Incredible India monthly contest of March #2| Do you acknowledge accumulating protection should be our birthright?

in Incredible Indialast month (edited)

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? সকলেই সুস্থতা কামনা করে আমি আমার আজকের লেখাটি শুরু করছি। আমাদের কমিউনিটিতে একটি কনটেস্টের আয়োজন করা হয়েছে। এই কনটেস্টটির বিষয় 'নিরাপত্তা রক্ষা কি আমাদের জন্মগত অধিকার?'---এই বিষয় নিয়ে। টপিকটি দেখে অনেকবার ভেবেছি এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করবো কি না। কারণ এই বিষয়টা সম্পর্কে আমি যতটা আমার ভাবনা চিন্তা প্রকাশ করতে চাইছি ততটা করে উঠতে পারব কিনা সেই বিষয়ে খানিকটা সন্দেহ হচ্ছিল। তবে আজ কনটেস্টের অন্তিম দিনে মনে হল সম্পূর্ণটা না হলেও খানিকটা চিন্তাভাবনা তো শেয়ার করা যেতেই পারে। ইতিমধ্যে এই কনটেস্ট টিতে পার্টিসিপেট করার জন্য অনেক সদস্যই আমাকে মেনশন করেছেন। তাই আজ অন্তিম ক্ষণে আমি এই কনটেস্টে পার্টিসিপেট করছি।

কনটেস্ট এর বিষয় আপাতদৃষ্টিতে যতটা সহজ, ততটাই গভীর। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই 'নিরাপত্তা' শব্দটি প্রত্যেকটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কনটেস্টে যে সকল প্রশ্নের উল্লেখ আছে একে একে সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

কনটেস্টের নিয়ম অনুযায়ী আমি প্রথমেই কিছু সদস্যকে এই কনটেস্টে পার্টিসিপেট করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। যদিও হাতে খুব অল্প সময়ই রয়েছে, তবুও এই স্বল্প সময়ে যদি কেউ চান অবশ্যই পার্টিসিপেট করতে পারেন। আমি যাদেরকে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তারা হলেন --- @stef1 , @Papiya Halder এবং @isha.iah

Do you acknowledge accumulating protection should be our birthright?

এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলতে চাইবো----হ্যাঁ, নিরাপত্তা অবশ্যই আমাদের জন্মগত অধিকার হওয়া উচিত। তাই নিরাপত্তাকে ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিরাপত্তা শুধুমাত্র শারীরিক নিরাপত্তা নয় বরং তার সাথে মানসিক নিরাপত্তার কথাও বলা হয়েছে। একটা শিশু যখন একটা ভয়হীন, সুষ্ঠ পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠে সে নিজেকে অনেক বেশি নিরাপদ মনে করে। আর এই নিরাপত্তা পুরুষ, মহিলা, শিশু নির্বিশেষে পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষের অধিকার।

1000231709.jpg

Link

২০১৯ সালের মানব অধিকার আইনের ২৯ নং ধারায় বলা হয়েছে--- সমাজের প্রতিটি মানুষের আত্মরক্ষা ও নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে। এই বিষয়টিকে যেখানে এত গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে আমার সন্দেহের কোন অবকাশ থাকে না যে নিরাপত্তা প্রত্যেকটি শিশুর জন্মগত অধিকার হওয়া উচিত।

Which lessons must we teach the tender generation about self-protection ?

যেকোনো দেশের মেরুদন্ড হলো সেই দেশের যুবসমাজ। আর এই যুবসমাজকে আদর্শ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শৈশব থেকেই তাদেরকে আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। একটা সময় ছিল যখন শুধুমাত্র মেয়েদের ওপরেই বিভিন্ন রকমের নির্যাতন হত। তাই ছোট থেকেই তাদেরকে বিভিন্ন রকমের আত্মমর্যাদা রক্ষার পাঠ পড়ানো হতো। তবে আজকালকার দিনে শুধুমাত্র মহিলারাই নয়, পুরুষরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাই নবপ্রজন্মকে অর্থাৎ ছেলে কিংবা মেয়ে উভয়কেই ছোট থেকে আত্মরক্ষার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। সেই সাথে বাচ্চারা অনেক সময় ঠিক কিংবা ভুল বিচার করতে পারে না। তাই তাদেরকে ছোট থেকেই বিভিন্ন রকম শিক্ষণীয় ভিডিও কিংবা অভিনয়ের মাধ্যমে ঠিক , ভুল বিবেচনা করতে শেখাতে হবে।

বর্তমানের একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সেনসিটিভ টপিক হল যৌন নির্যাতন। এই যৌন নির্যাতকারীরা কোনো বয়স মানে না। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বহু খবর আমাদের কানে আসে, আমরা এখন প্রায়ই দেখতে পাই শুধুমাত্র মহিলারা নয়, ছোট বাচ্চারা এমনকি বৃদ্ধ মানুষরাও কিন্তু এই যৌন নির্যাতনে শিকার হচ্ছেন। তাই মানুষের নিরাপত্তা ঠিক কতখানি রয়েছে এই সমাজে এই বিষয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।

