ব্যস্ততম একটি দিন
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। তবে রবিবার এলেই আমি একেবারেই ভালো থাকি না। কারণ সপ্তাহের এই দিনটাতেই আমি সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকি। জানি ব্যস্ত থাকা ভালো। তবে মাঝে মাঝে একটু স্বস্তি পেতেও ইচ্ছে হয়। তবে তা আর হয়ে ওঠে না। আজ আমি কিভাবে সারাটা দিন কাটালাম সেই নিয়েই আপনাদের সাথে গল্প করবো।
প্রতি রবিবারেই আমাকে ঘুম থেকে একটু তাড়াতাড়ি উঠতে হয়। সকালে ৬.৩০ টা থেকে পড়ানো থাকে। তাই আজকেও সাড়ে পাঁচটায় অ্যালার্ম বাজার সাথে সাথে উঠে পড়েছি। তারপর ফ্রেশ হয়ে, ৬ টার পরপরই বেরিয়ে পড়েছিলাম আমার আজকের প্রথম স্টুডেন্টকে পড়ানোর উদ্দেশ্যে। ওদের বাড়িতে আমাদের বাড়িতে কে বেশ অনেকটাই দূরে। সাইকেল নিয়েই আমাকে যেতে হয়। যথারীতি সাড়ে ছটার মধ্যে আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম। সকালের চা টা ওদের বাড়ির থেকেই পেয়ে গিয়েছিলাম। পড়ানো শেষ করে ৮ কার পরপরই বেরিয়ে পড়েছিলাম পরের স্টুডেন্টকে পড়ানোর জন্য।
এটি আজকের তোলা ছবি নয়। আজকে সকালে পড়াতে গিয়ে কোনো ছবি তোলা হয়নি। |
---|
এরপর চলে গিয়েছিলাম ওদের বাড়ির থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে একটি বাড়িতে। এই বাড়ির বাচ্চাটিকে আমি তিন বছর ধরে পড়াচ্ছি। সেই স্টুডেন্টটির এখন ফার্স্ট সামিটিভ এক্সাম চলছে। তাই ওকে আজকে পরীক্ষা নিয়েছিলাম। আসলে এই বাচ্চাটি পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। বেশ ভালো পড়াশোনা করে। একজন গৃহ শিক্ষিকা হিসেবে, পড়াশোনা ভালোবাসে এমন স্টুডেন্ট পেলে বেশ ভালোই লাগে। তবে এর সমস্যা হলো বানান খুব ভুল করে। সেই বানানটি যে ও জানে না এমনটা নয়। মুখে বললে বেশ বলতে পারে। কিন্তু যখনই লেখে আনমনা হয়ে পড়ে আর বানান ভুল করে। তাই মাঝে মাঝে শাস্তিও পায়। তবুও আমাকে কিন্তু ও খুব ভালোবাসে। মাঝে মাঝে বকাঝকা করার পর নিজেরও খারাপ লাগে তবে একেবারে না বকলে যে বানান ভুল কমবে না।
পরপর দুটো পড়াতে পড়াতে বেশ খিদে পেয়ে গিয়েছিল। তবে বাড়িতে গিয়ে খেয়ে আসার মত সময় ছিল না। তাই ভেবেই রেখেছিলাম, এদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটু কচুরি বা ডালপুরি খেয়ে নেব। তবে আমার সেই আশা পূরণ হলো না কারণ পড়ানোর শেষের দিকে স্টুডেন্টটির মা থালা ভরে লুচি, ছোলার ডাল ও মিষ্টি সাজিয়ে নিয়ে এসেছিল। তবে এতগুলো মিষ্টি আর লুচি আমার পক্ষে খাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই দুটো লুচি আর একটা মিষ্টি আমি খেয়েছিলাম।
এরপর এরপর চলে গিয়েছিলাম তৃতীয় স্টুডেন্ট এর বাড়িতে। ওদেরও পরীক্ষা চলছে। তাই আগামীকাল যে বিষয়টির পরীক্ষা আছে সেই বিষয়টি ভালোভাবে রিভিশন করাচ্ছিলাম। সেই সাথে একটা ছোটো পরীক্ষাও নিয়ে নিয়েছিলাম। এদের স্কুলের পরীক্ষার পদ্ধতিটা আবার অন্য স্কুলে তুলনায় একটু ভিন্ন। এদের প্রত্যেক সপ্তাহেই পরীক্ষা থাকে। মানে অন্য স্কুলগুলোতে যেমন কয়েক মাস পর পর একটা রুটিন দেওয়া হয় এবং একটানা ছয় সাত দিন পর পর পরীক্ষা হয়। তবে এদের স্কুলে প্রত্যেক সপ্তাহেই একটা করে পরীক্ষা হয়। তাই সারা বছরই বাচ্চারা খুব চাপের মধ্যে থাকে। এই পরীক্ষার পদ্ধতিটা কেন জানিনা আমার একেবারেই পছন্দ হয় না।
এরপর দুই ঘন্টার জন্য আমি বাড়ি গিয়েছিলাম। বাড়িতে এসে স্নান, খাওয়া দাওয়া করার পর একটু রেস্ট নিয়েছিলাম। তারপর দুপুর আড়াই টে থেকে আবার পড়ানো ছিল। এই স্টুডেন্টদের বাড়িতে আমাদের বাড়ির কাছেই তাই যাতায়াতে একদমই সময় লাগে না। এদের বাড়িতে দুই ভাই বোন একসাথে করে। তবে একজন আজ বাড়ি ছিল না তাই দুজনের পরিবর্তে আজ একজনকেই পড়িয়েছিলাম।
তারপর চলে গিয়েছিলাম আজকের পঞ্চম পড়ানোর বাড়িতে। আসলে আজকে একটা এক্সট্রা পড়ানো ছিল। তাই পাঁচটার পরিবর্তে আজকে ছয়টা স্টুডেন্টকে পড়াতে হয়েছে। যার ফলে চাপটা একটু বেশিই পড়েছিল। যাইহোক পঞ্চম বাড়িটি ও খুব বেশি দূরে ছিল না। এই বাড়িতেও একসঙ্গে দুই বোন পড়ে। তবে দুইজনের ছবি একসাথে তোলা সম্ভব হয়নি।
সবশেষে চলে গিয়েছিলাম ঈশাদের বাড়ি। এইবছর আমি ঈশাণকে মানে ঈশার ভাইকে পড়াচ্ছি। ওকে নিয়ে না হয় অন্য একদিন, অন্য কোন পোস্টে লিখবো। যেহেতু সিলেবাস শেষ হয়ে গেছে তাই আজকে ওকেও পরীক্ষা নিয়েছিলাম।
এইভাবেই আজ সারাদিন কেটে গেল। বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত নটা বেজে গেছে। আসলে এক্সট্রা পড়ানো থাকলেই যেন খুব চাপ মনে হয়। তাই আমি এক্সট্রা খুব বেশি পড়াই না। তবে নিজে কামাই করলে সেটা পড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আর তখনই বড্ড চাপ পড়ে যাই।
যাইহোক, আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভ রাত্রি।
Your content has been successfully curated by our team via @ ngoenyi.
Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.