একটা দূর্দান্ত দুপুর।
![]() |
---|
Hello Steemians,
আজকের দুপুরে একটু একটু কাজের পাশাপাশি শৈশবেও ফিরে গিয়েছিলাম। আবহাওয়া ও অনুকূলে ছিল, তাই বাইরের শীতল হাওয়া গামে লাগাতেই হঠাৎ দুপুরে পূর্ব পাশের বিলে গিয়েছিলাম। তবে গিয়েই দেখলাম ইতিমধ্যে আমাদের কাজ সম্পন্ন হয়েছে যেটা আমার কাকুতি করেছিল।
![]() |
---|
এটা মূলত আমাদের পুরনো বাড়ির সামনের রাস্তা। সেখানে রাস্তার পূর্ব পাশে থাকা পুকুরে রয়েছে গোলবাগান, গোলবাগান অর্থাৎ গোলপাতা গাছ। নিশ্চয়ই আপনারা গোলপাতা সম্পর্কে সকলেই অবগত। হয়তো দেশ, কাল ও অবস্থান ভেদে আপনাদের দেখার সুযোগ নাও হতে পারে। পাশাপাশি পৃথিবী বিখ্যাত সুন্দরবনের নাম যারা শুনেছেন তারা নিঃসন্দেহে গোল পাতার নামও শুনেছেন।
![]() |
---|
![]() |
---|
যাইহোক, গোলপাতার বিষয়বস্তুতে পরে আসছি পূর্বেই আমাদের কেটে রাখা গোলপাতা আজকে দেখে নিই। গোলপাতার যে ছোট্ট ঝাড়টি রয়েছে সেখান থেকে আমার পুরনো বাড়ির কাকু ইতিমধ্যে প্রয়োজনমতো গোলপাতা কেটে নিয়ে অপর প্রান্তে চলে এসেছিল।
আমি লেখার শুরুতেই শৈশবের একটা বিষয় উপস্থাপন করেছি। যদিও লেখাতে উপস্থাপিত ছবি এবং বিষয়বস্তুর আলোকে এটা শৈশবের ধারে কাছেও না এমনটাই মনে হতে পারে। তবে আমাদের শৈশবটা এতটাই স্মৃতি মধুর চেয়ে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে কোনো না কোনো বিষয়বস্তের সাথে এটা কি আমাদের তুলনা করতেই হয়।
আমাদের গ্রামে এখন গোল পাতার ছাউনিযুক্ত ঘর নেই বললেই চলে। তবে কয়েক বছর পূর্বেও আমাদের গ্রামে শুধুমাত্র গোলপাতা ছাউনীর ঘরই ছিল। কংক্রিটের ভবন তো কল্পনা বরং টিনসেটের ছাউনীর ঘরও দেখা যেত না। প্রতিবছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘর মেরামতের কাজটাই ছিল যেন মোক্ষম।
আমার শৈশবের সময়ে গোলপাতার এরূপ ব্যবহারের জন্য সারাবছরই অনেক চাহিদা থাকতো। ঐ সময়ের বাজারমূল্য অনুযায়ী মূল্য যথেষ্ট বেশিই ছিল। আবার কেউ কেউ বাওয়ালি হিসেবে প্রতিবছর বনে ও যেতো গোলপাতা কাঁটার জন্য। এভাবে অনেক পরিবার তাঁদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতো।
এই গোলপাতা শুধুমাত্র পাতা মনে করা যাবে না এটার সাথে অনেক কিছুই জড়িত। নিজ পরিবারের জীবন-জীবিকার জন্য এই গোলপাতা কাটতে গিয়ে কতো মানুষ সুন্দরবনের পাহারাদার বাঘের আহার হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। আবার এই গোলপাতার ঝোপই কোটি কোটি পশু পাখির আশ্রয়স্থল।
উপরে উপস্থিত একটি ছবিতে দেখুন লম্বা একটা গোলপাতার ছাউনী যুক্ত ঘর দেখা যাচ্ছে। এটা মুরগির খামারের জন্য এভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বহির্বিশ্ব না হলেও প্রতিবেশী দেশ এবং বাংলাদেশের সকলেই জানবেন যে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে মুরগির খামার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আশি শতাংশই গোলপাতার ছাউনি যুক্ত ঘর। বাকি বিশ শতাংশ গোলপাতার অভাবে অন্যভাবে প্রস্তুত। পাশাপাশি মুরগির খামারের জন্য উপযুক্তই হলো গোল পাতার ছাউনী যুক্ত ঘর।
![]() |
---|
এটা কিন্তু সেই দেশী খেজুরের গাছ যেটা এখনো আমাদের এলাকায় পাওয়া যায়। যদিও আগের মতো সর্বত্র আর খেজুর গাছ দেখা যায় না তবে আছে এখনো। ছোটবেলায় প্রতিযোগিতা চলতো কে আগে খেজুর গাছ থেকে পাকা খেজুর তুলতে পারে। খেজুর গাছে রয়েছে বড় বড় ধারালো কাঁটা, ফল খেতে সুস্বাদু কিন্তু ঝুঁকি ও আছে।
পাশাপাশি একটা সুবিধা যে খেজুরের কাঁটা কখনো শরীরে স্থায়ী না। কোনো না কোনো ভাবে শরীরের যে কোনো স্থান থেকে এই কাঁটা বের হবেই হবে। যেটা আমার নিজের ক্ষেত্রে ও ঘটেছিল।
![]() |
---|
এই যে গাছ ও ফল দেখছেন এটাকে বলা হয় বল্লা গাছ, অন্য কোনো নাম আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে শৈশবে স্কুল থেকে ফেরার পথে পাকা বল্লা সংগ্রহ করতে কতো সংগ্রাম করেছি!!! ঘুড়ির কাগজ লাগাতে এটাই ছিল আমার প্রথম প্রাধান্য।
আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।