তাই ছোট থেকেই বাচ্চাদের অনেক কিছু শেখানো দরকার। বাড়িতে বড়ো কেউ না থাকলে যেই আসুক না কেন তাকে যেন বাড়িতে ঢুকতে না দেয়, এবং কারোর ব্যবহারে যদি কোনো প্রকার অস্বস্তি বোধ হয় তাহলে অবশ্যই যেন তারা বাড়ির বড়দের জানায়, সেই বিষয়েও তাদের শেখাতে হবে।

এই যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশু সমাজের একাংশ। এদের মধ্যে অধিকাংশই বুঝতেই পারেনা নিজেদের সাথে কি হচ্ছে। তাই এখন বর্তমানে প্রতিটি সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলে "good touch" ও "bad touch" এর ব্যাপারে বাচ্চাদের শেখানো হয়। যার ফলে বাচ্চারা বুঝতে পারে দেহের কোন কোন পার্টে হাত দেওয়ার অধিকার একান্ত তাদের নিজের এবং তার খুব কাছের মানুষদের অর্থাৎ বাবা এবং মায়ের। বিদ্যালয় গুলিতে এটাও শেখানো হয় যে, যদি কোথাও তাদের সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করে বা শরীরের পার্সোনাল পার্টে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে তারা যেন সেই মুহূর্তে চিৎকার করে এবং কাছাকাছি থাকা বড়ো মানুষের সেটা জানায়।

এর পাশাপাশি আত্মরক্ষার জন্য বাচ্চাদের অবশ্যই আত্মরক্ষামূলক বিভিন্ন কর্মসূচির সাথে যুক্ত করা উচিত। এখন বর্তমানে অনেক বাচ্চাদেরই ক্যারাটে শেখানো হয়। তাছাড়া বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলগুলোতেও বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনের শেষে এই ক্যারাটে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার ফলে মেয়েরা কিছুটা হলেও নিজেদের আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হবে।

1000231676.jpg
Link

সেই সাথে বাচ্চাদেরকে আগত সমস্যা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য বেশ কিছু হেল্পলাইন নাম্বার মুখস্ত করাতে হবে। যেমন--চাইল্ড লাইন নম্বর (১০৯৮), যা সমগ্র ভারতে প্রযোজ্য। এছাড়া পুলিশের নাম্বার ও মুখস্ত করাতে হবে। তাতে তারা কোন বিপদে পড়লে সাহায্য পেতে পারে।

এই সমস্ত বিষয়গুলো কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বর্তমানে বিদ্যালয়, কর্মক্ষেত্র বিভিন্ন জায়গাগুলো পুরুষের জন্য ভীষণই অসুরক্ষিত হয়ে উঠেছে। তাই তাদেরকেও উক্ত সমস্ত বিষয়গুলোতেই অবগত হতে হবে।

How can we protect children and women(inside and outside the home)?

আসলেই এই প্রশ্নের উত্তরটি ভীষণ জটিল। কারণ বর্তমানে একটি শিশু বা একজন মহিলা যে শুধুমাত্র বাড়ির বাইরে অর্থাৎ কর্মস্থলে বা অন্যত্র অসুরক্ষিত তা কিন্তু নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় বাড়ির মধ্যে থাকা সদস্যরাই বাড়ির শিশু এবং মহিলাদের ওপর যৌন নির্যাতন করছে। এরকম অনেক তথ্যই কিন্তু প্রতিবছর উঠে আসে। তাই আমরা একেবারেই বলতে পারি না যে আমরা প্রত্যেকে বিশেষ করে শিশু এবং মহিলারা বাড়িতে পুরোপুরি সুরক্ষিত।

শিশুরাও এখন বর্তমানে ভীষণ পরিমাণে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর তারা যে সব সময় অপরিচিত কোন মানুষের দ্বারাই এইরকম নির্যাতিত হচ্ছে তা কিন্তু নয়, অনেক তথ্যই উঠে আসে যেখানে দেখা যায় বাড়ির সদস্যরাই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে। তাহলে আপনাদের মনে কি প্রশ্ন জাগে না যে, একটা শিশু তাহলে ঠিক কোথায় গেলে নিরাপত্তা পাবে?

