চাকরির পরিক্ষা ও ভাইবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় যাত্রা।(Traveling to Dhaka for job exams and giving a speech.)

in Incredible India4 days ago

সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আবারও আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম আমার জীবনের কিছু গল্প শেয়ার করার জন্য। চলুন শুরু করি:-


1000002839.jpg

জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকতে হলে কত শত পথ পারি দিতে হয়। বার বদলাতে হয়, জীবনের রঙ, পরিবর্তন করতে হয় স্থান, ছাড়তে হয় পরিবার আত্নীয় স্বজনদেরকে। পরিবারকে সুখে রাখতে কতই ত্যাগ শিকার করি আমরা। একজন পুরুষ যখন তার পড়াশুনা শেষ করে কোন চাকরি না পায় তখন সে বুঝতে পারে তার উপর দিয়ে কত বড় ঝড় চলে যায়। পরিবার থেকে, আত্নীয় স্বজন থেকে শুরু করে আশে পাশের লোকজনেরাও তাকে নিয়ে কানাঘুষা শুরু করে দেয়। একজন বেকার যুবক যানে তার কতটা কষ্ট আর বেদনা।

পকেটে টাকা থাকলে সবাই দাম দেয়, ডেকে কথা বলে, পকেটে টাকা না থাকলে কেউ দাম দিয়ে চায় না। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। আমিও সেই বেকার যুবকদের দলে নাম লিখিয়েছি কিছু দিন হলো। মানে আমার পড়াশুনা শেষ, এডমিশনেও চান্স পেলাম না। এখন সরকারি চাকরির পেছনে ছুটতেছি। কিন্তু খালি চাকরির পেছনে ছুটলে আর পরিবার চলবে না। কিছু করতেও হবে পাশা পাশি। বেসরকারি চাকরি করে নিজের পড়াশুনা চালাতে হবে। কিন্তু বেসরকারি ভালো চাকরি বর্তমান সময়ে রেফারেন্স ছাড়া পাওয়া কষ্ট। আর সব ধরনের চাকরি করে পড়াশুনা করা যাবে নাহ। এটা হলো বড় সমস্যা। তবুও নিজেই চেষ্টটা করে যাচ্ছি কোন চাকরির মধ্যে ঢোকা যায় নাকি৷

আসলে গত ৬ মাস ধরে আমার জীবনের উপর দিয়ে কি পরিমাণ ঝড় বয়ে যাচ্ছে আপনাদেরকে বোঝাতে পারব না। জীবনের কোন কিছু ঠিক নেই, নিজে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারতেছি না। হতাশা, টেনশন আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ঢাকাতে থাকতে না পেরে বাড়ী চলে গিয়েছিলাম গত মাসে। ঈদের পর আবার ভাবলাম কুষ্টিয়া মেসে থাকি, সেখানেও চার দিনের বেশি থাকতে পারি নাই। গত ১৬ তারিখ বাসায় চলে আসছি। শারীরিক অসুস্থতাও খুব বেড়ে গিয়েছে। সমস্যা বলতে, শুধু মাথার ব্যাথা এই একটা সমস্যা আমার জীবনটা নরক বানিয়ে দিলো। এতো ডাক্তার দেখায় তবুও ঠিক হয় না। যাই হোক কথা সেদিকে না।

এই হতাশার মাঝে একদিন বিকালে ঘুমাচ্ছিলাম হঠাৎ ফোনের রিংটন বেজে উঠল। কল ধরতেই জানতে পারলাম একটা বেসরকারি চাকরির ভাইবার ডেট দিছে। গত কিছু দিন আগে একটা চাকরির অ্যাপের মাধ্যমে একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে চাকরির আবেদন করেছিলাম। তারই ভাইবার ডেট দিয়েছিল ১৮ তারিখ। এজন্য আবার আমারকে ঢাকা আসা লাগবে। যদিও আগামি শুক্রবার আমার একটা সরকারি চাকরির পরিক্ষা আছে, এজন্য ঢাকাতে যাওয়াই লাগত, ভাইবার জন্য দুই দিন আগে যেতে হবে।

