চাকরি যুদ্ধে প্রথমবার।( পর্ব:-১).First time in job war. (part 1).
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।
![]() |
---|
|
---|
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের আজকের দিনটা ভালো কাটুক, আনন্দে কাটুক এই প্রাথর্না করি। আবারও চলে আসলাম আমার নতুন একটা পোষ্ট শেয়ার করার জন্য।
জীবন যখন যেমন, তখন সেভাবেই জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়৷ জীবনে কত যুদ্ধের কথা ইতিহাসের পাতায় পাতায় লেখা, বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় পরেছি। কিন্তু নিজের বাস্তব জীবনের সাথে যে যুদ্ধটা করতে হয় সেটার মূল্য যুদ্ধে হয়ত ঢুকতে পারছিলাম না। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী কিছুটা হলেও জীবন নামক সেই যুদ্ধটা উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। যেখানে অংশগ্রহণ করেছে হাজার হাজার যুব, টগবগে রক্তগরম তরুন। মুখে যেন চিন্তা, ক্লান্তির ছাপ। কি যেন এক বিষণ্ণতা তাকে ঘিরে রেখেছে। বলতেছি চাকরি নাম জীবন যুদ্ধের কথা। সরকারি চাকরি প্রত্যাশিত হাজার যুবক যুবতীর গল্প এটা। পারিবারিক কত লাঞ্চনা আর মুখ ছামটার পরেও এই যুদ্ধে অটুট থাকতে হয় একটু সুখের আশায়। হয়ত সৃষ্টিকর্তা এই বুঝি সফলতা দিয়ে দিল। আজকে আমার জীবনের প্রথম চাকরির পরিক্ষা দেওয়ার অভিজ্ঞতায় শেয়ার করতে চলেছি।
২০২৩ সালেই ডিপ্লোমা শেষ করেছি। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে এডমিশন পরিক্ষা দিলাম। কিন্তু সেখান থেকে হতাশা আর দুঃখ নিয়ে ফিরতে হলো। চিন্তায় যেন মাথা কাজ করে না। এখন কি করব, কি করা উচিত, কোথায় যাওয়া উচিত, কোথায় থাকা দরকার, কার সাথে পরামর্শ করা উচিত, এরকম হাজারও প্রশ্ন যেন মাথায় ঘুরতে থাকতেছিল। পরিবারকে কি বলব, কিভাবে তাদেরকে সাহায্য করব এই দুশ্চিন্তা গুলো যেন আমাকে একটু একটু করে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দিচ্ছিল। এরই মাঝে এডমিশন পরিক্ষার আগে কয়েকটা চাকরির পরিক্ষার আবেদন করেছিলাম। তার মধ্যে একটা ছিল MES ( Military Engineers Service) . এখানে আমি সাব এসিস্ট্যান্ট ইন্জিনিয়ার পদে চাকরির আবেদন করি। যদিও আমি কোনো চাকরির পড়াশুনা শুরু করি নাই। আবারও হতাশা নিয়েই এডমিশন দেওয়ার জন্য গাজিপুর শহরে আছি গত দুই মাস মতো। এর মাঝে MES পরিক্ষার মেসেজ আসল।
আমি তখন বাড়ী ছিল। বাড়ী থেকে গাজিপুর এসে কোনো রকম, একটু ডিপার্টমেন্ট পড়াগুলো দেখলাম, সুত্রগুলো দেখলাম, যাতে পরিক্ষাতে ডিপার্টমেন্ট অংশটা কোনো রকম ভালো করা যায়। আমি যানি পরিক্ষা ভালো হবে না, মূলত চাকরি পরিক্ষা গুলো কেমন, হয় প্রশ্নের ধরন এটা বোঝার জন্য পরিক্ষা দেওয়া। যদিও রিজিকে থাকলে এটাই হয়ে যেতে পারে। একেক জনের পরিক্ষার কেন্দ্র ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। আমার পরেছিল কুর্মিটলা, ঢাকা। এটা ঢাকা বিমানবন্দরে একটু আগে। আমি আগে কখনও সেখায়ে যায় নায়। কেন্দ্রটা ছিল BAF Shaheen College, Kurmitola. যেটা একে বারে আমার কাছে নতুন। আমি আমার পরিচিত কয়েকজন বড় ভাইকে কল দিয়ে জিগালাম কিভাবে সেখানে যাওয়া যায়। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমার কয়েকটা বন্ধুও পরিক্ষা দিবে, তারা মোটামুটি জায়গাটা চেনে, তাদের সাথেই যাওয়া যাবে।
