স্টুডেন্ট এর জন্মদিনের দুপুরের কিছু মুহূর্ত

in Incredible India19 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন। আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আমার এক স্টুডেন্ট এর জন্মদিনের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। সবাই ওকে আশীর্বাদ করবেন যেন ভালো মানুষ হতে পারে, জীবনের সব শুভ ইচ্ছা পূরণ করতে পারে।

1000264031.jpg

গতকাল ছিল তৃষার ১৪ বছরের জন্মদিন। বৃহস্পতিবার যখন পড়াতে গিয়েছিলাম, তখনই আমাকে কাকিমা নিমন্ত্রণ করেছিল শুক্রবার ওদের বাড়িতে জন্মদিন উপলক্ষ্যে যাওয়ার জন্য। ওদের বাড়িতে বহু দিন পাচ্ছি। প্রায় সাড়ে ছয় বছর। এই সুবাদে একপ্রকার ওদের আত্মীয় সম হয়ে উঠেছি। কাউকে নিমন্ত্রণ না করলেও আমাকে যে কোনো অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করবেই। আমাকে এতটা আপন করে নিয়েছে এ আমার পরম সৌভাগ্য। সেই ছোট্ট থেকে এই বাচ্চাগুলো কে দেখছি। কত তাড়াতাড়ি যেন বাচ্চাগুলো বড়ো হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে আমিও বুড়ি হচ্ছি এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যাইহোক গতকাল দুপুরে নিমন্ত্রণ রক্ষার্থে পৌঁছে গিয়েছিলাম ওদের বাড়িতে। গিয়ে দেখি তৃষা জন্মদিনের দুপুরে নতুন জামা পরে রেডি। আমি যাওয়ায় সে যে খুব খুশি হয়েছে তা তার মুখের হাসি দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।

1000264059.jpg

জন্মদিনে বিশেষ আড়ম্বর ছিল না। তৃষার কিছু বন্ধু আর ওর বোন পৃথার কিছু বন্ধুদের নিয়েই ছিল জন্মদিনের আয়োজন। প্রচন্ড গরমে সাজগোজও করতে পারেনি বেচারি, তাই মনে মনে একটু দুঃখ হচ্ছিল। যাইহোক, তারপর ওকে খেতে দেওয়া হয়। কাকিমা আর কাকু মিলে সকাল থেকে সমস্ত কিছু রান্নাবান্না করেছে। ওরা দুজন মিলে সব খাবার সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছিল। বার্থ ডে গার্ল মাংস খেতে খুব ভালোবাসে। কিন্তু ওর মাংস খেলেই অ্যালার্জি হয়, তাই বাকি সকলের জন্য মাংস রান্না করা হলেও ওকে দেওয়া হয়নি। তাতেও তার খুব দুঃখ। তবে শরীর তো অসুস্থ করা যাবে না, তাই ওর জন্য কাকিমা মাছ রান্না করেছিল।

1000264032.jpg

বাঙালিদের মধ্যে আশীর্বাদ পর্ব একটা মুখ্য বিষয়। জন্মদিন হোক বা বিয়ে, আশীর্বাদ পর্ব টা থাকবেই। বড়োদের আশীর্বাদ ছাড়া আমাদের জন্মদিন যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর জন্মদিনের প্রধান খাবার হলো পায়েস। পায়েস ছাড়া আমাদের জন্মদিন যেন হতেই পারে না। সেই পায়েসেরও ব্যবস্থা ছিল। প্রথমেই বাড়ির গুরুজন অর্থাৎ ওর বাবা ওকে আশীর্বাদ করে। তারপর পায়েস খাইয়ে জন্মদিনে সূচনা করে। এদের ফ্যামিলি টা আমার খুব ভালো লাগে। চারজনের ফ্যামিলি হলেও ওরা কিন্তু মাদার্স ডে হোক বা অ্যানিভার্সারি, বা জন্মদিন সমস্ত কিছুই নিজেদের মধ্যে ছোটো করে হলেও সেলিব্রেট করে।

1000264036.jpg

এরপর কাকিমাও আশীর্বাদ করে পায়েস খাইয়ে দেয়। কাকিমা খুবই ভালো মানুষ। একটা খুব মন আছে। আমাকে কাকিমা ও কাকু দুজনেই খুব ভালো বাসে। সেই সাথে মেয়েদের সাথে কাকিমা ও কাকু দুজনেরই খুব ভালো বন্ডিং রয়েছে। কাকিমা কে আজ পর্যন্ত কোনোদিন ওদেরকে মারতে দেখিনি। মারার প্রয়োজনই হয় না। বকলেই কাজ হয়ে যায়। এরপর পৃথা মানে ওর বোন ওকে পায়েস খাইয়ে দেয়। দুই বোনের মধ্যেও খুব ভালো বন্ডিং।

1000264038.jpg

গতকাল আমিই ছিলাম ওদের ক্যামেরাম্যান। তাই আমি ওদের বিভিন্ন রকম ছবি তুলে দিচ্ছিলাম। ওদের এই সুন্দর মুহূর্ত গুলো ক্যামেরা বন্দি করতে পেরে আমারও খুব ভালো লাগছিল। সবাই মিলে ওর সাথে ছবি তুলেছিল। আর সব ছবিগুলোর মধ্যে আমার একটি ছবি খুব পছন্দ হয়েছিল, যেখানে ওর বাবা-মা দুজন মিলে ওকে আদুরে kiss করছিল। যাইহোক, সব শেষে আমাদেরকেও খেতে দেওয়া হয়েছিল। দুপুরের পেট পুজো করে আমি বাড়ি চলে এসেছিলাম। রাতে আবার কেক কাটিং পর্ব ছিল। সেই সব মুহূর্ত গুলো আবার অন্য কোনো দিন শেয়ার করবো।*

1000264034.jpg

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
 19 days ago 

আপনার ছাত্রীর জন্মদিনে আমিও আপনার লেখার মাধ্যমে কিছুট হলেও সামিল হলাম।ওর জন্মদিনের ছবিগুলো দেখে ভালো লাগলো ।তবে মাংস খেতে পছন্দ করার পরও এলার্জির কারনে মাংস েতে পারেনি জেনে খারাপ লাগলো।
স্টুডেন্ট এর পরিবারের সাথে আপনারা বন্ডিং যে ভালো সেটা বুঝাই যাচ্ছে।
আপ্নার সস্টুডেন্ট একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠুক এই দোয়া করি ।
আপনিও ভালো থাকবেন সবসময় ।

Loading...
 19 days ago 

তোমার স্টুডেন্ট কে জানাই জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা। ও পড়াশোনা করে অনেক বড় হোক ভালো থাকুক এই কামনাই করি। আজকে স্টুডেন্টদের জন্মদিনের বিশেষ কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছ। আসলে জন্মদিন মানে বাড়িতে বিশেষ আয়োজন খাওয়া-দাওয়া। তবে আমিও যখন কারুর বাড়িতে পড়াতে যেতাম তখন তার জন্মদিনে নেমন্তন্ন করলে আমারও ভীষণ ভালো লাগতো। আসলে এই ছোট্ট ছোট্ট মুহূর্ত গুলোই আমাদের জীবনে স্মৃতি হয়ে থেকে যায়। এই ছোট্ট জন্মদিনের ক্যামেরাম্যান হয়ে সমস্ত ছবি ফ্রেমবন্দি করেছ ছবিগুলো দেখতে অপূর্ব লাগছে। জন্মদিনের সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।