আমার দেখা এ বছরের দ্বিতীয় মহা নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান।
![]() |
---|
নমস্কার বন্ধুরা,,,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক বেশি ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। গত এক পোস্টে আমার দেখা এ বছরের প্রথম মহা নামযজ্ঞের কিছু মূহুর্ত শেয়ার করেছিলাম। আজ আপনাদের মাঝে দ্বিতীয়বার মহা নামযজ্ঞে যোগদানের কিছু মূহুর্ত শেয়ার করবো। চালু তাহলে শুরু করা যাক...
গ্রামের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো বরাবরই আমাকে খুব আকর্ষণ করে। তাই যখন শুনলাম পাশের গ্রামে মহা নামযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে, তখন আর দেরি না করে বন্ধুরা মিলে সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
এই বছর আমি দ্বিতীয়বারের মতো নামযজ্ঞে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেলাম। নামযজ্ঞ মানেই এক ধরনের আধ্যাত্মিক মিলনমেলা, যেখানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ। আগের বার যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম, এবারও ঠিক তেমনই আনন্দ উপভোগ করলাম।
![]() |
---|
নামযজ্ঞের আয়োজন ছিল পাশের গ্রামের একটা বাড়িতে। আমাদের গ্রাম থেকে পাশের গ্রাম খুব একটা দূরে নয়। হেঁটে যেতে আধা ঘণ্টার মত সময় লাগে। গাড়িতে করেও যাওয়া যায়, তবে হেঁটে গেলে গ্রামের প্রকৃতি আরও ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। তবে আমরা গাড়িতে যেতে পছন্দ করলাম।
সন্ধ্যার একটু আগে বেরিয়ে গ্রামের সরু পথ দিয়ে গড়িতে করে যেতে লাগলাম। বেশ কিছু দূর যেয়ে, দূর থেকেই শুনতে পেলাম কীর্তনের সুরেলা ধ্বনি। তার কিছুক্ষণ পর গ্রামে পৌঁছে দেখি, অনুষ্ঠানস্থল বেশ ভালোভাবেই সাজানো হয়েছে। বিশাল প্যান্ডেল টাঙানো হয়েছে, সামনে একটি বিশাল যজ্ঞকুণ্ড, আর চারপাশে রঙিন আলোকসজ্জা। সকাল থেকেই সেখানে নামযজ্ঞ শুরু হয়েছে।
![]() |
---|
নামযজ্ঞের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল কীর্তন। কয়েকজন শিল্পী ঢোল, খোল, করতাল নিয়ে সুমধুর সুরে ঈশ্বরের নাম গান গাইছিলেন। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে পুরো দৃশ্য দেখছিলাম। নামযজ্ঞে অংশ নিতে আসা ভক্তদের চোখেমুখে ভক্তির ছাপ ফুটে উঠেছিল। চারপাশের পরিবেশ এতটাই পবিত্র যে মনে হলো, সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।
একটু পর কয়েকজন পরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা হলো। তাদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় ধরে কথা বললাম। তারা জানালেন, এটি এ বছরের দ্বিতীয় নামযজ্ঞ, প্রথমটি হয়েছিল গত ফাল্গুন মাসে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে, কারণ এটি কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি সামাজিক বন্ধনেরও একটি অংশ।
![]() |
---|
যাই হোক, এরপর এল প্রসাদ গ্রহণ করার সময়। নামযজ্ঞের প্রধান প্রসাদ হচ্ছে খিচুড়ি। আমি গত পোস্টে বলেছিলাম যে, নামযজ্ঞের প্রধান প্রসাদ খিচুড়ি হলেও কোনো কোনো জায়গায় ডাল-ভাতও দেওয়া হয়ে থাকে। এই জায়গায় এসে ঠিক তেমনই দেখতে পেলাম। বিশাল খোলায় গরম গরম ভাত, ডাল আর আলুর তরকারি পরিবেশন করা হচ্ছিল। বন্ধুরা সবাই সারিবদ্ধভাবে বসে সেই প্রসাদ গ্রহণ করলাম এবং এখানে এসে নতুন অনেকের সঙ্গে পরিচিত হলাম।
![]() |
---|
এরপর বাড়ি ফিরে আসার সময় বাজার থেকে ভাই এবং বাবা-মার জন্য কিছু খাবার কিনে আনলাম। বাড়ি আসার সময় অনুভব করলাম, শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া নয়, নামযজ্ঞের মাধ্যমে আমি এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। একদিনের জন্য হলেও ব্যস্ত জীবনের বাইরে এসে, এই আধ্যাত্মিক পরিবেশে ডুবে গিয়ে একধরনের মানসিক শান্তি পেলাম। পরের বছর আবারও অংশ নেওয়ার আশায় বাড়ি ফিরলাম।
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। কাল আবার দেখা হবে নতুন আরেকটি পোস্ট নিয়ে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.