পরিক্ষার আগের দিন আমি কম্পিউটারের দোকান থেকে আমার পরিক্ষার এডমিট কার্ডের অনলাইন কপিটা ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে এনে রেখেছিলাম। যাতে পরিক্ষার দিক কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। পরিক্ষার দিন আবার আমাদের শবে বরাত ছিল। যার জন্য আমি রোজা রেখেছিলাম। মূলত কষ্ট, হলেও নিয়ত করেছিলাম রোজা রেখেই পরিক্ষা দেওয়ার জন্য। সাহরী খেয়ে আমি রুমেই ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। সকাল ৯ টার দিকে ঘুম থেকে উঠলাম। আমার পরিক্ষা ছিল বিকাল ৩ টায়। ঘুম থেকে উঠে যথারীতি আমি ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল শেষ করে এসে পরিক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য রেডি হলাম। যেহেতু আমি গাজিপুর থাকি, আর পরিক্ষা মেইন ঢাকা শহরের মধ্যে, যাওয়ার সময় জ্যাম হতে পারে, আর জায়গাটা যেহেতু আমার কাছে নতুন অনেক ঘুরা লাগতে পারে, যার জন্য কয়েক ঘন্টা আগেই আমাকে বের হতে হবে। আমি রেডি হয়ে ৯:৩০ টার দিকে রুম থেকে বের হলাম বন্ধুদের মেসে যাওয়ার জন্য।
![]() | ![]() |
---|
|
---|
বন্ধুদের মেসে গিয়ে দেখি, আমার বন্ধুরা কেউ তখনও রেডিই হয় নাই। আমি যাওয়ার পর তারা রেডি হলো। এরপর আমি এবং আমার এক বন্ধু মেহেদী বেরিয়ে পরলাম পরিক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। রাস্তায় এসে যখন বাসের কাউন্টারে টিকিট কাটতে যাব। তখন সেখানকার অবস্থা দেখে আমি তো পূরো অবাক। এতো ভির, শত শত ছাত্র পরিক্ষা দিতে যাবে এই গাজিপুর থেকে। সবাই বাসের টিকিট কাউন্টারে ভির জমিয়েছে। দেখলাম, এভাবে দাড়িয়ে কয়েক ঘন্টায়ও টিকিট কাটতে পারব নানে। আমরা দুই বন্ধু একটা অটোতে করে আগে চলে আসলাম, গাজিপুর চৌরাস্তা। সেখান থেকে বাসে উঠার জন্য। চৌরাস্তা থেকে আমরা একটা বাসে উঠি বিমানবন্দরে নামার জন্য। বাস আমাদেরকে ১১:৩০ টার দিকে বিমানবন্দরে, কুর্মিটলার অপজিট রাস্তায় নামিয়ে দেয়। আমরা যেহেতু জায়গাটা চিনি না এজন্য বাস থেকে নেমে, পাশে একটা ফ্যাক্টরির দায়িত্বে থাকা গার্ডকে জিগালাম, কেন্দ্রের জায়গাটার কথা তিনি আমাদেরকে বলে দিলেন, কিভাবে যেতে হবে।
![]() | ![]() |
---|
|
---|
এরপর আমরা হাটা শুরু করলাম। প্রথমে আন্ডার পাস রাস্তা দিয়ে আমরা রাস্তা পার হলাম। এটা মূলত মাটির নিচ দিয়ে, রাস্তার এক পাশ থেকে অপর পাশে যাওয়ার সিস্টেম। আমরা হেটে অপর পাশে গিয়ে, পূর্ণরায় আর একজন ব্যক্তিকে জিগাস করলাম স্থানটার বিষয়ে। তারপর আমরা হাটা শুরু করলাম। জানতে পারলাম কয়েক মিনিট হাটলেই আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌছে যাব। আমরা মোটামুটি দুপুর ১২:৩০ টার দিকে পরিক্ষার কেন্দ্রে পৌছে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, শত শত ছাত্র সেখানে এসে ভির জমিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছে পরিক্ষা দেওয়ার জন্য। এরিয়াটা মূলত সেনাবাহিনীদের। এজন্য অনেক সুন্দর চারিদিকের পরিবেশটা। আমরা গিয়ে রাস্তার পাশে সবার মতো কিছু সময় বসে থাকলাম।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
![]() | ![]() |
![]() | ![]() |
পরিক্ষা দিতে আসা শত শত মানুষ।
এরপর যখন যোহরের আজান দিল, সেখানে একটা মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য চলে গেলাম। চলবে.....................................
আজকে এই পর্যন্তই, পরবর্তী অংশ, পরের পোষ্টে আলেচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ। তত সময় স্টিমিটের সাথেই থাকুন, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে।
টুইটার শেয়ার লিংক :-
https://x.com/DrawingBd1/status/1892143177957593319?t=yTmCojweHWAm673uWYK5HQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Your post has been supported by THE PROFESSIONAL TEAM. We support quality posts, quality comments anywhere, and any tags
Thank you so much for your support. 🙏
আপনার পোস্টটা খুবই প্রাসঙ্গিক ও বাস্তব, আমাদের অনেকেরই এই রকম অভিজ্ঞতা থাকে। চাকরির যুদ্ধটা যেমন কঠিন, তেমনই প্রতিটি পদক্ষেপে এক নতুন শিক্ষা থাকে। আপনার পরবর্তী পরীক্ষাগুলোর জন্য শুভ কামনা রইলো ভাই। এত সুন্দর একটা বিষয়বস্তু আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।