স্টুডেন্ট এর জন্মদিন
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আরও একটি নতুন গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভাল লাগবে।
নিজের পরীক্ষার ঘন্টা বেজে গেলেও এখনই স্টুডেন্টদের পড়ানো কামাই করা যাচ্ছে না। কারণ ওদেরও পরীক্ষা চলছে। তাই গতকাল বিকেলে প্রতিদিনের মতোই পড়াতে চলে গিয়েছিলাম। তবে তার আগের দিন বাচ্চাটির জন্মদিন ছিল। আর সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম। কারণ গত এক মাস ধরে সে আমাকে প্রায়দিনই বলে,"জানো ম্যাম ৮ই আগস্ট কি আছে?" আর আমি ভুলে যেতাম। তারপর আবার মনে করিয়ে দিতে,"আমার জন্মদিন আছে।" তাই ওর জন্মদিন আমার ভুলে যাওয়ার কথা নয়। আগের দিন নিজেদের বাড়িতে পরিবারের লোকজনদের নিয়ে সেলিব্রেট করা হয়েছিল। আমাকেও যেতে বলেছিল, তবে যেহেতু ওদের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ির দূরত্ব অনেকটাই তাই রাত্রিবেলায় আর যাওয়া সম্ভব হয়নি।
আমি যেতে পারব না সেটা আমি আগে থেকেই জানিয়েছিলাম। আর তার ওপরে যেহেতু পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে তাই আমারও একটু প্রেসার চলছে। যার ফলে রাত্রিবেলায় যাওয়াটা মুশকিল হবে সেটা বুঝিয়েই বলেছিলাম। ওরাও সেটা বুঝে ছিল। তবুও বাচ্চাটার একটু মন খারাপ করেছিল। তাই গতকাল পড়াতে যেতেই আমাকে বলল, "ম্যাম আমি কিন্তু খুব রাগ করেছি, তুমি এলে না বলে।" তবে বুঝিয়ে বলাতে তার রাগ কমলো। তারপর আমি ব্যাগ থেকে ওনার জন্য কেনা একটা ছোট্ট গিফ্ট দিলাম। গিফ্ট পেয়ে খুশি হয় না এমন বাচ্চা খুব কমই আছে। তার উপরে বাচ্চারা চকলেট খেতে একটু বেশি ভালোবাসে। তাই আমার দেওয়া চকলেট টা পেয়ে বেশ খুশি হয়েছিল।
তারপর আমি পড়ানো শুরু করলাম। পড়ানোর তার সাথে সাথে কিছুটা গল্পও চলছিল। এমন সময় স্টুডেন্টদের মা এসে এক প্লেট তালের বড়া দিয়ে গেল। যেহেতু আমি তালের বড়া খেতে খুব একটা ভালোবাসি না, তাই অতগুলো তালের বড়া খাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই আমি হাতে কয়েকটা তুলে নিয়েছিলাম বাকিটা নিয়ে যেতে বলেছিলাম। তবে স্টুডেন্টের মা আমাকে না খাইয়ে ছাড়বে না। তাই উনি নিজেই কিছুটা কমিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, আর বাকিটা আমাকে খেতে বলেছিল। অগত্যা আমি আর আমার স্টুডেন্ট দুজন মিলে সেটা খেয়েছিলাম।
এরপর পড়ানো শেষ হলে আমি ছুটি দিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছাচ্ছিলাম। এমন সময় স্টুডেন্টের মা এসে বলল," পিংকি একটু বসো। আমি এখনই আসছি।" ভাবলাম হয়তো মাইনে দেবে। তবে কিছুক্ষণ পরে দেখি আমাকে ডাইনিং রুমে যেতে বলল। গিয়ে দেখি কেলেঙ্কারি কান্ড। ওই বৌদি আমার জন্য লুচি ,ঘুগনি, স্যালাড হরেক রকমের মিষ্টি সাজিয়ে রেখেছে।
ওনার দাবি গতকাল যেহেতু ছেলের জন্মদিনে আসতে পারিনি তাই আমাকে ওই সমস্ত কিছু খেয়ে যেতে হবে। তবে অতগুলো তালের বড়া খাওয়ার পর, আবার এত লুচি খাওয়া সম্ভব ছিল না। তাছাড়া এতগুলো লুচি আমি একবারে খেতেও পারি না। খুব বেশি হলে চারটে লুচি আমি একবারে খেতে পারি। তাই চারটে লুচিই জোর করে খেয়েছিলাম। আর তার সাথে পছন্দমত একটা মিষ্টি নিয়েছিলাম। তবে বৌদিও ছাড়বার পাত্রী নয়। বাকি যা যা আমি খেতে পারিনি সেগুলো সব আবার প্যাক করে আমার সাথে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমার অনেক বারণ করা সত্ত্বেও আমার কথা শোনেনি। অগত্যা সেইসব নিয়েই বাড়িতে আসতে হয়েছিল।
এইভাবেই স্টুডেন্টদের জন্মদিনে উপস্থিত থাকতে না পেরেও খাওয়া মিস যাইনি।হা- হা- হা......
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Thank you so much