অন্যরকম একটি বিকেল।

in Incredible India19 days ago
1000000810.jpg

নমস্কার বন্ধুরা,
ফেলে আসা শৈশব কার না মনে পড়ে! আমাদের প্রত্যেকেরই বেড়ে ওঠা শৈশবটা স্মৃতি ঘেরা। আমিও সেইটারই অন্তর্ভুক্ত। ইতিমধ্যে আপনারা আমার শীর্ষক দেখেই হয়তো লেখার বিষয়বস্তু বুঝে গিয়েছেন।

আজ বিকেলে ইচ্ছে করেই ঘুমাতে যাইনি, কারণ আগামীকাল বিকেলে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। তাছাড়া বিকেলে ঘুমানোটা শরীরের জন্য ও ক্ষতিকর। যাইহোক, বিকেলে সময় অতিবাহিত করার জন্যই বেরিয়েছিলাম। পাশাপাশি, সুযোগে সৎ ব্যবহার করলাম। অনেক দিন বাদে একটু অন্যরকম সময় অতিবাহিত করার বিষয় নিয়ে চলে আসলাম।

1000000796.jpg

ওরে বাবা, ঘরের খাট ভেঙে ফেলার উপক্রম, সবাই এক সাথে মিলে খোসগল্প চলছে। ওদের সকলের সাথে আমিও যুক্ত হলাম। আমি যুক্ত হওয়ায় দল আরো একটু ভারী হয়েছিল।

1000000798.jpg

1000000800.jpg

1000000799.jpg

1000000801.jpg

এই পুচ্কুর আঁকা'র হাত অনেক ভালো এবং বিভিন্ন জিনিস তৈরি করায় ও খুব আগ্রহ। কিছু সময়ের মধ্যেই বায়না ধরনো তাঁর তৈরি করা খেলনা দেখতে হবে। এমনকি দেয়ালে লাগানো কয়েকটি drawing ও আছে সেগুলো দেখতে আমাকে হাত ধরে নিয়ে গিয়েছিল।

আমি তো রীতিমত অবাক যে আমরা কি করলাম। এই শিশুটির কাছে তো আমরা অনেকেই শিক্ষার্থী। আপনাদের কাছে কেমন মনে হয়েছে জানিনা তবে আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছিল। ঘর ভ্রমণ এবং আমাকে দেখানো শেষ এবার বাইরে যেতে হবে।

1000000802.jpg

অনেক দিন বাদে সেই স্মৃতি জড়ানো বাগানের মাঠে যেখানে বিকেলের এই সময়টাতে হৈচৈ লেগেই থাকতো। আমরা ছোট হলে কি হবে তখন কাকিমাদেরকেও মাঝেমধ্যে ধরে নিয়ে আসতাম যদি খেলায় বন্ধুরা কম উপস্থিত হতো। মুরগিটাকে দেখিয়ে পুচকু বললো ওটা নাকি তাঁর মুরগি।

হাঁ হাঁ হাঁ, মুরগির বডিতে এমনভাবে রং করা হয়েছে এটা কি আসলেই মুরগি নাকি কৃত্রিম মুরগি সেটাই বুঝতে পারতেছিলাম না। কিন্তু হাসিটা অনেক কষ্ট করেই সামলে রেখেছিলাম না হলে বিপদ।

1000000804.jpg
1000000805.jpg
1000000803.jpg

জায়গাটা দেখে বোঝাই যাচ্ছিল না যে এখানে এক সময় বড় খেলার মাঠ ছিল। তুজু(পুচকু) যেখানে বসেছিল সেখানে ছিল একটা পুকুর। আমরা খেলার সময় মাঝেমধ্যেই জেতার নেশায় এই পুকুরে লাফিয়ে পড়তাম। একবার তো আমার পায়ের হাড় ভেঙেই গিয়েছিলাম এখানে লাফিয়ে পড়ার জন্য।

ওহ! খুব মিস করি সেই দিনগুলো। আবার যদি ফিরে পেতাম! যাইহোক, তুজু ছবি তুলবে, একদমই নাছোড় বান্দা। আগেই গিয়ে গাছের গুঁড়ির ওপরে গিয়ে বসেছিল। আমিও বিলম্ব না করে কয়েকটা ছবি তুলে নিয়েছিলাম।

1000000807.jpg

বর্তমানে আমাদের গ্রামে ও বিভিন্ন জায়গায় মালটা গাছ লাগানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, মালটার ফলন ও বেশ ভালোই দেখা যাচ্ছে। সেই দেখাদেখি অন্যান্য অনেক পরিবার তাদের ফেলে রাখা জায়গা তে মালটা গাছ লাগানো শুরু করেছে।

শৈশবের খেলাধুলা নিয়ে কিছু কথাঃ
এই যে মালটা ধরেছে যে গাছটিতে সেখানেই আমরা দাড়িয়াবান্দা, গোল্লাছুটও উঠলে লাফি বসলে কিল দল বেঁধে এই খেলা গুলোই বেশি খেলতাম। এই নাম গুলো অনেকের কাছেই অপরিচিত লাগবে তবে খেলা গুলো কিন্তু দূর্দান্ত ছিল। কিসের ফুটবল? মনে করুন এক সেকেন্ডের জন্য বিরতি নেওয়ার উপায়ই ছিল না উঠলে লাথি বসলে কিল খেলাটিতে।

কবি ছিল এখানেই নীরব, এই খেলায় চালাকি করে একদমই কোনো ফায়দা নেই। একদিন বিকেলে আমার এক পিসি ভীষণ আঘাত পেয়েছিল খেলার মধ্যে। আমি বিরোধী পক্ষ ছিলাম কিন্তু ঐটা দেখতেই দৌড়ে আসা তখনি ঘটলো বিপদ। আমি তো আটক এবং ঐ সময়ই আমার পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। মজার বিষয় হলো এক ঠাকুরমা এসেই টেনে টুনে হাড় ঠিক করে দিয়েছিল। যে যন্ত্রনা হচ্ছিল সবাই ভেবেছিল হাড়টা বোধ হয় ভেঙেই গিয়েছিল।

হঠাৎ করেই এতো ভালো কিছু সময় অতিবাহিত করতে পারবো নিজেই বুঝতে পারিনি। আজকের বিকেলটা একদম ই অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিন্ন ছিল। অনেকদিন ধরে বিকেলে প্রায় ঘুমানো হয় কিন্তু আজ বিকেলে ইচ্ছে করেই বেরিয়েছিলাম।

যাইহোক, আমার আজকের লেখাটি এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ্য থাকুন।

Sort:  
Loading...
 14 days ago 

শৈশবের কথা হয়তো বা সবার মনে পড়ে কিন্তু চেষ্টা করলেই শৈশবে আর ফিরে যাওয়া সম্ভব না আপনি আজকে আপনার ছোট্ট পুচকু সোনার গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আসলে তার ফটোগ্রাফির হাত অনেক বেশি সুন্দর। খুব সুন্দর ভাবে চিত্র অঙ্কন করেছে। ছোটবেলার খেলাধুলার বিষয় নিয়ে আপনি আমাদের সাথে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার আনন্দঘন বিকেলের কাটানো মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।