লিচু আইসক্রিম
নমস্কার বন্ধুরা। এই প্রচন্ড গরমে আপনারা সকলে কেমন আছেন? আমার তো গরমকাল পছন্দের তাই গরম লাগলেও গরমকালটা আমি বেশ উপভোগ করি। এই হাঁসফাঁস করা গরমে আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে এই এক দারুন রেসিপি শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
গরমকাল মানেই বাজারে নানারকম ফলের সম্ভারের দেখা মেলে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু----নানা রকম ফলে বাজার ছেয়ে থাকে। সেই সাথে গাছে গাছে নানা রকম ফল থোকায় থোকায় ধরে থাকে। গরমের ফলের মধ্যে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু পছন্দের ফল রয়েছেই। কি ঠিক বললাম তো? আমার যেমন গরমের ফলের মধ্যে লিচু খুব পছন্দের। আম ফলের রাজা হলেও আমার কিন্তু আম খেতে খুব বেশি ভালো লাগে না। তবে আম খেতে যে একেবারেই ভালোবাসি না তা নয়, তবে আমার কাছে লিচুটাই বেশি ভালো লাগে। তাই আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে লিচু দিয়েই তৈরি একটা রেসিপি নিয়ে।
যদিও সত্যি কথা বলতে গেলে এটা আমি আগে কখনো ট্রাই করিনি। তবে বাড়িতে বেশ কিছু কিছু ছিল এবং অন্য রকম কিছু একটা ট্রাই করবো ভাবছিলাম তাই ইউটিউবে সার্চ করতেই প্রথমে চোখে পড়ল লিচু - আইসক্রিম। তাই আমার ভাইপো কে সেই প্রস্তাব দিতেই সে তো এক পায়ে রাজি। কারণ ও আইসক্রিম খেতে খুব ভালোবাসে। আর এইবার মেলা থেকে আইসক্রিম এর ডাইস কেনার পর থেকেই ও বাড়িতে আইসক্রিম বানানোর জন্য খুব বায়না করে। বাড়িতে যে ফলই আসুক না কেন সেই ফল দিয়েই তাকে একটা হলেও আইসক্রিম বানিয়ে দিতে হবে। আমরাও এ বিষয়ে খুব একটা বিরক্তি প্রকাশ করি না কারণ দোকান থেকে কিনে দেওয়া আইসক্রিমের অনেক কেমিক্যাল এবং প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকে। তাই বিভিন্ন কল দিয়েই ওকে আমরা আইসক্রিম বানিয়ে দিই। আর ও খুব আনন্দের সাথে সেই আইসক্রিম গুলো উপভোগ করে।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে লিচু আইসক্রিম বানিয়েছিলাম----
|
---|
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | লিচু | ১৫/১৬ টা |
২ | চিনি | স্বাদ অনুযায়ী |
৩ | বিট লবণ | সামান্য |
|
---|
ধাপ ১ :
প্রথমেই লিচুগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়েছিলাম। তারপর সব লিচু গুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম।
ধাপ ২ :
এরপর প্রতিটা লিচু থেকে বীজগুলোকে আলাদা করে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৩ :
এরপর ছাড়ানো লিচুগুলোকে মিক্সারের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। আমার ভাইপো খুব উৎসাহের সাথে আমাকে সাহায্য করছিল। সে নিজেই, "পিন এটা আমি করি" বলে অনেক কাজ করে দিচ্ছিল। লিচুগুলো ঢেলে দেওয়ার পর তার মধ্যে পরিমাণ মতো চিনিও দিয়েছিলাম।
ধাপ ৪ :
এরপর তার মধ্যে সামান্য জল দিয়ে দিয়েছিলাম। খুব বেশি জল দেওয়ার প্রয়োজন নেই কারণ লিচুর মধ্যে রস থাকেই। তারপর তার মধ্যে খুবই সামান্য একটু বিট লবণ দিয়ে দিয়েছিলাম।
ধাপ ৫ :
এরপর সমস্ত উপকরণ গুলোকে মিক্সারে ভালোভাবে পেস্ট বানিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর মিহি ভাবে পেস্ট হয়ে গেলে, সেই মিশ্রণটি কে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৬ :
এরপর মিশ্রণটিকে ধীরে ধীরে আইসক্রিমের ডাইসের মধ্যে ঢেলে দিয়েছিলাম। এই পর্যায়ে যার জন্য আইসক্রিমটা তৈরি করা হচ্ছিল তার তো উৎসাহের সীমা ছিল না। তখনও খুব উৎসাহের সাথে আমাকে সাহায্য করছিল।
ধাপ ৭ :
এরপর আইসক্রিমের ডাইস গুলিকে ডিপ ফ্রিজে জমে যাওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিল। তারপর পরের দিন ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম টা বের করে দুপুর বেলা উত্তপ্ত গরমে আমরা সবাই উপভোগ করেছিলাম।
সত্যি কথা বলতে গেলে মন্দ লাগেনি কিন্তু। বেশ ফ্রেশ লাগছিল। আর লিচুর গন্ধ আমার বেশ ভালোই লাগে তাই আমার খুব ভালো লেগেছে। তার সাথে আমার ভাইপোর এবং বাড়ির সকলেরই ভালো লেগেছিল। এই গরমে আপনারাও খুব স্বল্প উপকরণ দিয়ে এই আইসক্রিম টি আপনাদের বাড়িতে বানিয়ে ফেলতে পারেন। আশা করছি আপনাদেরও ভালো লাগবে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
মৌসুমী ফল লিচু আমার খুবই প্রিয় । এমন একটি প্রিয় ফল দিয়ে যদি আইসক্রিম তৈরি করা যায় । তো অনেক সুন্দর সুস্বাদু হবে মনে হয়।
লিচু আইসক্রিম তৈরি প্রতিটি প্রণালী আপনি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন এবং ছবির মাধ্যমে তা তুলে ধরেছেন ।সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ দিদি। আমার পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে এটা দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি। ভালো থাকবেন।
গরম পড়তে না পড়তে আইসক্রিম খেতে ভীষণ ইচ্ছে করে। গত বছরে আমিও বাড়িতে আম লিচু সমস্ত কিছু আইসক্রিম বানিয়েছিলাম কিন্তু এ বছরে একদিনও এখনো সময় হয়ে ওঠেনি। আইসক্রিম বানানো। বাড়িতে যে কোন জিনিস তৈরি খেতে তো অন্যরকমই লাগে। আজকে তুমি লিচুর আইসক্রিম বানিয়ে শেয়ার করেছ। প্রত্যেকটা ছবিসহ উপকরণের মাধ্যমে। শেয়ার করেছ। গত বছরে আমিও প্রথমবার লিচুর আইসক্রিম বানিয়েছিলাম। সুন্দর আইসক্রিম প্রত্যেকটা ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।