1000002824.jpg

1000002820.jpg

গতপরশু দিন আমি কুমারখালি এসে গতকাল বিকাল ৫:১০ মিনিট। ছাড়বে সেরকম একটা বাসের একটা টিকিট কেটে নিয়েছিলাম ঢাকা আসার জন্য। একটা টিকিটের দাম নিলো ৫০০ টাকা। এমনি সময় ৪৫০ টাকা হলে টিকিট পাওয়া যেতে ঈদের পরে বলে একটু বেশি নিচ্ছে। কি আর করার আসতে যেহেতু হবেই এজন্য টিকিট কাটলাম। এরপর গতকাল পাঁচটার সময় বাসস্ট্যান্ডে চলে আসি। ৫:২৩ মিনিটে বাস ছাড়ে। আমাদের যাত্রা শুরু হয়। মূলত ঢাকাতে এসে রাতে আমার চাচাতো ভাইয়েরা থাকে ঢাকায়, তাদের বাসায় থাকতে হবে। এরপর পরের দিন ভাইবা দিতে যেতে হবে।

1000002843.jpg

1000002851.jpg

আমার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমি বাসে যাওয়া আসা করতে পারি না। আমি যতবার ঢাকাতে যায়, তার বেশির ভাগ সময় ট্রেনে যাওয়া আসা করি। কিন্তু আজকে বাধ্য হয়ে বাসে যেতে হয়। বাসে উঠলে আমার বমি বমি লাগে, মাথার মধ্যে অন্য ধরনের অনুভূতি হয়, মাথা ঘুরে। আসলে মাইগ্রেনের সমস্যার কারণে এমন হয়। মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে বাসে উঠলে প্রায় সবারই এমন হয়। কিছু করার নেই যেতে যেহেতু হবেই।

1000002858.jpg

কিছু দূর যাওয়ার পর বাসের ড্রাইভারের প্রতি আমাদের সবারই প্রায় বিরক্ত লাগতেছিল। গাড়ী যেন লোকাল বাসের মতো চালাচ্ছিল এবং একটু দূরে দূরে গিয়ে বাস দাড় করাচ্ছিল। এমনে করতে করতে আমরা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে চলে যায়। সেখানে গিয়ে বাস সহ আমরা ফেরিতে উঠে পরি। আসলে ঢাকা যাওয়ার পথে পদ্মা নদী পারি দিতে হয়। আর সেটা পার হওয়ার জন্য ফেরি ছাড়া কোন উপায় নাই। আমরা রাত ৮ টার পর ফেরিতে উঠি।

1000002895.jpg

রাতে ফেরীর উপর থেকে তোলা।

এরপর ফেরি ছেড়ে দেয়। নদী পার হতে মোটামুটি এক ঘন্টা মতো সময় লেগেছিল। নদী পার হওয়ার পরও আর ২/৩ ঘন্টা যাত্রা করার পর সাভার পাওয়া যায়। সাভার ফুলবাড়ীয়া আমার ভাইয়েরা থাকে। আমি বাসের সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রেখেছিলাম আমি যেই জায়গায় নামবো তার ঠিকান। কিন্তু সুপারভাইজারের মনেই ছিল না। আর আমিও অনেক দিন আগে গেছিলাম জায়গাটা বেশি চিনি না। যাই হোক পরে অনেকটা দূরে আমাকে নামায়ে দেয়, তখন রাত ১০ টার বেশি বাজে। পরে আমার ভাইয়াকে কল দিয়ে ঠিকানা জেনে নিলাম। এরপর আবারও একটা বাসে উঠে সেই জায়গায় চলে গেলাম। আজ দুই দিন ধরে সব জায়গায় বৃষ্টি হওয়ার কারণে পথ ঘাটে পানি জমা আর কাদা। যাই হোক অবশেষে রাত ১১ টার দিকে আমি ভাইয়াদের বাসায় পৌছে গেলাম।

এরপর পোশাক পাল্টে হাতমুখ ধুয়ে, রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। আবারও কালকে সকাল সকাল বের হতে হবে ভাইবা দিতে যাওয়ার জন্য। বাসে যাত্রা করে আমি বেশ ক্লান্ত হয়ে পরেছিলাম। এজন্য তারাতারি ঘুমায়ে পরলাম। আজকের পোষ্টটা এই পর্যন্ত। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।


1000007009.png

1000007010.gif

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আজকের পোষ্টটা পড়ার জন্য।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟

Loading...