প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটা দিন।

in Incredible India8 days ago
1000003686.jpg

Hello Steemians,
হঠাৎ যেন কাল বৈশাখী ঝড়ের আগমণ, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস শুনেছি। উপায় দিক মিলিয়ে আতঙ্ক সকলের মনে কাজ করছিল। সারাদিন বাড়িতে থাকতে থাকতে অনেকটা বিরক্তই লাগছিল। ঘুমের ওষুধে ও তেমন বিশেষ কাজ হয়নি তাই রাতে না ঘুম হওয়ার কারণে সকালে ঘুম থেকে উঠতে উঠতেই প্রায় দুপুর দেড়টা বেজেছিল।

1000003666.jpg

মূলতঃ বাবাকে খুঁজে মাছের খাবার নিয়ে আসার কথা বলার জন্যই আমার বাজারে পৌঁছানো। ঈশান কোণে ঝোড়ো মেঘ দেখেই যেন মনে হচ্ছিল যে তখনই দমকা হাওয়া বইতে শুরু করবে। একটু দ্রুত গতিতেই পায়ে হেঁটে বাজারে পৌঁছেছিলাম। এই আবহাওয়ায় কোন গাড়ি ও পাওয়া যাবে না। কারণ বর্তমান মেঘ করলেই প্রচুর বজ্রপাত, তাছাড়া গ্রামে যে অটো ভ্যান গুলোতে আমরা যাতায়াত করি এগুলোতে ছাউনি থাকে না।

চারিদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ হঠাৎ যেন এক চমক আলো ভেসে উঠলো। এটাকে আসলে কি ধরনের অদ্ভুত বলা হয় আমার জানা নেই, তবে বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা বলে মেঘ ভাঙা রোদ্দুর। তবে এই সূর্যের আলো একদমই স্বাভাবিক ছিল না। আমি এই দৃশ্যটাকে ধরে রাখার জন্যই মোবাইলটা বের করে দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দি করেছিলাম। সর্বোনিম্ন হলেও এই দৃশ্যটা প্রায় ৬০/৭০ মিটার দূরত্ব থেকেই ক্যাপচার করেছিলাম।

1000003663.jpg

যুগ যুগ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ির বয়জ্যেষ্ঠদের মতো এই বয়স্ক নারকেল গাছের মাথায় নজর পড়তেই বুঝলাম যে ইতিমধ্যে দমকা হাওয়া বইছে কিন্তু ততোক্ষণে ও আমরা দোকানের বাইরে বসে বাতাসের গতি উপলব্ধি করতে পারছিলাম না।

**"বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- এই গাছ গুলো যদি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে না থাকতো হয়তো কোনো এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিলীন হতো দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত মানচিত্র থাকা এই ক্ষুদ্রতম বাংলাদেশের একটা অংশ। পৃথিবীর থেকেই আমাদের অস্তিত্ব হারিয়ে যেতো।"**

1000003667.jpg

এই আবহাওয়ায় ও সন্তানের জন্য মা ছুটে এসেছেন ফার্মেসিতে। আবহাওয়া যেমনই হোক সন্তানের কিছু হলে মায়ের ভোগান্তির আর মুক্তি। একমাত্র উদ্দেশ্য এটাই যে সন্তানকে সুস্থ্য করতেই হবে।

1000003665.jpg

বাতাস ও বৃষ্টি সমানতালে শুরু হয়েছিল, দোকানদার দোকানে সামগ্রী টেকাতে দোকানি বন্ধ করে দিয়েছিল। এই তো বৃষ্টি বৃষ্টি করেই আমাদের মাথাই নষ্ট হচ্ছিল কিন্তু অনেক দিন বাদের হঠাৎ এই দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি কোনো কিছুই যেন সামাল দিতে পারছি না আমরা। সব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু হঠাৎ এবং অতিরিক্ত হলে তো একটু মুশকিলই হয়।

1000003684.jpg

যেহেতু, অনেক বৃষ্টি তাই অটো গুলো গ্যারেজে ও দোকানের সামনে বারান্দায় রাখা তবে অটোচালককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এখানকার স্থানীয়ই যারা অটোচালক, তাই কল করে আমি দ্রুত ফিরে ফিরেছিলাম। তবে ভারী খারাপ লাগছিল রাস্তার পাশে থাকা পুকুরের এই অবস্থা দেখে।

কোনোভাবেই আর জলকে আটকানো সম্ভব হলো না, দেখুন কি ক্ষিপ্র গতিতে জল পুকুরে প্রবেশ করছে। অন্যদিকে মাছের সেই ফুর্তি হয়েছে বৃষ্টির জল পেয়ে। ৯৯.৯৯% মাছই স্রোতের উল্টো দিকে যেতে ভীষণ পছন্দ করে। জল যেমন পুকুরে পড়ছিল অন্যদিকে ট্যাংরা মাছ গুলো দৌড়ে পুকুরের বাইরে যাচ্ছিল। আমি দ্রুত বাড়িতে গিয়ে মোবাইল রেখে একটা বালতি ও জাল নিয়ে দৌড়ে এসেছিলাম।

কখনোই মাথাতে আসেনি যে এই সময় এভাবে জলের প্রভাবে মাছ বেরিয়ে যেতে পারে। মাথাই নষ্ট ;- ট্যাংরা মাছ ধরতে গিয়ে দেখলাম শিকল বেঁধে চল্লিশের বাগদা চিংড়ি ও যেতে শুরু করেছে। চল্লিশের বাগদা অর্থাৎ চল্লিশটা বাগদা চিংড়িতে এক কিলো:। বাগদা ও গলদা চিংড়ি বিশেষ করে যদি চিন্হ পাওয়া যায় যে হেঁটে বাইরে যাচ্ছে তাহলে বুঝতে নিতে হয় আর পুকুরে অবশিষ্ট নেই।

বাংলা বর্ষের প্রথম মাস যেতে না যেতেই শুরু হলো দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের টিকে থাকার লড়াই। আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি।

Sort:  
Loading...



Curated by : @edgargonzalez

 7 days ago 

@edgargonzalez,
Thank you so much 😊

 6 days ago 

এ বছরে বৃষ্টি যেভাবে হচ্ছে সেভাবে বৃষ্টি হলে সব জায়গাতেই মনে হয়। বন্যা দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো আর আমরা আটকাতে পারবো না। গ্রামের দিকে যাদের মাছের চাষ সেসব কুকুরগুলো ভর্তি হয়ে গেলে খুবই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের এখানে বলতে গেলে প্রায় প্রত্যেকদিন বৃষ্টি লেগেই রয়েছে। আপনার প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দর মুহূর্ত তুলে ধরেছেন।