ্যই, আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে যাব।
আজ এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।এই কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিলাম।
এতক্ষণ ধরে আমার লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।