1000231710.jpg

Link

আর বাড়ির বাইরে বেড়োলে ট্রেনে, বাসে, ট্রামে, বিদ্যালয়ে, কর্মস্থলে মহিলাদের নানা রকম ভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। বিগত কয়েক বছরে ভারতের এরকম অনেক তথ্য উঠে এসেছে যেখানে যাদের ওপর এরকম যৌন নির্যাতন করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই কিন্তু শিক্ষিত মহিলা--- কেউ ডাক্তার, কেউ বড়ো কোন বিজনেস এর সাথে যুক্ত ইত্যাদি। এই প্রসঙ্গে সমকালীন একটা ঘটনার কথা তো উল্লেখ করা যেতেই পারে, যেটা এখনো পর্যন্ত বেশ তরতাজা রয়েছে। কলকাতার নামকরা এক হাসপাতালে এক ইন্টার্নশিপরত মহিলা চিকিৎসক এর ধর্ষণ ও খুন। যাকে নিয়ে কিছুদিন সমাজে বহু আন্দোলন চলল। তাহলে ভাবুন তো একটা শিক্ষিত মহিলা যে তার জীবনের এতগুলো বছর কঠোর পরিশ্রম করে ডাক্তার হতে চলেছিল তাকেও তার কর্মস্থলেই অকারণে জীবন দিতে হলো কতগুলো নরখাদকের হাতে। তাহলে আমরা কি এখনো বলতে পারি যে আমরা নিরাপদ!

1000231677.jpg

Link

তবে এইভাবে তো সমাজ চলে না। এর একটা শেষ থাকা উচিত। প্রত্যেকটা মানুষ যাতে এই পৃথিবীটাকে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারে তাই আমাদের প্রথম থেকেই অর্থাৎ নবপ্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। আর শুধু নব প্রজন্ম নয় আমাদের নিজেদেরকেও পরিবর্তন করতে হবে। মহিলা বা শিশু বা পুরুষ কেউই ভোগ্য পণ্য নয় এটা আমাদের বুঝতে হবে।

যতক্ষণ না মানুষের বিবেকের পরিবর্তন ঘটছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই নিরাপত্তা কখনোই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না। তাই প্রত্যেকটা মানুষকে "মানুষ" হয়ে উঠতে হবে, যার মধ্যে 'মান' ও 'হুশ' দুটোই বর্তমান থাকবে। তাই শুধু পুঁথিগত শিক্ষা নয় , বিবেকবোধকে জাগ্রত করার শিক্ষায় মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তাহলেই হয়তো প্রতিটি মানুষ বাড়িতে এবং বাড়ির বাইরে উভয় জায়গাতেই সুরক্ষিত বোধ করবে। অন্যথা এই পৃথিবীর কোথাও নিরাপত্তা পাওয়া যাবে না।

Do you think each country's law should be relentless regarding safeguarding children and women?

হ্যাঁ, অবশ্যই আমি মনে করি প্রত্যেকটা দেশেরই কিছু আইন থাকা উচিত যার মাধ্যমে শিশু এবং মহিলাদের তথা সমস্ত মানুষেরই নিরাপত্তার অধিকার রক্ষিত হয়। যদিও এই বিষয়ে কমবেশি সব দেশেই বেশ কিছু আইন-কানুন প্রবর্তিত হয়েছে। এবং সব জায়গাতেই মহিলা এবং বাচ্চাদের নিরাপত্তার উপরে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

তবে আমার মনে হয় শুধুমাত্র আইন প্রণয়ন করলেই চলবে না। কোনো পরিস্থিতিতে শিশু এবং মহিলাদের উপরে কোনো প্রকার নির্যাতন হলে তার গভীরতা অনুযায়ী সেই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়াও প্রয়োজন। এতে সমাজের অন্য মানুষেরা সেই একই রকম দোষ করতে ভয় পাবে। তার ফলে সমাজে কিছু পরিমাণ নির্যাতন কমবে বলে আমার মনে হয়।

1000231712.jpg

Link

সেই সাথে সরকারি তরফ থেকে বাচ্চাদের আত্মরক্ষার বিষয়ে আরো অনেক কিছু শেখানোর জন্য বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন ক্যাম্পেনিং এর আয়োজন করতে হবে। সেখানে বিনামূল্যে আত্মরক্ষামূলক বিভিন্ন কৌশল শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

কনটেস্টে উল্লেখিত প্রশ্নগুলির আমি আমার মত করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলাম। আপনারা অবশ্যই আপনাদের মন্তব্য জানাবেন। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোন লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।

Sort:  
Loading...

Hello @pinki.chak, thank you for your contribution to our account.

 last month 

Thank you so much

Loading...
 last month 

প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রতিযোগিতার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর এত সুন্দর ভাবে দেয়ার জন্য আপনার সাথে আমিও সহমত পোষণ করছি অবশ্যই নিরাপত্তা একটা মানুষের জন্য জন্মগত অধিকার হওয়া উচিত সেই সাথে বাহিরে এবং ঘরে কিভাবে আমরা নিরাপদ থাকতে পারি সেই বিষয়টা আপনি চমৎকার ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।